যুদ্ধের জেরে বহু ভারতীয় ডাক্তারি পড়ুয়া ছাত্রকে ফিরতে হয়েছে ডিগ্রি অর্জন না করেই। অনেকেরই বছর দুয়েকের বেশি করে পড়াশোনা বাকি। এমত অবস্থায় তারা জানেন আগামী দিন কী হতে চলেছে। জানেন না সেখানে আর ফিরে গিয়ে পড়াশোনা সম্পূর্ণ করতে পারবেন কী না। ইউক্রেন থেকে জীবন বাঁচিয়ে দেশে ফিরে এলেন প্রচুর ভারতীয় ছাত্রদের ভবিষ্যৎ এখন আবারও অন্ধকারে। তার আরও প্রমাণ মিলেছে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশনের কথায়।
এমএমসি জানিয়েছে, বিদেশী মেডিকেল কলেজের স্নাতকদের, যারা ইন্টার্নশিপ শেষ করেনি, তাদের ভারতে এটি সম্পূর্ণ করার অনুমতি দিতে পারে, কিন্তু ইউক্রেন থেকে আসা সবাই এতে উপকৃত হবে না কারণ যারা স্নাতক এমবিবিএস কোর্স শেষ করতে পারেনি তারা এই সুবিধা পাবে না। এমন ছাত্রের সংখ্যা প্রচুর। ফলে তাদের ভবিষ্যৎ যে অন্ধকারে পড়ে গিয়েছে তা স্পষ্ট।
দিন কয়েক আগেই, পশ্চিম ইউক্রেনের ড্যানিলো হ্যালিটস্কি লভিভ ন্যাশনাল মেডিকেল ইউনিভার্সিটির কর্তৃপক্ষ আন্তর্জাতিক ছাত্রদের জানিয়েছিল যে যারা দেশের বাইরে অন্য প্রতিষ্ঠানে স্থানান্তর করতে চাইছেন তাদের মূল নথির সফট কপি প্রদান করা হবে, যেমন মার্কশিট এবং গবেষণাপত্র ইত্যাদি।
যুদ্ধ বিধ্বস্ত ইউক্রেন থেকে পালিয়ে দেশে ফিরেছেন অনেকে ছাত্র ছাত্রী। এরপর কী? সংকটের মুখে পড়ুয়া-অভিভাবকরা। আগামীর চিন্তায় তাদেরে রাতের ঘুম উড়েছে। খারকিভ বিশ্ববিদ্যালয়ের এমবিবিএস দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র অরুজ রাজ ভি এন ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছেন, "কলেজ থেকে আমাদের ধৈর্য ধরতে বলেছে। এখন পর্যন্ত, যতটুকু জানি ১৩ মার্চ পর্যন্ত কলেজ বন্ধ রয়েছে। এর আগে, প্রায় এক মাস, কোভিডের কারণে অনলাইনে ক্লাস অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এখনও, আমরা জানি না ভবিষ্যত কী অপেক্ষা করে রয়েছে আমাদের জন্য'। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে মেডিকেল কলেজগুলি ছাত্রদের সাবধান করে বলেছে, "অন্য কোথাও ভর্তি হতে গিয়ে প্রতারকদের হাত থেকে সাবধান"। তাড়াহুড়ো করবেন না, আমরা প্রার্থনা করি যুদ্ধ শীঘ্রই শেষ হবে আবারও সবকিছু স্বাভাবিক হবে"।
লভিভ বিশ্ববিদ্যালয়ের এমবিবিএস চতুর্থ বর্ষের ছাত্র অভিষেক সিং বলেছেন, 'কর্তৃপক্ষ আন্তর্জাতিক ছাত্রদের বলেছে যে তারা অন্য কোথাও পড়তে চাইলে তা আমরা করতেই পারি। তার জন্য নথিগুলি যেমন আমাদের মার্কশিট এবং গবেষণা প্রকল্পগুলির সফট কপি কলেজ থেকেই আমাদের সরবরাহ করা হবে, যা স্থানান্তরের জন্য আবেদন করার সময় প্রয়োজন হবে," সব কিছুই আমাদের হাতে তুলে দেওয়া হবে।
অন্যদিকে লভিভের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী রিচা ঝা বলেন, "বিশ্ববিদ্যালয় ইমেলের মাধ্যমে নথির ফটোকপি পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। “এই সপ্তাহ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় ছুটি। সম্ভবত আগামী সপ্তাহে আমাদের জানানো হবে যে তারা ক্লাস পুনরায় শুরু করার পরিকল্পনা করছে কি না,"। অন্যদিকে অপর এক পড়ুয়া যশ রানা, জানিয়েছেন ভারতে একটি সরকারী মেডিকেল কলেজে আসন না গত বছরের ডিসেম্বরে পশ্চিম ইউক্রেনের উজহোরোদ জাতীয় মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলাম। ২০২১ সালে, ১৬ লাখেরও বেশি শিক্ষার্থী সারা দেশে মাত্র ৮৩ হাজার উপলব্ধ আসনের জন্য NEET-UG-এর মাধ্যমে আবেদন করেছে, যার অর্ধেক সরকারি কলেজে রয়েছে। সেই সঙ্গে বেসরকারি কলেজ গুলিতে পড়ার খরচ আকাশছোঁয়া, অন্যদিকে ইউক্রেনে বার্ষিক সাড়ে তিন লক্ষ টাকার মধ্যেই কোর্সের খরচ। যা আমাদের পক্ষে সুবিধা জনক'।