একত্রিশ বছর আগে তৎকালীন বিরোধী নেত্রী তথা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার বিরোধী মিছিলে নির্বিচারে গুলি চালানোর ঘটনায় ৫ জন প্রাক্তন পুলিশ আধিকারিকদের ফাঁসির রায় ঘোষণা করল চট্টগ্রামের একটি বিশেষ আদালত। ১৯৮৮ সালের চট্টগ্রাম হত্যাকাণ্ড যারা জড়িত সেই সব পুলিশ আধিকারিকদের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিল বাংলাদেশের এই আদালত। বাংলাদেশের ফৌজদারি তদন্ত বিভাগ আটজন পুলিশ আধিকারিকদের বিরুদ্ধে এই হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ এনেছিল। তবে এই আসামিদের মধ্যে বিচারপ্রক্রিয়া চলাকালীন তিনজনের মৃত্যু ঘটে। সরকারপক্ষের আইনজীবী শিবু প্রকাশ বিশ্বাস জানান, বিচারপতি মহম্মদ ইসমাইল হোসেন বর্তমানে উপস্থিত চারজনকেই দোষী সাব্যস্ত করেন।
কী হয়েছিল ১৯৮৮ সালের চট্টগ্রাম হত্যাকাণ্ডে?
১৯৮৮ সালে ২৪ জানুয়ারি হাসিনার আওয়ামী লিগের তরফে আয়োজন করা হয়েছিলএকটি মিছিলের। সেই সময় সেনা প্রধান ছিলেন এরশাদ। হাসিনা তখন এরশাদের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের রাস্তায় নেমে নেমে প্রচার চালাচ্ছেন। সেই সময় একটি ট্রাকে দাঁড়িয়ে মিছিলের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন হাসিনা। শুরু হয় অতর্কিত হামলা। সরকারিপক্ষের আইনজীবীদের মতে সেদিনের হামলার মূল লক্ষ্য ছিলেন হাসিনা। কিন্তু সমর্থকদের বেষ্টনীতে আবদ্ধ হয়ে কোনওরকমে প্রাণে বেঁচে যান তিনি। পুলিশের এই গুলি চালনার ঘটনায় আহত হয়েছেন ২০০ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ২৪ জনের।
জাতপাতের ভেদাভেদ না করেই স্থানীয় শ্মশানেই শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হয় মৃত ব্যক্তিদের। একবার শেষ দেখা করতে পারেননি নিহতদের পরিবার। ১৯৯০ সালের বিদ্রোহের আগে পর্যন্ত এরশাদ প্রায় ন'বছর বাংলাদেশ শাসন করেছিলেন।
রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব
পরবর্তীতে রাজনৈতিক বিরোধ বহু দশক ধরে চলা দীর্ঘকালীন এই মামলার আইনি কার্যক্রম বিলম্বিত করে। ১৯৯২ সালে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ক্ষমতা গ্রহণের পরে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। যদিও মামলাটি বেশ কয়েক বছর ধরে আটকে রাখা হয়েছিল কারণ হাসিনা ছিলেন সেই সময়ে তাঁর রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী। ১৯৯৬ সালে খালেদার পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর ক্ষমতায় এসে হাসিনা ফের চট্টগ্রাম গণহত্যার তদন্ত শুরু করেন।
Read the full story in English