আগামি ২৬ মার্চ ফের দেশব্যাপী বনধের ডাক দিল কৃষক সংগঠনগুলি। কেন্দ্রের বিতর্কিত ৩টি কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে এই সিদ্ধান্ত। কৃষক ছাড়াও ক্ষেতমজুর সংগঠন এই বনধে অংশ নেবে। কৃষি আইন প্রত্যাহারের পাশাপাশি পেট্রল-ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি এবং রেলের বেসরকারিকরণের বিরোধিতাকেও এবার হাতিয়ার করেছেন কৃষকরা। সংগঠনের নেতা বুটা সিংহ বুর্জগিল বলেছেন, ‘জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি এবং রেল বেসরকারিকরণের বিরোধিতায় আগামী ১৫ মার্চ দেশজুড়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন হবে। এই আন্দোলনে সামিল হবেন শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিরাও।’
দিল্লির সিঙ্ঘু সীমানায় অবস্থানকারী কৃষকদের সমাবেশে উপস্থিত বুটা বলেন, ’২৬ মার্চের ধর্মঘটের আগে ১৯ মার্চ দেশ জুড়ে মন্ডি বাচাও ক্ষেতি বাচাও কর্মসূচি পালন হবে।’
অভিযোগ, ‘নয়া কৃষি আইন চালু করে কিসান মন্ডিগুলির অস্তিত্ব বিলুপ্ত করে দিতে চাইছে মোদী সরকার।‘ এদিকে, বুধবার হরিয়ানায় বিজেপি-জেজেপি জোট সরকারের বিরুদ্ধে কংগ্রেসের আনা অনাস্থা প্রস্তাবের বিরোধিতা যে বিধায়করা করেছেন, তাঁদের বয়কটেরও ডাক দিয়েছেন বুটা।
এদিকে, নরেন্দ্র মোদী সরকারের কার্যকাল আর রয়েছে সাড়ে তিন বছর। কিন্তু এই সাড়ে তিন বছর পর্যন্ত দিল্লির সীমান্তে বিক্ষোভ অবস্থানে বসে থাকার হুঁশিয়ারি দিলেন কৃষক নেতা নরেন্দ্র টিকায়েত। কিংবদন্তী কৃষক নেতা মহেন্দ্র সিং টিকায়েতের ছেলের হুঁশিয়ারি, দ্বিতীয় মোদী সরকারের কার্যকালের শেষ পর্যন্ত দেখে ছাড়বেন কৃষকরা। সরকার যদি তিনটি কৃষি আইন বাতিল না করে তাহলে দীর্ঘকাল অবস্থানে অনড় থাকবেন কৃষকরা, এমনটাই হুঁশিয়ারি নরেন্দ্রর।
এই কৃষক নেতা ভারতীয় কিষাণ ইউনিয়নের কোনও পদে নেই। কিন্তু পারিবারিক ভাবেই সংগঠনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বড় দুই দাদা নরেশ এবং রাকেশের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কৃষক আন্দোলন করছেন নরেন্দ্র। দিল্লির টিকরি ও সিংঘু সীমান্তে ১০০ দিন পার করেছে আন্দোলন। কিন্তু হাল ছাড়তে নারাজ টিকায়েতরা।
সংবাদসংস্থা পিটিআইকে নরেন্দ্র জানিয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে যদি কোনও অন্যায়ের অভিযোগ ওঠে তাহলে সেই মুহূর্তে আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়াবেন টিকায়েত ভাইয়েরা। অনেকেই অভিযোগ করেছেন, তাঁদের সম্পত্তি অনেক। কিন্তু সেসব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন নরেন্দ্র।
বড় ভাই নরেশ সংগঠনের সভাপতি। রাকেশ টিকায়েত সংগঠবের জাতীয় মুখপাত্র। ১৯৮৬ সালে এই সংগঠন তৈরি করেন কিংবদন্তী কৃষক নেতা মহেন্দ্র সিং টিকায়েত। ২০১১ সালে তাঁর মৃত্যুর পর নরেশ ও রাকেশ সংগঠনের হাল কাঁধে নেন। কয়েক বছরে বিভিন্ন ছোট ছোট কৃষক সংগঠন ভারতীয় কিষাণ ইউনিয়নের সঙ্গে জুড়ে যায়। নরেন্দ্র জানিয়েছেন, তিনি গাজীপুর সীমান্তে মাঝেমধ্যেই যান কৃষকদের উৎসাহ বাড়াতে।