পড়শি দেশ বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের দৃঢ়তা ঝালিয়ে নিতে বাংলাদেশ সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। উপলক্ষ্য মুজিব বর্ষের অনুষ্ঠানে যোগদান। কিন্তু তার আগে ‘বন্ধু রাষ্ট্র’কে বড়সড় উপহার দিল নয়াদিল্লি। গান্ধী শান্তি পুরস্কার ২০২০ হিসেবে সম্মানিত করা হচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানকে। এদিন এমনটাই জানিয়েছে সংস্কৃতি মন্ত্রক।
কূটনৈতিক সূত্রের মতে, এই ঘোষণায় নরেন্দ্র মোদীর আসন্ন সফরের সুর বেঁধে দেওয়া হল। প্রধানমন্ত্রী নিজে আজ টুইট করে জানিয়েছেন, 'এই উপমহাদেশের অন্যতম মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ২০২০ সালের গাঁধী শান্তি পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে। ২০২০ সাল বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষও বটে। তাঁর লক্ষ লক্ষ গুণগ্রাহীদের কাছে তিনি এক দুর্দমনীয় সাহস ও অক্লান্ত সংগ্রামের প্রতীক।’
মোদীর বক্তব্য, মানবাধিকার ও স্বাধীনতার কান্ডারি ছিলেন বঙ্গবন্ধু। ভারতীয়দের কাছেও তিনি নায়ক। বঙ্গবন্ধুর উত্তরাধিকার ও অনুপ্রেরণা দুই দেশের ঐতিহ্যকে ঋদ্ধ করেছে। তাঁর দেখানো পথেই দুই দেশের বন্ধুত্ব, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির ভিত্তি আরও শক্তিশালী হয়েছে।
সংস্কৃতি মন্ত্রকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশে যখন মুজিববর্ষ পালন করা হচ্ছে, তখন বঙ্গবন্ধুকে সম্মান জানাতে পেরে ভারত গর্বিত। পুরস্কারের অর্থমূল্য এক কোটি টাকা। ২০১৯ সালের গাঁধী শান্তি পুরস্কারের জন্য ওমানের প্রয়াত সুলতান কাবোস বিন সইদ আল সইদকে বেছে নেওয়া হয়েছে। কূটনৈতিক সূত্রের মতে, মোদীর আসন্ন বাংলাদেশ সফর সফল করতে এবং তার ভিত প্রস্তুত করতে সক্রিয় দু’পক্ষই। সম্প্রতি নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মহম্মদ ইমরান গুজরাত সফর করে এসেছেন। সাবরমতীর গাঁধী আশ্রমে গিয়ে চরকা কেটেছেন, গিয়েছেন নর্মদার তীরে সর্দার বল্লভভাই পটেলের মূর্তি দেখতে। গুজরাতের রাজ্যপাল ও মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকও করেন ইমরান।
এদিকে, সিএএ আর এনআরসি নিয়ে ভারতের প্রতি একটা অসন্তোষ তৈরি হয়েছিল ঢাকার। সেই ফাঁক দিয়ে ক্রমাগত হাসিনা সরকারের প্রিয় পাত্র হওয়ার চেষ্টা করে গিয়েছে বেজিং। বাংলাদেশের সঙ্গে চিনের মিত্রতা বাড়লে আখেরে নয়াদিল্লির লোকসান। এতা বুঝতে পেরেই মুজিব বর্ষ উদযাপনে বাংলাদেশ সফরের পরিকল্পনা করেছেন নরেন্দ্র মোদী। তার আগে গান্ধী শান্তি পুরস্কারের মতো মর্যাদার একটা স্মারক বঙ্গবন্ধুকে উৎসর্গ করে হাসিনা সরকারকে কাছে টানার বার্তা দিল নয়াদিল্লি। এমনটাই কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের দাবি।
অপরদিকে আবার ভারত উপমহাদেশে শান্তি ফেরাতে উঠেপড়ে লেগেছে পাকিস্তান। ঘুরিয়ে সেই বার্তা দিয়েছেন পাক প্রধানমন্ত্রী এবং সেনা প্রধান। ভারতের বিদেশমন্ত্রীর তাজিকিস্থান সফরের মধ্যেই আলাদা বৈঠক করতে পারেন পাকিস্তান বিদেশমন্ত্রী। অর্থাৎ দুই পড়শি দেশের সঙ্গে সম্পর্কের ভিত ঝালিয়ে নিয়ে ঘুরিয়ে চিনকে বেকায়দায় ফেলতে মরিয়া নয়াদিল্লি। এমনটাই দাবি সাউথ ব্লকের।