ডুয়ার্স ব্যুরো: চারদিকে শুধু জল আর জল। আর সেই জলের মাঝে আটকে গ্রামের পর গ্রাম। শুধু রাস্তাঘাট,মাঠ নয়, বৃষ্টির জল ঢুকেছে গ্রামের ঘরগুলিতেও। গত দুদিনের টানা বৃষ্টিতে জলবন্দি ডুয়ীর্সের মানুষ। জলের তলায় রয়েছে একাধিক চাবাগান। বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে একাধিক নদী। পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন থেকে শুরু করে নেতা মন্ত্রী সকলেই। কিন্তু এ ঘটনা ফি বছরেরই । জল হলেই আশ্বাস মেলে, কিন্তু জল নেমে গেলে নির্বাচনের আগে দেখা যায় না নেতাদের। তাই জলবন্দি দশাকেই নিজেদের ভবিতব্য ধরে নিয়েছেন সুবোধ,করিমের মতো কৃষকেরা।
মিশে যাচ্ছে নদী-রাস্তা-বাড়ি পুকুর (ফোটো- আই ই বাংলা)
ধূপগুড়ি, লাটাগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, ময়নাগুড়ি, জলপাইগুড়ির, বানারহাটসহ বিস্তীর্ণ এলাকা এখনো জলের তলায় রয়েছে। সেচদফতর সূত্রে খবর সপ্তাহের প্রথম দুদিনে ডুয়ার্সে প্রায় ৩০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী আগামী দুদিনও উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকায় ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। অন্যদিকে টানা বৃষ্টির জেরে ফুলে ফেঁপে উঠেছে উত্তরের নদীগুলি। তিস্তা, তোর্ষা, জলঢাকা সহ একাধিক নদীর জল বেড়েছে। ফলে বৃষ্টি কমলেও জল কবে নামবে সে বিষয়ে চিন্তিত প্রশাসনও। অন্যদিকে,এই জলবন্দি দশাকেই নিজেদের ভবিষ্যৎ ধরে নিয়ে চলছে উত্তরের গ্রামবাসী। ভরা বর্ষায় জলবন্দি দশায় তাঁদের একমাত্র ভরসা ত্রাণ। সরকারের থেকে ত্রাণ হিসেবে মেলা শুকনো চিঁড়ে-গুড়ই তাঁদের ও পরিবারের শিশুদেরও বাঁচার অন্যতম রসদ।
প্রবল বৃষ্টিতে ফুঁসে উঠেছে নদী, বেড়েছে ডলের তোড় (ফোটো- আই ই বাংলা)
প্রতিবছরই এ পরিস্থিতি থেকে মুক্তির পুরনো আশ্বাসগুলোই নতুন করে মেলে।
জলপাইগুড়ির জেলার ক্রান্তির বাসিন্দা পেশায় কৃষক সুবোধ রায়ের বাড়িতেও প্রতিবছর জল ঢুকে যায়। এবারও তার ব্যাতিক্রম কিছু হয়নি। জলবন্দি নিয়ে সুবোধ বাবুকে প্রশ্ন করতেই এক গাল হেসে বললেন, ‘‘কী হবে এসব নিয়ে কথা বলে! সেই তো ঘরে জল ঢুকবেই।’’
সপ্তাহের প্রথম দু দিনে বৃষ্টি হয়েছে ৩০০ মিলিমিটার (ফোটো- আই ই বাংলা)
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ জানিয়েছেন, ‘’আমরা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সমস্ত রকম ভাবে প্রস্তুত রয়েছি। পর্যাপ্ত পরিমাণ ত্রাণ ও দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনীও প্রস্তুত আছে।’'
শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি ডেভেলপমেন্ট অথরিটির চেয়ারম্যান সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বন্যা মোকাবিলায় রাজ্য সরকার প্রস্তুত। বিভিন্ন নদীর ধারের বসতি এলাকার মানুষকে সচেতন করা হয়েছে। প্রয়োজনে তাদের নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নেওয়া হবে।’’