Advertisment

কম্পিউটার বাবা সহ ৫ বাবা মন্ত্রী হলেন মধ্যপ্রদেশে, শিবরাজ সিং চৌহানের পদক্ষেপকে রাজনৈতিক গিমিক আখ্যা দিল কংগ্রেস

কম্পিউটার বাবা সহ পাঁচ হিন্দু ধর্মীয় গুরুকে রাষ্ট্রমন্ত্রী করল মধ্যপ্রদেশের বিজেপি সরকার। শিবরাজ সিং চৌহানের পদক্ষেপকে গিমিক আখ্যা কংগ্রেসের। দেখে নিন পাঁচ বাবার পরিচয়।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
computer-baba

স্বামী নামদেব ত্যাগী ওরফে কম্পিউটার বাবা

কম্পিউটার বাবা মন্ত্রী হয়েছেন। মন্ত্রী হয়েছেন মোট ৫ হিন্দু ধর্মীয় বাবারা। মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী কলমের এক আঁচড়ে ধর্মগুরুদের প্রতিমন্ত্রী বানিয়েছেন। ২০১৮-র শেষে মধ্যপ্রদেশে বিধানসভা ভোট। সে অঙ্ক মাথায় রেখেই বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীর এই চাল বলে মনে করা হচ্ছে। কম্পিউটার বাবা ছাড়া আর যাঁরা মন্ত্রী হয়েছেন, তাঁরা হলেন ভাইয়ুজি মহারাজ, নর্মদানন্দজি, হরিহরানন্দজি, এবং পণ্ডিত যোগেন্দ্র মহান্ত। মন্ত্রিত্বের অভিষেকের আগে এই পঞ্চবাবাকে একটি কমিটিতে রাখা হয়েছিল, যে কমিটি বৃক্ষরোপণ, জলসংরক্ষণ ও নর্মদাতীর পরিচ্ছন্ন রাখার ব্যাপারে সচেতনতা তৈরি করবে। ওই কমিটির সদস্য হিসাবে পঞ্চবাবাকে রাষ্ট্রমন্ত্রীর পদে অভিষিক্ত করা হয়েছে।

Advertisment

পাঁচ বাবার পরিচয়
কম্পিউটার বাবা- তাঁর নাম স্বামী নামদেব ত্যাগী। তাঁর দাবি, তাঁর মস্তিষ্ক কম্পিউটারের মতই সচল, এবং স্মৃতিশক্তিও প্রখর। কম্পিউটার বাবাকে ল্যাপটপ ছাড়া দেখাই যায় না। আধুনিক সব গ্যাজেটই বাবার সঙ্গে থাকে। সেসবের মধ্যে রয়েছে ওয়াই ফাই ডঙ্গল, মোবাইল ফোন, মায় একটি হেলিকপ্টারও। ২০১৩ সালে তিনি কুম্ভমেলা কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছিলেন, হেলিকপ্টার নিয়ে মেলাপ্রাঙ্গণে গিয়ে স্নান করবেন। মন্ত্রী হওয়ার আগে এই কম্পিউটার বাবাই ঘোষণা করেছিলেন ‘নর্মদা স্ক্যাম যাত্রা’ করবেন। মন্ত্রী হওয়ার পরে অবশ্য কোনও কারণ না দেখিয়েই সে পরিকল্পনা বাতিল করেছেন তিনি।

ভাইয়ু মহারাজ- তিনি জমিদার নন্দন। তিনি একদা মডেলও ছিলেন। পূর্বাশ্রমে তাঁর নাম ছিল উদয়সিং দেশমুখ। তাঁর পোশাকআশাক অভিজাত, সাদা রঙের মার্সিডিজ এসইউভি গাড়িতে যাতায়াত করেন, ইন্দোরে একটি আশ্রমও চালান। কোনও যাত্রায় গেলে বিলাসবহুল রিসর্টে থাকেন, সঙ্গে থাকে তাঁর দলবলও। রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে তাঁর অনুগামী প্রচুর, এঁরা বাবার কাছ থেকে আধ্যাত্মিক পরামর্শ পেয়ে থাকেন।
তাঁর নিজস্ব ওয়েবসাইট অনুসারে ভাইয়ু মহারাজ অবশ্য সমাজের দরিদ্র ও পিছিয়ে পড়া মানুষদের উন্নতিকল্পে নিয়োজিত প্রাণ। হতাশাদীর্ণ এসব মানুষকে তিনি মুক্তির পথ দেখাতে চান, সমাজ সংস্কার, দারিদ্র্য দূরীকরণ, এসবই তাঁর লক্ষ্য। বহু ভক্তকে আশাহত করে ইন্দোরের এক চিকিত্সককে বিয়ে করেছেন তিনি। শোনা যায়, ২০১১ সালে লোকপাল নিয়ে আন্না হাজারের অনশনভঙ্গ করানোয় তাঁর বড়সড় ভূমিকা রয়েছে।

হরিহরানন্দজি- ২০১৬ সালে নদী সংরক্ষণ ইস্যুতে বিশাল এক যাত্রা হয়েছিল। সে যাত্রার অন্যতম সংগঠক ছিলেন এই হরিহরানন্দজি। ১৪৪ দিন ব্যাপী সে যাত্রা অমরকণ্টক থেকে শুরু হয়ে সন্ডওয়া পর্যন্ত এসে আবার অমরকণ্টক ফিরে যায়। যাত্রাপথে হরিহরানন্দজি বহু সংখ্যক কর্মশালা ও জনসভা করেছিলেন। এই সভাগুলির উদ্দেশ্য ছিল বনসৃজন, ভূমি ও জলসংরক্ষণ, পরিবেশ সচেতনতার মতো বিষয়ে মানুষকে জানানো।

পণ্ডিত যোগেন্দ্র মহান্ত- নর্মদা কেলেঙ্কারি নিয়ে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন যোগেন্দ্র মহান্ত। মে মাসের ১ থেকে ৫ তারিখ পর্যন্ত ৪৫টি জেলা জুড়ে রথযাত্রারও ডাক দিয়েছিলেন তিনি। বলেছিলেন, রথযাত্রার সময়ে বিজেপি সরকারের নর্মদা নিয়ে কোটি কোটি টাকা দুর্নীতি ফাঁস করবেন তিনি। মোহান্তর প্রতিশ্রুতি ছিল, এলইডি স্ক্রিনে তিনি দেখিয়ে দেবেন কীভাবে সরকার রাজ্যের জনতাকে বোকা বানাচ্ছে। বিরোধীদের অভিযোগ, মোহান্তর রাগকে জল করতেই তাঁকে প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা দিল বিজেপি সরকার।

নর্মদানন্দজি- নর্মদানন্দজি মধ্যপ্রদেশের পরিচিত ধর্মীয় গুরু। ইনি রামনবমী ও হনুমান জয়ন্তীর সময়ে মিছিল বের করে থাকেন। নর্মদানন্দজি হনুমান জন্মোত্সব সমিতি ও সনাতন ধর্ম মহাসভার সঙ্গে যুক্ত। গত বছর রাজ্যের বেশ কয়েকটি স্থানে শোভাযাত্রা সহ বেশ কিছু অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন এই বাবা।

Advertisment