নরেন্দ্র মোদীকে নিয়ে তৈরি বিবিসির তথ্যচিত্রের দ্বিতীয় পর্ব গতকাল সম্প্রচারিত হয়েছে। এদিকে বাম ছাত্র ও যুব সংগঠনগুলি বিভিন্ন জায়গায় এই তথ্যচিত্র প্রদর্শনের আয়োজন করে গতকাল। যা নিয়ে জোর বিতর্ক শুরু হয়েছে। বহু জায়গায় পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যায়। জেএনইউ-তেও তথ্যচিত্রকে কেন্দ্রকরে ধুন্ধুমার কাণ্ড হয়। এসএফআই আগামী ২৭ জানুয়ারি প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে এই তথ্যচিত্র দেখানোর আয়োজন করেছে বলেই খবর। জেএনইউতে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে নিয়ে বিবিসির বিতর্কিত তথ্যচিত্র দেখানো নিয়ে ধুন্ধুমার, ছোঁড়া হয় পাথর, বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়।
বিবিসির বিতর্কিত তথ্যচিত্র প্রদর্শন ঘিরে দিল্লির জেএনইউ ক্যাম্পাসে রীতিমত তোলপাড় শুরু হয়েছে। জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের (জেএনইউ) পড়ুয়ারা মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিয়ে বিবিসির তৈরি তথ্যচিত্র প্রদর্শনের কথা ঘোষণা করে। তবে এই 'স্ক্রিনিংয়ের' আগেই ‘ছাত্র ইউনিয়ন অফিসে’ বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। একই সঙ্গে পাথর ছোড়ার ঘটনাও ঘটে। এবিভিপি ও বামপন্থী ছাত্রদের মধ্যে পাথর ছোড়ার ঘটনা ঘটেছে বলেই দাবি পুলিশের। সেই সঙ্গে ক্যাম্পাসে ইন্টারনেট পরিষেবাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘স্টুডেন্টস ইউনিয়নে’র সভাপতি ঐশী ঘোষ দাবি করেছেন যে জেএনইউ প্রশাসন বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। বিবিসির 'ইন্ডিয়া: দ্য মোদি কোয়েশ্চেন' ডকুমেন্টারি সিরিজ গুজরাট দাঙ্গার উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে। যখন নরেন্দ্র মোদী রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। সেই তথ্যচিত্র প্রদর্শন ঘিরে রীতিমত হৈ-চৈ পড়ে যায়।
আরও পড়ুন: < বিবিসির বিতর্কিত তথ্যচিত্র নিয়ে ধুন্ধুমার, মতভেদে কংগ্রেস ছাড়লেন অনিল অ্যান্টনি >
তথ্যচিত্রের স্ক্রীনিং রাত ৯ টায় শুরু হওয়ার কথা ছিল এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে এই তথ্যচিত্র দেখানোর অনুমতি না থাকার পরেও পড়ুয়ারা এটি দেখানোর সিদ্ধান্ত নেয়, তাতেই পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। ডকুমেন্টারি প্রদর্শনে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া্র কথাও জানানো হয়েছে জেএনইউয়ের তরফে। ছাত্ররা অবশ্য জোর দিয়ে বলেন, ‘স্ক্রিনিং’ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম মেনেই করা হবে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে কোন ভাবেই এই তথ্যচিত্র ব্যাহত করবে না'।
এবিষয়ে ঐশী ঘোষ বলেন, "আমরা স্ক্রিনিং করব। বিবিসির ডকুমেন্টারি নিষিদ্ধ নয়। এই ছবিতে সত্য দেখানো হয়েছে তাই ওরা তারা ভয় পাচ্ছে, প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে বলেই ওরা তথ্যচিত্র দেখানর অনুমতি দিচ্ছে না।আমাদের আবেগ কেড়ে নেবেন না। স্ক্রিনিং বন্ধ করা যাবে না। পুলিশ ও বিজেপি আমাদের থামানোর ক্ষমতা আমাদের রয়েছে।" অন্যদিকে সরকারও বিবিসি ডকুমেন্টারির নিন্দা করেছে।
বিবিসির তৈরি তথ্যচিত্র নিয়ে ইতিমধ্যেই অনেক বিতর্ক তৈরি হয়েছে। এই সিরিজটি ভারতে উপলব্ধ নয়, তবে এর লিঙ্কগুলি ইউটিউব এবং টুইটারে শেয়ার করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার ডকুমেন্টারির পর্ব সম্বলিত ইউটিউব ভিডিও এবং টুইটার লিঙ্কগুলি ইতিমধ্যেই ব্লক করেছে। এছাড়াও, বিদেশ মন্ত্রক ডকুমেন্টারিটিকে 'প্রচারের অংশ' বলে অভিহিত করেছে। বিদেশ মন্ত্রক বলেছে যে এতে বস্তুনিষ্ঠতার অভাব রয়েছে এবং এটি একটি ঔপনিবেশিক মানসিকতার প্রতিফলন।