ইজরায়েলি বাহিনী উত্তর গাজাকে অবরুদ্ধ অঞ্চলের বাকি অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে সোমবার রাতভর সেখানে তীব্র বিমান হামলা চালিয়েছে। যা ঘনবসতিপূর্ণ গাজা শহরে মাসব্যাপী যুদ্ধের মধ্যেই জন্ম দিয়েছে একটি রক্তাক্ত পর্বের। বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ইরানের প্রেসিডেন্ট সইদ ইব্রাহিম রাইসির সঙ্গে সোমবার কথা বলেছেন। এমনটাই জানিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। দুই নেতা পশ্চিম এশিয়ায় ক্রমবর্ধমান হিংসা রুখতে মানবিক সহায়তা দান ও দ্রুত শান্তি পুনরায় প্রতিষ্ঠার ওপর জোর দিয়েছেন।
সর্বশেষ প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধে প্যালেস্তাইনে নিহতের সংখ্যা ১০,০০০ ছাড়িয়েছে। যার মধ্যে ৪,১০০টিরও বেশি শিশু এবং ২,৬৪০ জন মহিলা। গাজায় হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য বিভাগ এমনটাই দাবি করেছে। রবিবার কেন্দ্রীয় গাজা উপত্যকায় দুটি শরণার্থী শিবিরে ইজরায়েলি বিমান হামলার অভিযোগ ওঠে। তার পরেই হামাসের স্বাস্থ্য বিভাগ এমনটাই দাবি করে। এই অভিযানে বহু মানুষ মারা যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এর পাশাপাশি, অধিকৃত পশ্চিম তীরে হিংসা ও ইজরায়েলি অভিযানে ১৪০ জনেরও বেশি প্যালেস্তিনীয় প্রাণ হারিয়েছেন বলে অভিযোগ।
পালটা ইজরায়েলে, হামাসের হামলায় ১,৪০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন এবং ২৪২ জনকে জঙ্গি গোষ্ঠী পণবন্দি করেছে। তার মধ্যেই আল জাজিরা টিভি এবং হামাসের ঘনিষ্ঠ আল আকসা রেডিও সোমবার অভিযোগ করেছে যে ইজরায়েলি বাহিনী গাজা শহরের আল-শিফা হাসপাতাল কমপ্লেক্সের একটি ভবনে সোলার প্যানেল সিস্টেমের ওপর বোমা হামলা চালিয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে হামাস আর ইজরায়েলের পক্ষ থেকে দাবি আর পালটা দাবি অব্যাহত। লেবাননে হামাসের সশস্ত্র শাখা বলেছে, তারা ইজরায়েলে ১৬টি রকেট নিক্ষেপ করেছে। ইসলামপন্থী গোষ্ঠী হামাসের সশস্ত্র শাখা আল কাসাম ব্রিগেড সোমবার এ-ও জানিয়েছে যে তারা লেবানন থেকে যে রকেটগুলো উৎক্ষেপণ করেছে, তা ইজরায়েলের শহর নাহারিয়া এবং দক্ষিণ হাইফায় আঘাত করেছে। পালটা ইজরায়েলি বাহিনী জানিয়েছে, তারা পশ্চিম তীরে চার প্যালেস্তিনীয় জঙ্গিকে হত্যা করেছে। তারা বলেছে যে দখল করা পশ্চিম তীরের ওই অংশ হামাস দ্বারা পরিচালিত ছিল। আর, সেখান থেকে বারবার ইজরায়েলের ওপর হামলা হয়েছে।
আরও পড়ুন- ইজরায়েলি সেনার এয়ারস্ট্রাইক, মৃত্যু ৪ হাজার শিশুর, বিস্ফোরক তথ্য প্রকাশ্যে
তারই মধ্যে সোমবার ইজরায়েলের এক সামরিক মুখপাত্র বলেছেন, ইজরায়েলি বাহিনী উত্তর গাজা উপত্যকায় তাদের ভূগর্ভস্থ টানেল এবং বাংকারে হামাস জঙ্গিদের ওপর হামলা চালাতে প্রস্তুত। এজন্য সৈন্য ও ট্যাংকের সাহায্যে এলাকাটিকে বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা চলছে। এই ব্যাপারে ইজরায়েলের তরফে লেফটেন্যান্ট-কর্নেল রিচার্ড হেচট সাংবাদিকদের বলেন, 'এবার লড়াই ভূগর্ভেও চলবে। তার আগে আমরা তাদের বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা করছি।'