Advertisment

দার্জিলিং টি থেকে জিভে জল আনা মাশরুম, জি ২০-এর নৈশভোজের এলাহি আয়োজন চমকে দেবে

অতিথি, অভ্যাগতদের জন্য কোন রমকের ত্রুটি রাখেনি ভারত।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
G20 Summit dinner, G20 summit Day 1, G20 Summit Day 1 dinner menu, G20 Summit Day 1 agenda, G20 Summit Day 1 schedule, G20 Summit schedule, G20 Summit Day 1 full schedule, PM Modi, Droupadi Murmu

অতিথি, অভ্যাগতদের জন্য কোন রমকের ত্রুটি রাখেনি ভারত।

জি ২০ বৈঠক উপলক্ষে শনিবার সন্ধ্যায় বিশেষ নৈশভোজের আয়োজন করেছেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। নৈশভোজের মেনুর শুরুতেই ছিল দই, মিলেট ও বাদামের এক বিশেষ খাবার এবং তার সঙ্গে রয়েছে চাটনি। যার নাম, পাতরাম। বিশ্বখ্যাত দার্জিলিং চা, ফিল্টার কফি এবং কাশ্মীরি মেন্যু রাইসিনা হিলসের নৈশভোজে পানীয়ে স্থান পেয়েছে।

Advertisment

অতিথি, অভ্যাগতদের জন্য কোনর মকের ত্রুটি রাখেনি ভারত। ছিল ঢালাও খাবারের আয়োজন। জি২০ এর রাতের মেন্যুতে বাজরা ও ভারতের স্ট্রিট ফুডই ছিল লাইমলাইটে।তালিকায় ছিল মিলেট রাইস, মিলেট থালি, মিলেট ইডলির মতো খাবার। মিলেটের তৈরি খাবার ছাড়াও দক্ষিণ ভারতের ইডলি, উত্তপম, দোসা থেকে শুরু করে বিহারের লিটি-চোখা, রাজস্থানের সিলেটের তৈরি ডাল বাটি চুরমা, বাংলার রসগোল্লা, জিলিপি। দেশের সব রাজ্যের ছোঁয়া ছিল মেনুতে। পাশাপাশি সিঙ্গাড়া,ভেলপুরী, বড়াপাও, ফুচকা, যোধপুরী কাবুলি পোলাও তো ছিলই।

গতকাল থেকে দু’দিনের জন্য শুরু হয়েছে জি-২০ সম্মেলন। উদ্বোধনী ভাষণে মোদী ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ’মন্ত্রে এগিয়ে চলার বার্তা দেন। করোনা পরিস্থিতিতে বিশ্বব্যপী সংকটের কথা উল্লেখ করে মোদী বলেন, ‘আমরা যদি করোনাকে হারাতে পারি, তাহলে এই সঙ্কটও আমরা কাটিয়ে উঠতে পারব’। একই সঙ্গে মোদী বলেন, ভারত গ্লোবাল সাউথের নেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
মোদী বলেন, ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা প্রয়াস এর মন্ত্র আমাদের সকলের জন্য পথপ্রদর্শক হয়ে উঠতে পারে। ভারতের G20 প্রেসিডেন্সি দেশের ভিতরে এবং বাইরে ‘সবকা সাথের’ প্রতীক হয়ে উঠেছে। প্রধানমন্ত্রী মোদির বক্তৃতার মধ্য দিয়ে শুরু হয় শীর্ষ সম্মেলন। প্রধানমন্ত্রীর সামনে বসানো নেমপ্লেটে দেশের নাম ইন্ডিয়ার বদলে লেখা ছিল ‘ভারত’। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি টুইটারে লিখেছেন, “আশা ও বিশ্বাসের নতুন নাম – ‘ভারত’।”

পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শনিবার ভারত-মধ্যপ্রাচ্য-ইউরোপ মেগা অর্থনৈতিক করিডর চালু করার কথা ঘোষণা করেছেন। তিনি বলেন, ‘আজ আমরা সবাই একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং ঐতিহাসিক অংশীদারিত্বে পৌঁছেছি। আগামী সময়ে এটি ভারত, পশ্চিম এশিয়া এবং ইউরোপের মধ্যে অর্থনৈতিক একীকরণের একটি প্রধান মাধ্যম হবে।’ এই উদ্যোগে ভারত, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, সৌদি আরব, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ফ্রান্স, ইতালি, জার্মানি এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জড়িত। এদিকে, জি২০ গোষ্ঠীর সাম্প্রতিক সমস্যাগুলো মেটানোর ব্যাপারেও একটি ঐকমত্য ঘোষণা করেছে। প্রধানমন্ত্রী মোদী সম্মেলনের সময় শনিবার এমনটাই জানিয়েছেন। তিনি নয়াদিল্লিতে জি২০ নেতাদের বলেন, ‘সমস্ত বিভাগের কঠোর পরিশ্রমের ফলে, আমরা জি২০ নেতাদের শীর্ষ সম্মেলনের ঘোষণাপত্রে ঐকমত্য পেয়েছি। আমি এই ঐকমত্যের কথা ঘোষণা করে দিচ্ছি।’

প্রধানমন্ত্রী মোদী সদস্যদের একটি ‘আন্তর্জাতিক আস্থার ঘাটতি’ সমাপ্ত করার আহ্বান জানিয়ে এই দুই দিনের শীর্ষ সম্মেলনের উদ্বোধন করেছেন। তিনি ঘোষণা করেছেন যে গোষ্ঠীটি আফ্রিকান ইউনিয়নকে আরও প্রতিনিধিত্ব দেওয়ার লক্ষ্যে স্থায়ী সদস্যপদ দিয়েছে। মোদী বলেন, ‘আজ জি২০-র সভাপতি হিসেবে ভারত সমগ্র বিশ্বের কাছে এই বিশ্বব্যাপী আস্থার ঘাটতিকে প্রথমে একটি আস্থা এবং তারপর এক আত্মবিশ্বাসে রূপান্তরিত করার আহ্বান জানিয়েছে। এখন আমাদের সবার একসঙ্গে চলার সময়।’

কোন কোন বিষয় নিয়ে আলোচনা হচ্ছে?
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, ইন্দো-প্যাসিফিক এবং দক্ষিণ চিন সাগরে চিনের উচ্চাকাঙ্ক্ষা নিয়ে গোষ্ঠীকরণের চেষ্টা যে বিভাজন তৈরি করেছে, তাকে সঙ্গে নিয়ে শনিবার জি২০ শীর্ষ সম্মেলন শুরু হয়েছে। ২০২২ সালে ইন্দোনেশিয়ায় শীর্ষ সম্মেলনের সময়, জি২০ গোষ্ঠী ইউক্রেনের যুদ্ধ নিয়ে গভীরভাবে বিভক্ত ছিল। কারণ, তখন ঘোষণায় উল্লেখ করা হয়েছিল যে বেশিরভাগ দেশ রাশিয়ার আক্রমণের জন্য নিন্দা করলেও ভিন্ন ভিন্ন মতামতও ছিল।

সমালোচনা করেছে ইউক্রেন
ইউক্রেন বলেছে যে যুদ্ধের ব্যাপারে জি২০-র যৌথ ঘোষণায়, ‘গর্ব করার মত কিছু নেই’। নয়াদিল্লিতে শনিবার জি২০ দেশগুলোর দ্বারা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের যৌথ ঘোষণার পরে, ইউক্রেনের বিদেশ দফতর বলেছে যে এতে, ‘গর্ব করার মত কিছু হয়নি।’ ইউক্রেনের বিদেশ দফতর ঘোষণায় রাশিয়ার উল্লেখ না-করার জন্য ঘোষণাপত্রের সমালোচনা করেছে। এই ব্যাপারে ইউক্রেনের বিদেশ দফতরের মুখপাত্র ওলেগ নিকোলেনকো ফেসবুকে লিখেছেন, ‘এটা স্পষ্ট যে ইউক্রেনের পক্ষের অংশগ্রহণ (জি-২০ বৈঠকে) অংশগ্রহণকারীদের পরিস্থিতি আরও ভালোভাবে বুঝতে সাহায্য করতে পারত।’

জি২০ নেতাদের দ্বারা গৃহীত ঐকমত্যের ঘোষণায় ‘ইউক্রেনে ব্যাপক, ন্যায্য এবং স্থায়ী শান্তি’র আহ্বান জানানো হয়েছে। পাশাপাশি, সদস্য দেশগুলোকে ‘অঞ্চল দখলের জন্য শক্তি প্রয়োগের হুমকি দেওয়া থেকে বিরত থাকতে’ বা কোনও রাষ্ট্রের আঞ্চলিক অখণ্ডতার বিরুদ্ধে কাজ না-করতে আহ্বান জানানো হয়েছে। ঘোষণায় আরও জোরের সঙ্গে বলা হয়েছে যে, পরমাণু অস্ত্রের ব্যবহার বা ব্যবহারের হুমকি ‘গ্রহণযোগ্য’ নয়।

G-20 Summit
Advertisment