ভারতের সার্বভৌমত্ব ক্ষুন্ন করতে মাস্টারপ্ল্যান, দোসর চিন! তোলপাড় ফেলা অভিযোগে কেঁপে উঠল দেশ  

দিল্লি পুলিশ অন লাইন নিউজ পোর্টাল 'নিউজক্লিক'-এর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইন 'বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইন' (ইউএপিএ) এর অধীনে একটি এফআইআর দায়ের করেছে এবং অভিযোগ করেছে যে সংস্থা ভারতের সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপ উস্কানিমূলক যড়যন্ত্রকে প্রভাবিত করার একটি 'বৃহত্তর অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের' অংশ হিসাবে চিন থেকে বিপুল পরিমাণ তহবিল সংগ্রহ করেছে। এফআইআর-এ দাবি করা হয়েছে যে এই বৈদেশিক অর্থ জালিয়াতি করে পাঠিয়েছিলেন চিনের কমিউনিস্ট পার্টির প্রচার বিভাগের সক্রিয় সদস্য নেভিল রায় সিংহাম। শুক্রবার দিল্লি পুলিশ এফআইআর-এর একটি কপি নিউজ পোর্টালকে দিয়েছে। একদিন আগেই দিল্লির আদালত এই বিষয়ে দিল্লি পুলিশকে একটি নির্দেশ দিয়েছিল।

নিউজক্লিক, সোমবার একটি বিবৃতিতে, দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেলের অফিস প্রাঙ্গনে এবং এর সাংবাদিকদের উপর অভিযানের পরে সরকারের পদক্ষেপের সমালোচনা করেছে। নিউজক্লিক বলেছে, "আমরা এমন একটি সরকারের এই কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা করি যারা সাংবাদিকতার স্বাধীনতাকে সম্মান করতে অস্বীকার করে এবং সমালোচনাকে রাষ্ট্রদ্রোহিতা বা 'দেশবিরোধী' প্রোপাগান্ডা হিসাবে বিবেচনা করে।"

দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেলের এফআইআর অনুসারে, 'চিন থেকে প্রচুর পরিমাণে অর্থ পাঠানো হয়েছিল এবং ইচ্ছাকৃতভাবে 'পেইড নিউজ' প্রচারের কাজে তা ব্যবহার করা হয়েছিল একটি ষড়যন্ত্রের অংশ হিসাবে।  যার উদ্দেশ্য ছিল  দেশের বিরুদ্ধে অসন্তোষ সৃষ্টি করে। ভারতের অভ্যন্তরীণ নীতি, উন্নয়ন প্রকল্পের সমালোচনা  এবং চিন সরকারের প্রকল্প এবং প্রতিরক্ষা নীতি ও কর্মসূচির প্রশংসা করা ।'

এফআইআরে দাবি করা হয়েছে যে এই বিদেশী অর্থ কর্মী গৌতম নভলাখা এবং, তিস্তা শেতলওয়াড় তার স্বামী এবং অ্যাক্টিভিস্ট জাভেদ আনন্দের সহযোগী, সাংবাদিক উর্মিলেশ, আরাত্রিকা হালদার, পরঞ্জয় গুহ ঠাকুরতা এবং অভিসার শর্মা সহ অন্যদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। এলগার পরিষদ-মাওবাদী সংযোগ মামলায় গৃহবন্দী নভলাখা। এফআইআর অনুসারে, নভলাখা ১৯৯১ সাল থেকে পুরকায়স্থের পরিচিত এবং ২০১৮ সাল থেকে পিপিকে নিউজক্লিক স্টুডিও প্রাইভেট লিমিটেডের শেয়ারহোল্ডার। এফআইআরে বলা হয়েছে, “নাভালখা পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা  আইএসআই-এর এজেন্ট গোলাম নবী ফাইয়ের সঙ্গে দেশবিরোধী জোটে জড়িত ছিল।

দিল্লি পুলিশ এফআইআর-এ বলেছে, "কোভিড -১৯ মহামারী চলাকালীন  ভারত সরকারের প্রচেষ্টাকে বদনাম করার অভিপ্রায়ে মিথ্যা প্রচার চালানো হয়েছিল। পুরকায়স্থ এবং 'নিউজক্লিক'-এর মানবসম্পদ বিভাগের প্রধান (এইচআর) অমিত চক্রবর্তীকে মঙ্গলবার দিল্লি পুলিশ গ্রেফতার করেছে। পুলিশ আধিকারিকদের মতে, মোট ৪৬ জনকে দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেল জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল। সাংবাদিক উর্মিলেশ এবং অভিসার শর্মাকে 'নিউজক্লিক' বিদেশী তহবিল পাওয়ার ঘটনায় বুধবার ফের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। মঙ্গলবার, এফআইআর-এ নাম লেখা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দিল্লির ৪৪ টি স্থানে এবং অন্যান্য রাজ্যের সাতটি স্থানে অভিযান চালানো হয়েছিল।

অনলাইন নিউজ পোর্টাল নিউজক্লিকের ক্রিয়াকলাপের বিষয়ে দিল্লি পুলিশের নজরে কেরল। দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেলের একটি দল শুক্রবার নিউজক্লিকের প্রাক্তন সাংবাদিক অনুশা পলকে পাঠানমথিট্টায় তার বাড়িতে জেরা করে। দিল্লি পুলিশ কেরলে প্রাক্তন নিউজক্লিকের সাংবাদিকের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ফোন এবং ল্যাপটপ বাজেয়াপ্ত করেছে। শুক্রবার নিউজক্লিকের প্রাক্তন কর্মী আনুশা পলের কেরলে বাড়িতে অভিযান চালায় দিল্লি পুলিশ। তার ল্যাপটপ এবং ফোনও জব্দ করা হয়েছে। দিল্লি পুলিশের তিন সদস্যের একটি দল তার বক্তব্য রেকর্ড করেছে। সাংবাদিকদের সামনে অনুশা পল জানান যে দিল্লি পুলিশ তাকে কৃষক বিক্ষোভ, এনআরসি-সিএএ বিক্ষোভ বা কোভিড ১৯ সম্পর্কে তার প্রতিবেদন সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করে।