মধ্যপ্রদেশের উজ্জয়নে ধর্ষণের ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছে গোটা দেশকে। এক ভিডিও তোলপাড় ফেলেছে দেশজুড়ে। সর্বত্র নিন্দার ঝড়। এর মাঝেই নির্যাতিতা কিশোরীর বাবা জানিয়েছেন, ২৪ সেপ্টেম্বর স্কুলে পরীক্ষা চলছিল। পরীক্ষা দিতে বাড়ি থেকে হেঁটেই স্কুলের পথে রওনা দেয় মেয়ে, প্রতিদিনের মত। বাড়ি থেকে স্কুলের দূরত্ব মাত্র এক কিলোমিটার। ঘটনার বিষয়ে তিনি কিছুই জানতেন না, মেয়েটির কাকা ভিডিও দেখে বাবাকে জানালে তিনি বিষয়টি সম্পর্কে জানতে পারেন।
মেয়েটির বাবা সাতনা জেলার বাসিন্দা। তিনি জানিয়েছেন ২৪ সেপ্টেম্বর - যেদিন মেয়ে নিখোঁজ হয়, সেদিন প্রতিদিনের মত সে তার স্কুলে হেঁটেই গিয়েছিল। অষ্টম শ্রেণীতে পড়েমেয়েটি এবং স্কুলটি বাড়ি থেকে মাত্র এক কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। সময় পেরিয়ে গেলেও মেয়ে বাড়ি ফিরে না আসায় ফিরে না বাবা আশেপাশের এলাকায় খোঁজ শুরু করেন মেয়ের। মেয়েটিকে খুঁজে না পেয়ে মেয়েটির পরিবার ২৫ সেপ্টেম্বর নিখোঁজ ডায়েরি করেন। মেয়েটির বাবা কেবল জানতে পেরেছিলেন তার মেয়েকে উজ্জয়িনে দেখা গেছে।
এদিকে ধর্ষণের ঘটনা প্রসঙ্গে পুলিশ জানিয়েছে মেয়েটি জীবন খেরিতে একটি অটোতে উঠেছিল। শহরের একটি আশ্রমের কাছে নাবালিকাকে ধর্ষণ করে ফেলে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। ১২ বছরের কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে আটক করা হয়েছে এক অটোচালক সহ চারজনকে। ধর্ষণের পর অনেকটা সময় কেটে গেলেও মেলেনি কারুর সাহায্য। অর্ধনগ্ন শরীরে, রক্তাক্ত অবস্থায় সাহায্য চাইছে ১২ বছরের কিশোরী। এই ভিডিও ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। ভিডিও ভাইরাল হতেই নিন্দার ঝড় ওঠে দেশজুড়ে। মধ্যপ্রদেশের উজ্জয়িনের এই নৃশংসতা হার মানাবে নির্ভয়া কাণ্ডকেও।
এই ঘটনায় দোষীদের গ্রেফতারের জন্য বিশেষ এক দল গঠন করে উজ্জয়নের পুলিশ। এখন পর্যন্ত ধর্ষণের ঘটনায় মোট চারজনকে আটক করা হয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছে এক অটোচালক। জানা গিয়েছে অটোচালকের বয়স ৩৮। ঘটনার বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে পুলিশ বলেছে নির্যাতিতা নাবালিকা মেয়েটি একটি অটোতে উঠেছিল, যার একটি সিসিটিভি ফুটেজ ইতিমধ্যেই উদ্ধার করা হয়েছে। তার ভিত্তিতেই অটোচালককে গ্রেফতার করা হয়েছে। অটোটিতে ফরেনসিক পরীক্ষা চালাচ্ছে পুলিশ। এই মামলায় আটক অন্য তিনজনের মধ্যে একজন অটো চালকও রয়েছেন বলেও জানিয়েছে পুলিশ। যদিও তাদের কারুর নাম পরিচয় প্রকাশ করেনি পুলিশ। একই সঙ্গে পুলিশ ৮ কিলোমিটার রাস্তার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখার কাজ শুরু করেছে। যেখানে কিশোরী সাহায্যের জন্য বারে বারে কাতর অনুরোধ করার সময় পায়ে হেঁটেছিলেন।
ঘটনার বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে পুলিশের এক শীর্ষ কর্মকর্তা সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছেন, ১২ বছর বয়সী মেয়েটিকে ধর্ষণ করা হয়েছিল এবং উজ্জয়িনের শহরের রাস্তায় রক্তাক্ত অবস্থায় ঘুরে সাহায্যের আবেদন বারে বারে জানিয়েছিল মেয়েটি। বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের একটি দল মেয়েটির শারীরিক অবস্থার দিকে নজর রাখছেন। তার অবস্থা সংকটজনক হলেও স্থিতিশীল। উজ্জয়িন শহরের একটি রাস্তায় রক্তাক্ত অবস্থায় মেয়েটির হাঁটার একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পরে ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে।