'জম্মু-কাশ্মীর থেকে বিধিনিষেধ সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করুক প্রশাসন।' দাবি তুললেন ফরাসি রাষ্ট্রদূত ইমানুয়েল লিনাইন। সম্প্রতি ২৫ জন বিদেশি রাষ্ট্রদূতকে উপত্যকায় যাওয়ার ছাড়পত্র দিয়েছিল মোদী সরকার। তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন ইমানুয়েল লিনাইন। কাশ্মীর ঘুরে দেখে ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। এরপরই শনিবার লিনাইন জানান, 'জম্মু-কাশ্মীরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে প্রশাসন গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ করছে। সেখানে বিধিনিষেধের যতটুকু রয়েছে তাও প্রত্যাহার করা হোক।'
সানডে এক্সপ্রেসকে ফরাসি রাষ্ট্রদূত ইমানুয়েল লিনাইন বলেন, 'কাশ্মীর কী হচ্ছে এবং সেখানকার সম্ভাবনা খতিয়ে দেখার জন্য নিজের চোখে সবকিছু দেখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। সেই দিক থেকে এবারের সফর আমার কাছে খুবই তাৎপর্যবাহী। এখানকার সাধারণ মানুষ ও নাগরিক সমাজের সঙ্গে কথা হয়েছে। উপত্যাকর আর্থিক উন্নয়নই স্থানীয়দের অন্যতম চাহিদা। প্রশাসন সেই লক্ষ্যেই পদক্ষেপ করেছে। পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক হয়েছে। বিধিনিষেধ অনেকটাই শিথিল করা হয়েছে। এখনও তার যতটুকু অবশিষ্ট রয়েছে তাও দ্রুত প্রত্যাহর করা দরকার। কাশ্মীরের সুরক্ষার কথা বিবেচনা করেই এই বিধিনিষেধ আরোপ হয়েছে। তবুও তা প্রত্যাহারের কথা বলবো।'
আরও পড়ুন: জন সুরক্ষা আইনেই ওমর, মুফতিকে আটক জম্মু-কাশ্মীর প্রশাসনের
দু'দিন আগেই ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিদেশ সংক্রান্ত ও সুরক্ষা নীতি দফতরের মুখপাত্র হেনরিকসনও কাশ্মীরের বিধিনিষেধ প্রত্যাহারের জন্য নয়া দিল্লির কাছে দরবার করেছিলেন। তার ঠিক পরেই একই দাবি তুললেন ফরাসি রাষ্ট্রদূত ইমানুয়েল লিনাইন।
৫ অগাস্ট জম্মু-কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা বাতিল করা হচ্ছে বলে ঘোষণা করে কেন্দ্র। রাজ্যটিকে ভেঙে দু'টি কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলে ভাগ করার কথাও ঘোষণা করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তারপরই উপত্যাকার বিভিন্ন রাজনৈতিক দল কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সরব হয়। ভূস্বর্গের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে সেখানে বিধিনিষেধ আরোপ করে প্রশাসন। বন্ধ করে দেওয়া হয় ইন্টারনেট ও মোবাইল পরিষেবা। জন সুরক্ষা আইনে বন্দি রয়েছেন জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন তিন মুখ্যমন্ত্রী। আটক বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বহু নেতা, কর্মী। পরে অবশ্য আদালতের নির্দেশে বিধিনিষেধ কিছুটা শিথিল করা হয়েছে। সোশাল মিডিয়া ব্যবহার করা না গলেও দু-জি নেট পরিষেবার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
গত অক্টোবরেই বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের দ্বিতীয় একটি দল জম্মু-কাশ্মীরে গিয়ে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেছিলেন। সেই দলের সদস্য ছিলেন এই ফরাসি রাষ্ট্রদূত ইমানুয়েল লিনাইন। চার মাস পর পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে ফের উপত্যকায় গেলেন এই রাষ্ট্রদূত। এবারের সফরে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি সেনা, ব্যবসায়ী ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কাশ্মীর পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন রাষ্ট্রদূতরা।
Read the full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন