Advertisment

বিচারপতি তাহিলরামানির বদলি, 'কম সময়ে' কাজকে হাতিয়ার করেছে কলেজিয়াম

কলেজিয়াম মূলত তিনটি বিষয়ের উপর বিবেচনা করে মাদ্রাজ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি বিজয়া তাহিলরামানিকে বদলির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যা প্রকাশ করেছে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Justice Tahilramani

বিচারপতি বিজয়া তাহিলরামানি

বদলি নিয়ে টানাপড়েনের জেরেই হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন মাদ্রাজ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি বিজয়া তাহিলরামানি। যা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। ক’দিন আগেই সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম বিচারপতি তাহিলরামানিকে মাদ্রাজ হাইকোর্ট থেকে মেঘালয় হাইকোর্টে বদলির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। সেই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য কলেজিয়ামকে অনুরোধ জানান তিনি। কলেজিয়াম সেই আর্জি খারিজ করে দেয়। এরপরই, দ্রাজ হাইকোর্টের বিচারপতিদের সঙ্গে একটি নৈশভোজে বিচারপতি তাহিলরামানি ইস্তফা দেওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়ে দেন। কী কারণে কলেজিয়ামের এই পদক্ষেপ? প্রকাশ্যে কিছু না বললেও, সূত্রের খবর, কম সময়ে কাজের বিষয়টিকে হাতিয়ার করেই কলেজিয়ামের এই সিদ্ধান্ত।

Advertisment

সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বাধীন কলেজিয়াম মেঘালয় হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি এ কে মিত্তলকে মাদ্রাজ হাইকোর্টে বদলি করেছে। ২৮ অগস্ট কলেজিয়াম মেঘালয় হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি পদে বিচারপতি তাহিলরামানির নাম সুপারিশ করে। গত ৩ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে লেখা হয়, কলেজিয়াম সব দিক খতিয়ে দেখার পরেই বিচারপতি তাহিলরামানির অনুরোধ খারিজ করে দিয়েছে। জানিয়ে দেয়, মাদ্রাজ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির পদ ছেড়ে বিচারপতি তাহিলরামানিকে মেঘালয় হাইকোর্টে যেতেই হবে। কলেজিয়ামের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে জনস্বার্থ মামলা পর্যন্ত হয়েছে।

আরও পড়ুন: মোদী-ট্রাম্পকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত হিউস্টন, থাকছে চমক

কলেজিয়াম মূলত তিনটি বিষয়ের উপর বিবেচনা করে মাদ্রাজ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি বিজয়া তাহিলরামানিকে বদলির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যা প্রকাশ করেছে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস। প্রথমত, কম সময়ে বিচারপতি তাহিলরামানির কাজের বিষয়টি উঠে আসে। সূত্র জানাচ্ছে, দুপুরের পর আর তেমন কাজ করতেন না মাদ্রাজ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি। যা অন্যসব বিচারপতিরাও অনুসরণ করছিলেন। দেশের অন্যতম ব্যস্ত আদালত মাদ্রাজ হাইকোর্ট। প্রধান বিচারপতির এহেন আচরণে আদালতের কাজে প্রভাব পড়ছিল বলে জানা যায়।

দ্বিতীয়ত, মূর্তি চুরি মামলা হঠাৎ শেষ করে দেওয়ার জন্যও বিচারপতি বিজয়া তাহিলরামানির ভূমিকা প্রশ্নের মুখে দাঁড়ায়। কেন ওই মামলা হঠাৎ করে বন্ধ করে দেওয়া হল তার কোনও সঠিক তথ্য মেলেনি। যা গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করে কলেজিয়াম।

তৃতীয়ত, মাদ্রাজ হাইকোর্টে ৫৮জন বিচারপতি রয়েছেন। নিয়ম মেনে এঁদের মধ্যে ১৫ জন অনলাইনে নিজেদের সম্মত্তির তথ্য প্রকাশ করেছেন। ব্যতিক্রম, প্রধান বিচারপতি বিজয়া তাহিলরামানি। ওই তালিকায় নাম ছিল না তাঁর। এনিয়ে অবশ্য একাধিকবার জানতে চাওয়া হলেও জবাব দিতে নারাজ ছিলেন বিচারপতি তাহিলরামানি। তাঁর সচিব জানান, 'এপ্রসঙ্গে উনি কোনও কথা সংবাদ মাধ্যমকে জানাতে আগ্রহী নন।'

আরও পড়ুন: বউবাজারের ক্ষতিগ্রস্ত দোকানদারদের ৫০ হাজার করে ক্ষতিপূরণের ঘোষণা

১৯শে সেপ্টেম্বর মাদ্রাজ হাইকোর্টে কলেজিয়ামের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে জনস্বার্থ মামলা হয়। জনস্বার্থ মামলাকারী আইজীবী আর প্রভাকরণ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, 'কলেজিয়ামের সিদ্ধান্তে অনেক ফাঁক রয়েছে। কেন প্রধান বিচারপতি বিজয়া তাহিলরামানিকে মেঘালয় হাইকোর্টে বদলি করা হল তার কোনও কারণ প্রকাশ্যে আনা হয়নি। সংবিধান অনুশারে এই সিদ্ধান্তের বিষয়টি রাষ্ট্রপতির জানানোর কথা। কলেজিয়ামের বদলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন রাষ্ট্রপতিই। এছাড়া, সংশ্লিষ্ট বিচারপতির সঙ্গেও রাষ্ট্রপতির কথা বলার নিয়ম রয়েছে।' এর কোনওটিই এক্ষেত্রে করা হয়নি বলে অভিযোগ।

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ১২ই আগস্ট মাদ্রাজ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেছিলেন বিজয়া তাহিলরামানি। ২০০১ সালে বম্বে হাইকোর্টের বিচারপতি হাসাবে কাজ শুরু করেন তিনি। তাঁর দেওয়া নির্দেশগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য, বিলকিস বানো মামলা। এছাড়া, বেশ কয়েকটি মৃত্যদণ্ডের আদেশও দিয়েছেন বিচারপতি বিজয়া তাহিলরামানি।

Read the full story  in English

national news
Advertisment