মন্দির শহর কুম্ভকনম। সারাবছর এখানকার মন্দিরগুলোয় ভক্তদের ভিড় লেগেই থাকে। সহজে যাতায়াতের ভরসা বলতে অটো। কে সরভানাম দীর্ঘদিন ধরে এই শহরে অটো চালাচ্ছেন। বছর ৪২-এর এই অটোচালক বারবার এই মন্দির শহরে আসা ভক্তদের অনেকের কাছে বেশ পরিচিত। ২০ বছর কুম্ভকনম শহরে অটোর স্টিয়ারিং হাতে তিনি যাত্রীদের টেনেছেন। এবার মেয়র হিসেবে সেই শহরই সামলানোর দায়িত্ব চেপেছে তাঁর চওড়া কাঁধে।
Advertisment
তামিলনাড়ুর তাঞ্জাভুর জেলার কুম্ভকনমে এবারই কর্পোরেশন তৈরি হল। প্রথম মেয়র হিসেবে ইতিহাসে ঢুকে গেলেন সরভানাম। তবে, নির্বাচিত হয়েও তিনি আজও মাটির মানুষ। আমজনতার নিজের লোক। শুক্রবার তার সাক্ষীও হল কুম্ভকনম। শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে সরভানাম নিজেই অটো চালিয়ে এলেন। যা গোটা দেশে তৈরি করল নজির।
তামিলনাড়ু পুরনির্বাচনে কংগ্রেস-ডিএমকের জোট ছিল। ২১টি পুরসভার ২০টিতেই ডিএমকে মেয়র পদপ্রার্থী দিয়েছিল। একটি ছেড়েছিল কংগ্রেসের জন্য। কে হবেন, কংগ্রেসের মেয়র পদপ্রার্থী? বহু প্রবীণ নেতা ছিলেন সেই লাইনে। দলের হাইকমান্ড শেষ পর্যন্ত সরভানামকেই বেছে নেয়। দল যে তাঁর ওপর আস্থা রেখে কিছু ভুল করেনি, কুম্ভকনম জিতে তার প্রমাণও দিয়েছে এই অটোচালক-মেয়র।
নিজে প্রার্থী হয়েছিলেন ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে। ২,১০০ ভোটের মধ্যে ৯৬৪ ভোট পেয়ে হেসেছেন বিজয়ীর হাসি। এলাকায় সাধাসিধে জীবনযাপনের জন্য বেশ জনপ্রিয়। সরভানাম জয়ের পর যেভাবে দলের প্রবীণ নেতাদেরও ফোন পেয়েছেন, তা যেন বুঝিয়ে দিয়েছে দেশজুড়ে করুণ পরিস্থিতিতে ঘুরে দাঁড়াতে কংগ্রেসের আঞ্চলিক নেতা হিসেবে তাঁকেই সামনে রাখছে দল।
আর সরভানাম নিজে! তাঁর রাজনৈতিক কেরিয়ার নিয়ে কী ভাবছেন? নির্বাচনে এতবড় সাফল্য, মেয়র পদে শপথ- তারপরও তিনি যেন আজও পাড়ার অটোওয়ালা। বললেন, দল যে তাঁকে মেয়র পদপ্রার্থী করবে, সেটা ভাবতেও পারেননি। দলের জেলা প্রেসিডেন্ট তাঁকে ডেকেছিলেন। সেখানেই দলের সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। সরভানামের কথায়, 'শুনেই অবাক হয়ে গেছিলাম। এত পদাধিকারী, এত এত প্রবীণ নেতা। তার মধ্যে দল আমাকেই মেয়র পদপ্রার্থী করবে, ভাববই বা কীভাবে!'