জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন পড়ুয়া উমর খালিদকে গ্রেফতার করল দিল্লি পুলিশের বিশেষ সেল। রবিবার রাতে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। 'বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইনে' (ইউএপিএ) উমর খালিদকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। উত্তর-পূর্ব দিল্লির গোষ্ঠী সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগেই এই গ্রেফতারি।
শাহিনবাগে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বিরোধী আন্দোলন চলাকালীন উমর খালিদ উস্কানিমূলক ভাষণ দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। সেই থেকেই দিল্লি পুলিশের নজরে উমর। গত ৩১ জুলাই উমরকে এক দফা জেরা করে পুলিশ। তখন তাঁর ফোনটি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। পুলিশ সূত্রে দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানতে পেরেছে, লোধি কলোনির বিশেষ সেল দফতরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শনিবারই উমর খালিদকে সমন পাঠানো হয়েছিল। প্রায় টানা ১১ ঘণ্টা জেরার পর রবিবার তাঁকে গ্রেফতার করে দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেল।
দিল্লি হিংসার ঘটনায় গত ৬ মার্চ প্রথম উমর খালিদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়। তাতে বলা হয়, উস্কানিমূলক ভাষণ দেওয়ার পাশাপাশি, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতে থাকাকালীন রাস্তায় নেমে এসে বিক্ষোভ দেখাতে দিল্লিবাসীকে ইন্ধন জোগান উমরই। এ দেশে সংখ্যালঘুদের কোণঠাসা করা হচ্ছে, এমন বার্তা আন্তর্জাতিক মহলে পৌঁছে দিতেই সচেষ্ট ছিলেন তিনি।
যদিও দিল্লি পুলিশের আনা অভিযোগ আগেই অস্বীকার করেছেন উমর খালিদ। ইচ্ছাকৃত ভাবে তাঁকে ফাঁসানো হচ্ছে বলে দাবি তাঁর। উমর বলেছিলেন, 'দেশে এই মুহূর্তে দু’ধরনে আইন চলছে। শাসক দলের সমর্থকদের জন্য একটি, অন্যটি সাধারণ মানুষের জন্য, যাঁরা সরকারের সমালোচনা করার সহস দেখান।'
উল্লেখ্য, গত বছর ডিসেম্বরে সংসদে সংশোধিত্ব নাগরিকত্ব আইন পাশ করায় মোদী সরকার। কেন্দ্রীয় সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সেইসময় তেতে ওঠে রাজধানী দিল্লির উত্তর-পূর্ব অংশ। শাহিনবাগ-সহ একাধিক এলাকায় সিএএ বিরোধী আন্দোলন দানা বাঁধে।
গত ফেব্রুয়ারি মাসের ২৩ থেকে ২৬ তারিখের মধ্যে উত্তর পূর্ব দিল্লির গোষ্ঠী সংঘর্ষে ৫৩ জনের মৃত্যু হয় এবং ৫৮১ জন আহত হন। মৃত ও আহত ব্যক্তিদের মধ্যে ৯৭ জনের শরীরে বন্দুকের গুলির ক্ষতও ছিল। দিল্লি পুলিশের দাখিল এই মামলার সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিটে অভিযুক্তদের তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে ভীম আর্মির প্রধান চন্দ্রশেখর, উমর খালিদ-সহ বেশ কিছু নেতার নাম। এছাড়াও দিল্লি পুলিশের তরফে অতিরিক্ত চার্জশিটে নাম রয়েছে একাধিক রাজনীতিক এবং বিশিষ্টদের। তালিকায় উল্লেখযোগ্য নাম সীতারাম ইয়েচুরি, যোগেন্দ্র যাদব, অধ্যাপক জয়তী ঘোষ, অপূর্বানন্দ, তথ্যচিত্র নির্মাতা রাহুল রায়।
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন