রক্তাক্ত অসম। ডিমা হাসাও জেলায় ভয়াবহ বিচ্ছিন্নতাবাদী হামলা নিহত ৫ জন। ডিমাশা ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি এই হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করেছে পুলিশ। কয়লা ও অন্যান্য সামগ্রী বোঝাই ৬টি ট্রাককে নিশানা করে জঙ্গিরা। এর মধ্যে পাঁচটি ট্রাকের চালক নিহত হয়েছেন।
ডিমা হাসাও জেলার পুলিশ সুপার জয়ন্ত সিং বলেছেন, "পাঁচটি দগ্ধ দেহ উদ্ধার হয়েছে। তারা সকলেই ট্রাকের চালক বলে জানা গিয়েছে।" গোয়েন্দা রিপোর্ট অনুসারে ডিমাশা ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি এই হামলার নেপথ্যে রয়েছে।
পুলিশ প্রশানের দাবি, কয়লা ও ছাই বোঝাই ট্রাকগুলো উমরাংসো থেকে লঙ্কার দিকে যাচ্ছিল। সেই সময়ই সন্দজেহভাজন জঙ্গিরা প্রথমে বেশ কয়েকটি ট্রাককে দাঁড় করায়। তারপর সেগুলিতে হামলা চালিয়ে আগুন
ধরিয়ে দেয়। তিনটি ট্রাক পালিয়ে যায়। ফলে ওই ট্রাকগুলোর চালক, খালাসি প্রাণে বেঁচে গিয়েছে। জঙ্গিদের খুঁজতে পাহাড়ি এলাকায় চিরুনি তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।
স্বাধীন ও সার্বভৌম ডিমাসা রাষ্ট্রের দাবিতে ২০১৯ সাল থেকে আন্দোলন চালাচ্ছে ডিমাসা ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি। বহ্মপুত্র উপত্যকায় আদীম জনজাতি বলেই পরিচিত এই ডিমাসারা। বর্তমানে এদের ঠাঁই হয়েছে ডিলমা হাসাও, কারবি, তাছাড়, নওগাঁও ও নাগাল্যান্ডের কয়েকটি অংশে।
ভারতীয় সংবিধানের ষষ্ঠ তফশিল অনুসারে ডিলমা হাসায়ের প্রশাসন পরিচালনার ভার রয়েছে উত্তর কাছাড় পার্বত্ত সায়ত্তশাসিত কাউন্সিলের। উত্তরপূর্বের যেসব রাজ্যগুলিতে নয়ের দশকজুড়ে যে বিচ্ছিন্নতাকামী হামলা চলেছিল তার মধ্যে অসম অন্যতম। তবে ২০০০ সালের পর থেকে অপেক্ষাকৃত শান্ত এইসব রাজ্যের পরিস্থিতি।
১৯৯১ সালে ডিমারাজি পৃথক রাজ্যের দাবিতে ডিলমাসা ন্যাশনাল সিকিউরিটি ফোর্স গঠিত হয়। ২০০০ সালের পর দাবিপূরণের লক্ষ্যে ডিমাসা অধ্যুষিত এলাকায় এরা সক্রিয় হয়ে ওঠে। ২০১৯ সালের এপ্রিলের কেন্দ্রের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তি সাক্ষর করে আন্দোলনকারীরা। যদিও ডিমাসা জাতির সার্বভৌম, স্বাধীন রাষ্ট্রের দাবি থেকে সরে আসেনি এই বিচ্ছিন্নতাকারী শক্তি।
চলতি বছর মে মাসে মে মাসে ডিমাসা ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মির ছয় শীর্ষ ক্যাডার অসম পুলিশ এবং অসম রাইফেলসের জঙ্গিবিরোধী অভিযানে নিহত হয়েছিল। তারই বদলা বৃহস্পতিবার রাতের হামলা বলে গোয়েন্দাদের অনুমান।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন