Advertisment

গৌরী লঙ্কেশসহ চার বুদ্ধিজীবীর হত্যা: গোলোকধাঁধার মধ্যে কী রয়েছে?

চারটি হত্যাকাণ্ডকে একটি গভীর ব্যাপক ষড়যন্ত্রের অংশ বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা। সাম্প্রতিক বেশ কয়েকটি গ্রেফতারির পর বেরিয়ে আসছে নতুন তথ্য। শুরু হয়েছে জট ছাড়ানো...

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

চারটি হত্যাকাণ্ড, একটি সন্ত্রাসের ছক, দুই রাজ্যের পুলিশ বাহিনী, বহু ক্র্যাক টিম, অগুন্তি সন্দেহভাজন এবং একটি ডায়েরি। যে ডায়েরি সমস্ত সন্দেহভাজনদের একসঙ্গে মিলিয়ে দিচ্ছে।

Advertisment

ডায়েরিটা মিলেছিল পুনের বাসিন্দা অমোল কালের কাছ থেকে। অমোল কালে, হিন্দু জনজাগৃতি সমিতির প্রাক্তন আহ্বায়ক। ২০১৭-র সেপ্টেম্বরে সাংবাদিক গৌরী লঙ্কেশ হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত সে। সেই ডায়েরিতে সাংকেতিক ভাষায় লেখা বিভিন্ন এন্ট্রি ও সংখ্যা থেকে গোয়েন্দারা ২০১৩ সালে নরেন্দ্র দাভোলকর হত্যারহস্য প্রায় সমাধান করে ফেলেছেন। এবং এই তদন্ত করতে গিয়ে গোয়েন্দার একটি সন্ত্রাসবাদী মডিউলের হদিশ পেয়েছেন, যার সদস্যরা বিভিন্ন উগ্র হিন্দু সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত, যাদের বিরুদ্ধে মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন জায়গায় বোমা বিস্ফোরণের ছক কষার অভিযোগ রয়েছে।

১০ অগাস্ট মহারাষ্ট্রের অ্যান্টি টেররিজম স্কোয়াড (এটিএস) এই সন্ত্রাসবাদী মডিউলের তিনজন সদস্যকে গ্রেফতারির কথা ঘোষণা করে। এরা হল, (১) বৈভব রাউত (৪০), হিন্দু গোবংশ রক্ষা সমিতির সদস্য, এবং যে  সনাতন সংস্থার সমর্থক বলে অভিযোগ, (২) সুধন্য গোনধালেকর (৩৯), বাড়ি সাতারায়, শ্রী শিবপ্রতিষ্ঠান হিন্দুস্থান নামক সংগঠনের সদস্য, এবং (৩) শরদ কালাসকর (২৫), হিন্দু জনজাগৃতি সমিতির কর্মী। এটিএস এ ছাড়াও শিবসেনা কর্পোরেটর শ্রীকান্ত পাঙ্গারেকর এবং শ্রী শিবপ্রতিষ্ঠান হিন্দুস্থানের আরেক কর্মী অবিনাশ পাওয়ারকেও গ্রেফতার করেছে।

জানা গেছে, জেরার সময়ে কালাসকর দাভোলকরের উপর গুলি চালানোর কথা স্বীকারও করেছে। কালাসকর জানিয়েছে, গুলি চালানোয় তার সঙ্গী ছিল শচীন প্রকাশরাও আনদুরে। তার স্বীকারোক্তির উপর ভিত্তি করে সিবিআই আনদুরেকে গ্রেফতার করেছে। শচীন আনদুরে হিন্দু জনজাগৃতি সমিতির সদস্য।

‘‘জুন মাসথেকে  গৌরী লঙ্কেশ হত্যাকাণ্ডে নিযুক্ত কর্নাটক পুলিশের বিশেষ তদন্ত দল অমোল কালের ডায়েরিতে পাওয়া কিছু নম্বর মহারাষ্ট্র পুলিশকে দেয়। সেই নম্বরগুলির উপর আড়ি পাততে শুরু করে মহারাষ্ট্র এটিএস। এই নম্বরগুলির মধ্যেকার কল ইন্টারসেপ্ট করে গোয়েন্দারা বিস্ফোরণের ছকের কথা জানতে পারেন। ৭ অগাস্ট এটিএসের অফিসাররা সন্দেহভাজনদের উপর নজর রাথা শুরু করেন। সেই মোতাবেক নালা সোয়াপাড়া অঞ্চলে হানা দিয়ে বৈভব রাউত ও কালাসকরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়,’’ জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র দফতরের এক পদস্থ আধিকারিক।

আরও পড়ুন, গৌরী লঙ্কেশ হত্যাকাণ্ড: একই ব্যক্তি বন্দুক চালাতে শিখিয়েছিল নরেন্দ্র দাভোলকরের খুনিদেরও

বিস্তৃত জাল

গত এক বছর ধরে গৌরী লঙ্কেশ হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করতে গিয়ে কর্নাটক পুলিশের বিশেষ তদন্তদল জানতে পেরেছে, গৌরী, নরেন্দ্র দাভোলকর, গোবিন্দ পানসারে এবং এম এম কালবুর্গীকে একই আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে খুন করা হয়েছে। নরেন্দ্র দাভোলকর খুন হন পুনেতে, ২০১৩-র ২০ অগাস্ট। বামপন্থী চিন্তাবিদ গোবিন্দ পানসারে খুন হন মহারাষ্ট্রের কোলাপুরে ২০১৫-র ১৬ ফেব্রুয়ারি। কন্নড় স্কলার এম এম কালবুর্গী  খুন হন ধারওয়াড়ে, ২০১৫ সালের ৩০ অগাস্ট।

publive-image গৌরী লঙ্কেশ হত্যাকাণ্ড এরটি বড় যড়যন্ত্রেরই অংশ বলে প্রায় নিশ্চিত তদন্তকারীরা

গৌরী লঙ্কেশ হত্যাকাণ্ডের তদন্তে নেমে পুলিশ এমন সব ব্যক্তিদের কাছে পৌঁছয়, যারা শ্রী শিবপ্রতিষ্ঠান হিন্দুস্থান বা এই ধরনের কোনও ছোটখাটো গোষ্ঠীর সঙ্গে ওপর ওপর যুক্ত, কিন্তু আসলে সনাতন সংস্থা এবং তার অধীন সংগঠন হিন্দু জনজাগৃতি সংস্থার গোপন ও প্রকাশ্য কাজকর্মের সঙ্গে গভীর ভাবে জড়িত।

সনাতন সংস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৯ সালে। জয়ন্ত অটওয়ালে নামের এক হিপনোথেরাপিস্ট হিন্দু ধর্মের প্রচারের জন্য এই সংগঠন বানিয়েছিলেন। এই ট্রাস্টের উদ্দেশ্য হল, ‘আগ্রহীদের মধ্যে আধ্যাত্মিক চেতনার উন্মেষ ঘটানো..., জনগণের মধ্যে ধর্মীয় ব্যবহার বদ্ধমূল করা, এবং সাধুদের আধ্যাত্মিক উন্নতির জন্য ব্যক্তিগত স্তরে পথপ্রদর্শন করা’। সনাসত সংস্থার শাখা হিন্দু জনজাগৃতি সমিতি স্থাপিত হয় ২০০২ সালে। এ সংগঠনের উদ্দেশ্য ভারতে ‘হিন্দু রাষ্ট্র’ স্থাপন। এ সংগঠনেরও প্রধান সেই জয়ন্ত অটওয়ালে।তবে কর্নাটকের বিশেষ তদন্তদল অপারেশনাল কারণে গৌরী লঙ্কেশ ও অন্যান্য হত্যাকাণ্ডে সরকারি ভাবে সনাতন সংস্থা বা হিন্দু জনজাগৃতি সমিতির নাম করেনি। মহারাষ্ট্র থেকে যে ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তারা সকলেই ভিন্ন ভিন্ন সংস্থার সঙ্গে যুক্ত হলেও, তাদের সোশাল মিডিয়া প্রোফাইল থেকে দেখা যাচ্ছে যে তারা সনাতন সংস্থা ও হিন্দু জনজাগৃতি সমিতির বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছে। যেমন, ধৃত বৈভব রাউত গোয়ায় সনাতন সংস্থার বার্ষিক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছে এবং সনাতন সংস্থার নালা সোপারা অঞ্চলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সমস্ত রকম সহায়তা করেছে তার স্থানীয় গো রক্ষক সংগঠন।

সুধন্য গোনধালেকর, গৌরী লঙ্কেশ হত্যাকাণ্ডে যার ভূমিকা খতিয়ে দেখছে কর্নাটক এটিএস, হিন্দু জনজাগৃতি সমিতির ওয়েবসাইটে তার ছবি রয়েছে। সাংবাদিক বৈঠক সহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে সে যে যুক্ত তাও লিপিবদ্ধ রয়েছে সাইটে। ওই ওয়েবসাইটেরই রিপোর্ট ও ফোটগ্রাফ মোতাবেক, ২০০৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে গোন্ধালেকর একটি সাংবাদিক বৈঠক আয়োজন করেছিল, যাতে দাভোলকেরর বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়েছিল।

আরও পড়ুন, গৌরী লঙ্কেশ হত্যাতদন্তে চাঞ্চল্যকর তথ্য: বুদ্ধিজীবীদের খুন করতে ২২ জনকে অস্ত্র প্রশিক্ষণ

‘‘পাঙ্গারেকর হিন্দু জনজাগৃতি সমিতির সঙ্গে যুক্ত। কালাসকর এবং আনদুরের ফেসবুক প্রোফাইল থেকে দেখা যাচ্ছে এরা হিনদু জনজাগৃতি সমিতির সঙ্গে যুক্ত ছিল এবং দুজনেই তাওড়েকে চিনত। এই সমস্ত টুকরোগুলো জড়ো করলে শুধু হিন্দু জনজাগৃতি সমিতি নয়, তির ধাবমান হচ্ছে সনাতন সংস্থার দিকেও।’’

সনাতন সংস্থা এবং হিন্দু জনজাগৃতি সমিতি তাদের ওয়েবসাইট থেকে কর্নাটক  মহারাষ্ট্র থেকে সম্প্রতি যাদের  গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চিহ্ন মুছে ফেলার চেষ্টাও করেছে।

গৌরী লঙ্কেশ হত্যাকাণ্ডে যে ১২ জনকে এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয়েছে, তাদের মধ্যে সনাতন সংস্থার সঙ্গে উল্লেখযোগ্য যোগাযোগ রয়েছে অমিত ডেগওয়েকারের। ৩৮ বছরের ডেগওয়েকার সনাতন সংস্থার মুখপত্র সনাতন প্রভাতের প্রুফরিডার ছিল। সংস্থার মুখপাত্র অভয় ভর্তক অবশ্য় ডেগওয়েকারকে পত্রিকার প্রোমোটার বলে চালাতে চেয়েছেন।

ডেগওয়েকারকে কর্নাটকের বিশেষ তদন্ত দল গ্রেফতার করে এ বছরের ২০ মে। তার সঙ্গেই গ্রেফতার করা হয় পুনে হিন্দু জনজাগৃতি সমিতির পুনের প্রাক্তন আহ্বায়ক অমোল কালে এবং হিন্দু জনজাগৃতি সমিতির সমর্থক মনোহর এডাভেকে। বিশেষ তদন্ত দল তাদের অনুসন্ধানে জানতে পেরেছিল অমোল কালে গৌরী লঙ্কেশ হত্যাকাণ্ডে মূল ষড়যন্ত্রী।

তদন্তে জানা গেছে, ডেগওয়েকার অমোল কালে পরিচালিত একটি গোষ্ঠীর অন্যতম সদস্য ছিল, যে গোষ্ঠীটি ২০১২ সাল থেকে হত্যা ও অন্তর্ঘাতমূলক কাজ চালিয়ে গেছে বলে অভিযোগ। এ কাজে ব্যবহার করা হত সনাতন সংস্থা ও হিন্দু জনজাগৃতি সমিতি নিযুক্ত যুবকদের। গৌরী লঙ্কেশ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যে সনাতন সংস্থার কোনওরকম যোগাযোগের কথা অস্বীকার করে সংগঠনের মুখপাত্র চেতন রাজহংস জানিয়েছেন, ‘‘ডেগওয়েকার সনাতন প্রভাতের প্রোমোটার। সে কাজের জন্য উনি আশ্রমে আসতেন। সংস্থা হিন্দুদের আধ্যাত্মিক উন্নতির কাজে নিয়োজিত। আমরা খুনি নই।’’

কর্নাটকের বিশেষ তদন্তদল চারটি খুনের সঙ্গেই জড়িত বলে চিহ্নিত করেছে, পেশায় ইঞ্জিনিয়ার সেই অমোল কালে গোপন হিন্দু সংগঠনের মাথা বলে জানা গেছে। হিন্দু জনজাগৃতি সমিতির ওয়েবসাইট অনুযায়ী অমোল কালে ২০০৯-১০ পর্যন্ত পুমে অঞ্চলে সংগঠনের আহ্বায়ক হিসেবে কাজ করেছে। মে মাসে অমোল কালের গ্রেফতারির পর, সমিতির মুখপাত্র রমেশ শিণ্ডে জানান, গত ১০ বছর ধরে তার সঙ্গে সমিতির কোনও যোগাযোগ নেই। তিনি আরও জানান, ২০০৮ সালে ‘ব্যক্তিগত কারণ’ দেখিয়ে সে সমিতি ছেড়ে দেয়। তবে কর্নাটকের বিশেষ তদন্তদল জানতে পেরেছে, অমোল কালের পরিবার পুনেতে সনাতন সংস্থা ও হিন্দু জনজাগৃতি সমিতির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত। তার সন্তানকে সংস্থার পক্ষ থেকে ‘জন্মাবধি উচ্চ আধ্যাতিকক্ষমতা সম্পন্ন’ বলে বর্ণনা করা হয়েছে। ২০১৭ সালে গোনধালেকরের সন্তানদেরও ‘উচ্চ আধ্যাত্মিক ক্ষমতাসম্পন্ন’ বলে বর্ণনা করা হয় সংস্থার পক্ষ থেকে। সনাতন সংস্থা ও হিন্দু জনজাগৃতি সমিতির মুখপাত্ররা যদিও গোনধালেকরের সঙ্গে উক্ত সংগঠনগুলির কোনও সম্পর্ক নেই বলে জানিয়েছেন।

এখনও বাকি

এখন যা পরিস্থিতি, তাতে চারটি হত্যাকাণ্ড অনেকটাই ঝুলছে একটি ফরেন্সিক পরীক্ষার উপরে। ঔরঙ্গাবাদে, আনদুরের বন্ধুর বাড়ি থেকে যে আগ্নেয়াস্ত্র মিলেছে, ফরেনসিক ল্যাবরেটরি যদি জানায়, সেই অস্ত্রই ব্যবহার করা হয়েছে দাভোলকর হত্যায়, তাহলে সিবিআই এ মামলায় বড়সড় সাফল্য পাবে।

সম্প্রতি বিভিন্ন জায়গায় হানা দিয়ে মহারাষ্ট্র এটিএস বেশ কিছু অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করেছে। এর মধ্যে রয়েছে ২০টি দেশি বোমা ও ১৬ টি দেশি পিস্তল। সন্দেহ করা হচ্চে, ২০১৩ সাল থেকে বিভিন্ন খুনে এই বন্দুকগুলিই ব্যবহার করা হয়েছে। কর্নাটকের বিশেষ তদন্ত দলের একটি সূত্র জানিয়েছে, গৌরী লঙ্কেশ হত্যার পর ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র সে সংগ্রহ করে লুকিয়ে রেখেছিল বলে জেরায় জানিয়েছে গোনধালেকর। সিবিআই আধিকারিকরা আশাবাদী, যে দাভোলকর হত্যার পাঁচ বছর পর অবশেষে তাঁরা খুনে ব্যবহৃত অস্ত্রের হদিশ পেয়েছেন। সিবিআই-এর এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ‘‘বেশ কিছু অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করা হলেও, আমাদের ধারণা এই হত্যাকাণ্ডগুলোতে একই অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে, তার কারণ এরা খুবই সংস্কারগ্রস্ত।’’ তদন্তকারীরা যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী হলেও বেশ কিছু প্রশ্ন এখনও থেকে যাচ্ছে। যেমন, পুনে পুলিশ দাভোলকর হত্যা মামলায় মহারাষ্ট্রের দুই অস্ত্রপাচারকারী মণীশ নাগোরি এবং বিলাস খাণ্ডেলওয়ালকে গ্রেফতার করলেও উপযুক্ত প্রমাণের অভাবে তাদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করতে পারেনি। এছাড়াও, সিবিআই ও বিশেষ তদন্তদলের সন্দেহ, দাভোলকর হত্যার ঘটনায় শুটার ছিল সনাতন সংস্থার সদস্য সরং অকোলকার এবং বিনয় পাওয়ার। প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্য থেকে তদন্তকারী সংস্থার এ ধারণা জন্মেছিল, কিন্তু এখন তারা বলছে, গুলি চালিয়েছিল আনদুরে ও কালাসকর।

আরও পড়ুন, হিট লিস্টের দু নম্বরে গৌরী লঙ্কেশ, এক নম্বরে কে?

পুলিশের দাবি, চারটি হত্যাকাণ্ডের নেপথ্য ষড়যন্ত্রের প্রায় সমস্ত টুকরোগুলোই তারা জড়ো করতে পেরেছে। এখন যেচা দেখার তা হল, এই জটিল গোলোকধাঁধা ও অজস্র সন্দেহভাজন চরিত্রদের মধ্যে থেকে শেষ পর্যন্ত তারা একটা আঁটোসাঁটো কেস তৈরি করতে পারে কি না।

ধৃত ৬ জন

The six arrested; (clockwise from top left) Sudhanva Gondhalekar, Vaibhav Raut, Sachin Andure, Sharad Kalaskar, Shrikant Pangarkar and Avinash Pawar. ধৃত ৬ জন, (ওপরের বাঁ দিক থেকে) সুধন্য গোনধালেকর, বৈভব রাউত, শচীন আনদুরে, শরদ কালাসকর, শ্রীকান্ত পাঙ্গারকর এবং অবিনাশ পাওয়ার

অবিনাশ পাওয়ার- শ্রী শিবপ্রতিষ্ঠান হিন্দুস্থানের সদস্য, গোনধালেকরের সঙ্গী।

সুধন্য গোনধালেকর- শ্রী শিবপ্রতিষ্ঠান হিন্দুস্থানের সদস্য বলে অভিযোগ, অমোল কালের সহযোগী বলে সন্দেহ। হিন্দু জনজাগৃতি সমিতির অনুষ্ঠানে অংশ নিত এবং সনাতন সংস্থার মুখপত্র সনাতন প্রভাতে তার নাম উল্লেখ করা হয়েছে। গৌরী লঙ্কেশ হত্যাকাণ্ডে জড়িত বলে কর্নাটকের বিশেষ তদন্তদলের সন্দেহ।

বৈভব রাউত- হিন্দু গোবংস রক্ষা সমিতির কোঅর্ডিনেটর, নালা সোপারা এাকায় হিন্দু জনজাগৃতি সমিতির কাজকর্মে তার সংগঠন সাহায্য করে থাকে বলে জানা গেছে।

শচীন আনদুরে- হিন্দু জনজাগৃতি সমিতির সমর্থক এবং দাভোলকর হত্যাকাণ্ডের গুলি চালানোর অভিযোগ রয়েছে তার নামে। অমোল কালে এবং তাওড়ের নির্দেশে খুন করেছিল বলেও তার বিরুদ্ধে অভিযোগ। গোবিন্দ পানসারে হত্যাকাণ্ডে তার ভূমিকা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

শরদ কালাসকর- হিন্দু জনজাগৃতি সমিতির সমর্থক এবং দাভোলকর হত্যাকাণ্ডে গুলি চালানোর অভিযোগ রয়েছে এর নামেও। পানসারে হত্যাকাণ্ডে তার ভূমিকা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

শ্রীকান্ত পাঙ্গারকর- হিন্দু জনজাগৃতি সমিতির সদস্য এবং সন্ত্রাসবাদী মডিউলের অর্থ এবং অন্য়ান্য সাহায্যদাতা বলে অভিযোগ। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে প্রশিক্ষণ নেওয়ার এবং মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন টার্গেটদের উপর প্রাথমিক পরিদর্শনের কাজ পরিচালনা করার।

আরও পড়ুন, Gauri Lankesh: প্রসঙ্গ গৌরী লঙ্কেশ, একটি খোলা চিঠি

অন্য ধৃতরা

দুর্গেশ সাওয়ান্ত- ‘দাভোলকরের ওপর ধ্যান দাও’- তাওড়েকে এই ইমেল পাঠিয়েছিল সনাতন সংস্থার এই প্রাক্তন মুখপাত্র। চার্জশিটে বলা হয়েছে, দাভোলকর হত্যা ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছিল এই মেল থেকেই।

সারঙ্গ আকোলকর এবং বিনয় পাওয়ার- সনাতন সংস্থার সাধু, ২০০৯ সালে গোয়া বিস্ফোরণের সময় থেকেই ওয়ান্টেড। দাভোলকর ও পানসারে হত্যাকাণ্ডে এদের প্রত্যক্ষ ভূমিকা আছে বলে সন্দেহ। দুটি হত্যাকাণ্ডেই এরাই গুলি চালিয়েছিল বলে প্রাথমিক ভাবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। তবে আন্দুরে এবং কালাসকরের নাম উঠে আসার পর বিষয়টি অস্পষ্ট।

রুদ্র পাটিল- সনাতন সংস্থার সাধু, ২০০৯-এর গোয়া বিস্ফোরণের সময় থেকে ওয়ান্টেড। গোবিন্দ পানসারে হত্যা মামলায় প্রত্যক্ষ ভূমিকা ছিল বলে সন্দেহ।

অমিত ডেগওয়েকার- গোয়ার পোণ্ডায় সনাতন সংস্থার আশ্রমবাসী। অমোল কালের গোপন সংগঠন ও সনাতন সংস্থার মধ্যে যোগাযোগকারী ব্যক্তি এই ডেগওয়েকর, এমনটাই সন্দেহ।

gauri lankesh
Advertisment