Advertisment

হাথরাসকাণ্ড: ফরেন্সিক ল্যাবরেটরির রিপোর্ট 'মূল্যহীন-বিশ্বাসযোগ্য নয়', দাবি চিকিৎসকের

ফরেন্সিক ল্যাবরেটরি রিপোর্ট অনুযায়ী হাথরাসের দলিত তরুণীকে গণধর্ষণ করা হয়নি। উত্তরপ্রদেশ পুলিশও এই রিপোর্টের ভিত্তিতেই দাবি করছে, তরুণী 'ধর্ষিত নন'।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

ছবি- অমিল ভাটনগর

ফরেন্সিক ল্যাবরেটরি রিপোর্ট অনুযায়ী হাথরাসের দলিত তরুণীকে গণধর্ষণ করা হয়নি। উত্তরপ্রদেশ পুলিশও এই রিপোর্টের ভিত্তিতেই দাবি করছে, তরুণী 'ধর্ষিত নন'। কিন্তু, ফরেন্সিক ল্যাবরেটরির ওই রিপোর্টকে 'মূল্যহীন' বলে জানালেন আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের জওহরলাল নেহেরু মেডিক্যাল কলেজের চিফ মেডিক্যাল অফিসার ডাঃ আজিম মালিক।

Advertisment

দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে ডাঃ মালিক বলেছেন, 'ঘটনার ১১ দিন পর নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। কিন্তু সরকারি গাইডলাইন অনুসারে ঘটনার ৯৬ ঘন্টার মধ্যে নমুনা সংগ্রহ সম্ভব না হলে তার থেকে ফরেন্সিক প্রমাণ মেলে না। তাই ওই রিপোর্ট থেকে এই সিদ্ধান্তে নিশ্চিতভাবে পৌঁছানো যাবে না যে তরুণীকে ধর্ষণ করা হয়নি।'

হাথরাসের দলিত মহিলাকে ১৪ সেপ্টেম্বর চার উচ্চবর্ণের পুরুষ নির্যাতন করেছিল বলে অভিযোগ। ২২ সেপ্টেম্বর আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের জওহরলাল নেহেরু মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তাঁর চেতনা ফিরে এসেছিল। তারপর সে যৌন নির্যাতনের বিবরণ দিতে সক্ষম হয়। ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে নির্যাতিতার বয়ান রেকর্ডের পর, পুলিশ এফআইআরে ধর্ষণের প্রাসঙ্গিক ধারা যুক্ত করেছিল।

নির্যাতিতার বয়ানের পর ঘটনার ১১ দিন বাদে, ২৫ সেপ্টেম্বর নমুনা ফরেন্সিক ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়। এই রিপোর্টের ভিত্তিতেই উত্তরপ্রদেশ পুলিশ দাবি করছে যে, দলিত তরুণীর উপর কোন যৌন অত্যাচার বা ধর্ষণ হয়নি। গত বৃহস্পতিবার রাজ্য পুলিশের এডিজি (আইন-শৃঙ্খলা) প্রশান্ত কুমার দাবি করেছেন, 'এফএসএল রিপোর্ট অনুসারে ভিসেনা নমুনায় বীর্য বা শুক্রাণু নিঃসরণর কোনও প্রমাণ নেই। হামলাজনিত মানসিক ধাক্কার কারণেই তরুণীর মৃত্যু বলে ময়না তদন্তে উল্লেখ। আধিকারিকদের বিবৃতির পরও সংবাদ মাধ্যমে কিছু ভুল তথ্য প্রচারিত হচ্ছে।'

আরও পড়ুন: হাথরাসের অভিযুক্তদের সমর্থনে বিজেপি নেতার বাড়িতে ঠাকুরদের সভা!

৩ অক্টোবর জওহরলাল নেহেরু মেডিক্যাল কলেজের ফরেন্সিক মেডিক্যাল বিভাগের তরফে চিঠি দিয়ে সাদাবাদ থানার সার্কেল অফিসারকে চূড়ান্ত রিপোর্টের কথা জানানো হয়। সেখানে অ্যাসিটেন্ট প্রফেসর ডাঃ পৈয়াজ আহমেদ ও চেয়ারম্যান ডাঃ সৈয়দের সাক্ষর রয়েছে। চিঠিতে উল্লেখ, 'নমুনাতে ভেজিনাল ও অ্যানাল ইন্টারকোর্সের কোনও চিহ্ন মেলেনি। তবে, শারীরির নিগ্রহের প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে।'

ডাঃ হামজা মালিক ফরেন্সিক ল্যাবরেটরির রিপোর্টকে 'অবিশ্বাস্যযোগ্য' বলে অ্যাখ্যায়িত করেছেন। তাঁর কথায়, '১১ দিন পর এফএসএল দল কীভাবে নমুনায় ধর্ষণের প্রমাণ পাবেন? শুক্রাণু ২-৩ দিনের বেশী স্থায়ী হয় না। চুল, কাপড়, নখ, বিছানা ও ভার্জিনাল-অ্যানাল পথ থেকে নমুনা নেওয়া হয়েছে। মূত্রত্যাগ, মলত্যাগ এবং ঋতুস্রাবের কারণেও নমুনায় বীর্যের উপস্থিতি নাও দেখা যেতে পারে।'

রিপোর্টে দেখা গেছে, ২২ সেপ্টেম্বর একজন চিকিৎসক ওই মহিলার উপরে চিকিৎসা সংক্রান্ত তদন্ত করেছিলেন এবং একটি 'অস্থায়ী মতামত' দিয়েছিলেন। সেখানে উল্লেখ ছিল যে 'স্থানীয়ভাবে পরীক্ষার ভিত্তিতে তরুণীর উপর বল প্রয়োগের লক্ষণ রয়েছে। তবে, ইন্টারকোর্স সংক্রান্ত বিষয়টি এফএসএল রিপোর্টের উপলব্ধতার জন্য মুলতুবি রয়েছে।'

২২ সেপ্টেম্বরের রিপোর্টে তরুণীর সরবরাহকৃত তথ্যের ভিত্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, 'যোনিতে পুরুষাঙ্গ প্রবেশে'র বিষয়টি উল্লেখিত ছিল। এছাড়াও তরুণীকে দুপাট্টা দিয়ে শ্বাস করে হত্যা, খুনের মৌখিক হুমকি ও অভিযুক্ত সন্দীপ, রামু, লভ কুশ ও রবির নাম উল্লেখ রয়েছে।

Read in English

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

Hathras Case rape
Advertisment