গালওয়ানে সংঘর্ষে মৃত ভারতীয় সেনাকর্মীদের দেহে ধারালো অস্ত্রের ক্ষত ছিল, এছাড়াও তাঁদের বেশিরভাগের দেহের একাধিক হাড় ভাঙা অবস্থায় ছিল। সূত্রে মারফত এমনটাই জানা গিয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক লে-র সোনাম নারবু হাসপাতালের এক চিকিৎসকের কথায়, 'জওয়ানদের দেহগুলি দেখে মনে হচ্ছিল পূর্ণ শক্তি দিয়ে তাঁরা প্রতিপক্ষ চিনা বাহিনীর মোকাবিলা করেছে। ভারতীয় বাহিনী একাধিক চিনা সেনাকে মেরেছে বলেও মনে হয়। ধারালো অস্ত্র দিয়ে ভারতীয় সেনাদের আঘাত করা হয়েছিল। অনেকেরই দেহের বিভিন্ন অঙ্গের হাড় ভেঙে গিয়েছিল। '
Advertisment
সংঘর্ষে জখম সেনাদের লে-র হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তাঁদের কথোপকথন শুনে হাসপাতাল কর্মীদের মনে হয়েছে, ভারতীয় সৈন্যরা তাঁদের সর্ব শক্তিদিয়ে লড়াই করেছিল। কর্নেল বাবুকে মারার পর সেই তীব্রতা আরও বাড়ে।
দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে সূত্র জানিয়েছে, ১৮ জখম ভারতীয় সেনাকে লে-তে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসা হয়েছিল। এছাড়া ৪০ জনের বেশি জওয়ানকে দেশের বিভিন্ন সেনা হাসপাতালে পাঠানো হয়। তবে, ১৫ তারিখ রাতের ইন্দো-চিন সেনা সংঘর্ষে ভারতীয় কত জন জওয়ান জখম হয়েছিলেন সে বিষয়ে সেনার তরফে কিছু বলা হয়নি।
গালওয়ান উপত্যকা লে তেকে ২৩০ কিমি দূরে অবস্থিত। সংঘর্ষের পরই লে থেকে লাদাখে বিশাল বাহিনী মোতায়েন করা হয়। একই সঙ্গে সমর সম্ভারও পাঠানো হয়। গালওয়ানে নিয়ন্ত্রণরেখায় বাড়তি ভারতীয় সেনা মজুত করা হয়েছে। প্রতিপক্ষ হামলা করলে রণক্ষেত্রেই সেনাবাহিনীকে উপযুক্ত পদক্ষেপ করতে হবে। সেজন্য বাহিনীকে বলপ্রয়োগের পূর্ণ কর্তৃত্ব ও স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। ভারত-চিন সীমান্ত পরিস্থিতি পর্যালোচনায় রবিবার সেনা কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। সেখানেই এই নির্দেশ দেওয়া হয় বলে জানা গিয়েছে।
কার্গিল যুদ্ধের নায়ক ও মহাবীর চক্র সম্মানে ভূষিত অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল সোনাম ওয়াংচুকের কথায়, 'সংঘর্ষে আমাদের ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ওদের দ্বিগুণ সেনা মারা গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। বর্তমানে ওখানে পাঞ্জাব ও হরিয়ানার ছেলেদের পাঠানো হচ্ছে। এবার মুখোমুখি সংঘর্ষ হলে আমররা সুবিধাজনক জায়গায় থাকব। '
ভারত দাবি করেছে নিয়ন্ত্রণরেখায় সংঘর্ষে ৪০ জনের বেশি চিনা সেনা মৃত। যদিও এ প্রসঙ্গে কিছু জানায়নি বেজিং। অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল সোনাম ওয়াংচুক বলেন, '১৯৬২ সালেও একই ঘটনা ঘটেছিল। ভারতীয় সেনার কুমাউং কোম্পানির জওয়ানরা হাজারের বেশি সেনাকে মেরেছিল। আমাদের তরফে মারা যায় ১৩০ জন সেনাকর্মী। থকও ওরা নীরব ছিল। এবারও তাই হচ্ছে।'