বলি অভিনেতা সলমান খান সবসময়ই সংবাদ শিরোনামে থাকেন। গত বছর পাঞ্জাবের বিখ্যাত গায়ক-রাজনীতিক সিধু মুসেওয়ালা খুন হন। গায়ককে হত্যার দায়ে অভিযুক্ত লরেন্স বিষ্ণোই বর্তমানে জেল হেফাজতে রয়েছে। আবারও সংবাদ শিরোনামে উঠে এসেছে গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণোইয়ের নাম।
গত বছর সিধু মুসেওয়ালাকে খুনের পর সলমান খানকে হুমকি চিঠিও পাঠিয়েছিলেন এই কুখ্যাত গ্যাংস্টার। কয়েক ঘন্টার মধ্যে, বিষ্ণোই গ্যাং গায়ককে হত্যার দায় স্বীকার করেছিল এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় সিধু মুসেওয়ালাকে হত্যার দায় স্বীকার করেছিলেন তিনি। গায়কের মৃত্যুর পরপরই, সুপারস্টার সলমান খানও একটি হুমকি চিঠি পান,যাতে লেখা ছিল, 'মুসেওয়ালার মতই পরিণতি হবে আপনার'ও। এরপর রীতিমত হৈ-চৈ শুরু হয়। একের পর এক হুমকি, হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে সলমান খানকে । আর তার নেপথ্যে রয়েছে গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণোই। 'ক্ষমা করা হবে না বলিউডের সুলতানকে', এমনই বার্তাই নাকি দেওয়া হয়েছে বিষ্ণোইয়ের গ্যাংয়ের পক্ষ থেকে।
এবিপি নিউজ সম্প্রতি গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণোইয়ের এক সাক্ষাৎকার প্রকাশ করে, সেখানে দাবি করা হয়েছে জেলে বসেই সাক্ষাত্কার দিয়েছেন এই 'খলনায়ক'। যেখানে বিষ্ণোই বলেছেন, 'সলমান খানকে নিয়ে আমাদের সমাজে চরম ক্ষোভ রয়েছে। বলিউডের সুলতান আমার সম্প্রদায়কে অপমান করেছেন। তার বিরুদ্ধে মামলা করা হলেও তিনি ক্ষমা চাননি। যদি তিনি ক্ষমা না চান, তাহলে চরম পরিণতি ভোগ করতেও তাঁকে তৈরি থাকতে হবে"। কুখ্যাত এই গ্যাংস্টারের সাফ জবাব," ছোটবেলা থেকেই ওর প্রতি আমার রাগ। অচিরেই সলমানের ইগো ভেঙ্গে যাবে। ওঁর উচিত আমাদের দেবতার মন্দিরে এসে ক্ষমা চাওয়া। আমাদের সমাজ ক্ষমা করলে আমি কিছু বলব র"।
সালমান খানের বিরুদ্ধে একটি কৃষ্ণসার হরিণ হত্যার অভিযোগ ছিল, যে মামলায় আদালত এর আগে সালমান খানকেও দোষী সাব্যস্ত করে। লরেন্স বিষ্ণোইর মতে, তার সমাজে কালো হরিণের পূজা করা হয়, সে কারণেই তিনি সালমান খানকে হত্যা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তার গ্যাং।
বিষ্ণোই আরও বলেন, “আমরা সম্প্রতি সালমান খানকে চিঠি পাঠাইনি। মুম্বই পুলিশ আমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। আমি কোন চিঠি পাঠাইনি। জবাব দিতে হলে কঠিন জবাব দেব'। গ্যাংস্টারের দাবি, 'ওঁর হরিণ হত্যার কারণে আমরা ক্ষুব্ধ সলমানের ওপর। বিকানেরের কাছে একটা মন্দির আছে, সেই মন্দিরে গিয়ে ক্ষমা চাইতে হবে তাঁকে। তবেই তা বিবেচনা করা হবে। নচেৎ আমরা ওঁর ইগো ভেঙ্গে দেব। আমরা আপনাকে আমাদের সমাজের কাছে ক্ষমা চাওয়ার জন্য অনুরোধ করছি'।
এদিকে ঘটনার জেরে বেজায় অস্বস্তিতে পাঞ্জাব পুলিশ-প্রশাসন। নিহত গায়কের মৃত্যুবার্ষিকীর আগের দিন এমনই এক সাক্ষাৎকার তোলপাড় ফেলে দিয়েছে। হলুদ টি-শার্টে সাক্ষাৎকারে উপস্থিত হওয়ার সময় বিষ্ণোইয়ের অবস্থান নিয়ে রয়েছে একাধিক প্রশ্ন। সাক্ষাৎকারটি সম্প্রচারিত হওয়ার পরপরই, পাঞ্জাব সরকার একটি প্রেস রিলিজ জারি করে, তাতে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে ভিডিওটি বাথিন্দা জেল বা পাঞ্জাবের অন্য কোন জেলের নয়।
পাঞ্জাব অ্যান্টি-গ্যাংস্টার টাস্ক ফোর্স (এজিটিএফ) সহকারী ইন্সপেক্টর জেনারেল সন্দীপ গোয়েল বলেছেন,'সম্প্রচারিত এই ভিডিওটি বাথিন্দা জেল বা পাঞ্জাবের কোন জেল বা পাঞ্জাব পুলিশের হেফাজতে থাকাকালীন সময়ের ভিডিও নয়। বাথিন্দা জেলে যেখানে তাকে রাখা হয়েছে, সেখানে হাই সিকিউরিটি সঙ্গে সিসিটিভি ক্যামেরাও রয়েছে'।