ছাত্র মৃত্যুতে কঠোর মুখ্যমন্ত্রী। মৃত্যুদণ্ডের আশ্বাস। ৬ অক্টোবর পর্যন্ত মণিপুরে বন্ধ মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা। পাশাপাশি কুকি সম্প্রদায় বন্ধের ডাক দিয়েছে।
মণিপুরে ২ ছাত্রকে খুনের অভিযোগে রবিবার ৪ জনকে গ্রেফতার করল সিবিআই। চুরাচাঁদপুর থেকে তাদের ধরা হয়েছে। অভিযুক্তদের অসমের গুয়াহাটিতে নিয়ে গেছে তদন্তকারী সংস্থা। এর আগে তথ্য এসেছিল, ছাত্র খুনে ৬ আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাদের মধ্যে দুজন নাবালক। কিন্তু, পরে মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন- ‘৪ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে’।মণিপুর সরকার ইতিমধ্যেই ছাত্র হত্যার মামলা কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরোর কাছে হস্তান্তর করেছে।
মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন রবিবার বলেছেন- দুই নিখোঁজ ছাত্রের খুনের ঘটনায় ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে গ্রেফতারি। এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। তাদের নাম পাওমিনলুন হাওকিপ, এস. মালসওয়ান হাওকিপ, লিংনিচন বাইট এবং টিনুপিং।
১অক্টোবর, মণিপুর পুলিশ এবং সিবিআই দুই মেইতি ছাত্র খুনের ঘটনায় ৪ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে। মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন. বীরেন সিং এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের নির্দেশে, এজেন্সির বিশেষ পরিচালক অজয় ভাটনাগরের নেতৃত্বে পাঁচজন আধিকারিকের নেতৃত্বে বিশেষ সিবিআই দল ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে মণিপুরে ক্যাম্প করছে।
বীরেন সিং মিডিয়াকে বলেন, "আজ (রবিবার) সিবিআই, সেনা, আসাম রাইফেলস এবং রাজ্য নিরাপত্তা বাহিনীর একটি যৌথ দল চুরাচাঁদপুর জেলা থেকে দুই তরুণ ছাত্রকে হত্যার ঘটনায় চার সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করেছে। জঘন্য অপরাধের মামলায় একটি বড় অগ্রগতি”।
মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন যে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আশ্বস্ত করেছেন যে দুই তরুণ ছাত্র খুনের ঘটনা বিশেষ গুরুত্ব সহকারে নেওয়া হবে এবং দোষীদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে।
মণিপুর সরকার ইতিমধ্যেই ছাত্র হত্যার মামলা কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরো (সিবিআই)-এর কাছে হস্তান্তর করেছে। উভয় ছাত্রই বিষ্ণুপুর জেলার বাসিন্দা এবং মণিপুরে জাতিগত হিংসা চলাকালীন ৬ জুলাই নিখোঁজ হন তারা। ২৫ সেপ্টেম্বর বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে ভাইরাল হয় তাদের মৃতদেহের ছবি।
নিহতদের পরিবারের সন্দেহ পড়ুয়াদের সশস্ত্র হামলাকারীরা হত্যা করেছে। এদিকে এই ঘটনার জেরে নতুন করে হিংসা ছড়ায় মণিপুরে। নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত শ’খানেক ছাত্র যারা মুখ্যমন্ত্রীর বাংলোর দিকে মিছিল করার চেষ্টা করেছিল তারা আহত হয়েছেন। ছাত্র আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে, রাজ্য সরকার ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাজ্যের সমস্ত স্কুল বন্ধ করে দেয় এবং অস্থায়ীভাবে মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা আবার নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
এদিকে কুকি সংস্থা জাতীয় তদন্ত সংস্থার (এনআইএ) বিরুদ্ধে কুকি সম্প্রদায়ের ২ নাবালিকা সহ ৭ জনকে গ্রেফতারির অভিযোগ করেছে। এর প্রতিবাদে রাত ১০টা থেকে চুড়াচাঁদপুর জেলায় অনির্দিষ্টকালের বনধ ঘোষণা করা হয়। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ৭ জনকে ছেড়ে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে, অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের ডাক দিয়েছে কুকি সংগঠন।