Advertisment

আমেরিকায় হিংসার জেরে গ্রেফতার অন্তত ৪,০০০, বাঙ্কারে লুকোলেন ট্রাম্প

অবস্থা এমন দাঁড়ায় যে হোয়াইট হাউজের বাঙ্কার-এ আশ্রয় নিতে বাধ্য হন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প। বাইরে তখন চলছে পুলিশের ব্যারিকেড ভাংচুর এবং অবিরাম পাথর বৃষ্টি। 

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
george floyd death protests

হোয়াইট হাউজের ওভাল অফিসে ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: টুইটার/হোয়াইট হাউজ

জর্জ ফ্লয়েড-এর মৃত্যুর প্রতিবাদে রবিবার রাতেও উত্তাল হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক বড় শহর। পরপর তিনদিন পুলিশ-জনতা সংঘর্ষের ফলে ক্রমাগত বাড়ছে উত্তেজনা। অবস্থা এমন দাঁড়ায় যে হোয়াইট হাউজের বাঙ্কার-এ আশ্রয় নিতে বাধ্য হন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প। বাইরে তখন চলছে পুলিশের ব্যারিকেড ভাংচুর এবং অবিরাম পাথর বৃষ্টি।

Advertisment

গত সোমবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিনিয়াপলিস শহরে ফ্লয়েড-কে গ্রেফতার করার সময় তাঁকে মাটিতে ফেলে তাঁর গলার ওপর হাঁটু গেড়ে বসে পুলিশকর্মী ডেরেক শভাঁ। ঘটনাটির একটি সংক্ষিপ্ত ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায়, যাতে ফ্লয়েড-কে বলতে শোনা যাচ্ছে, "প্লিজ, আই কান্ট ব্রিদ (প্লিজ, আমি নিঃশ্বাস নিতে পারছি না)।" এর অল্পক্ষণ পরেই অ্যাম্বুল্যান্সেন করে হাসপাতালে পাঠানো হয় তাঁকে, এবং তারও কিছুক্ষণ পর মারা যান ৪৬ বছর বয়সী এই কৃষ্ণাঙ্গ।

এই মৃত্যুরই প্রতিবাদে হিংসার আগুন জ্বলে উঠেছে আমেরিকার বহু শহরে এবং শহরতলিতে, ম্রত্যু হয়েছে বেশ কিছু মানুষের, এবং চলেছে অবাধ লুটতরাজ। তবে ট্রাম্প এই প্রতিবাদের দায় চাপিয়েছেন চরম বামপন্থী সংগঠন অ্যান্টিফা (Antifa)-র ওপর। মার্কিন অ্যাটর্নি-জেনারেল উইলিয়াম পি বার একটি বিবৃতিতে বলেছেন, "অ্যান্টিফা দ্বারা প্ররোচিত এবং সংঘটিত এই হিংসা আসলে অভ্যন্তরীণ সন্ত্রাস, এবং সেইমতোই পদক্ষেপ নেওয়া হবে এর বিরুদ্ধে।"

অ্যাটল্যান্টা, শিকাগো, ডেনভার, লস অ্যাঞ্জেলেস, স্যান ফ্রান্সিসকো, এবং সিয়্যাটল সমেত আরও কয়েকটি বড় শহরে কার্ফু জারি করা হয়েছে। ওয়াশিংটন ছাড়া আরও ১৫ টি রাজ্যে মোতায়েন করা হয়েছে ন্যাশনাল গার্ড-এর সৈন্য এবং বায়ুসেনা। সঙ্গে রয়েছে সশস্ত্র সাঁজোয়া গাড়িও। সংবাদসংস্থা এপি জানাচ্ছে, এই ক'দিনের হিংসার জেরে হাইওয়ে অবরোধ, লুটপাট, এবং কার্ফু লঙ্ঘনের অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন অন্তত ৪,১০০ জন। তবে প্রতিবাদীদের একাংশ শান্তিপূর্ণ মিছিল করে অগ্নিসংযোগ, ভাংচুর, এবং লুটপাট বন্ধ করার আবেদন জানিয়েছেন।

তবে এই হিংসার ছোঁয়াচ লেগেছে ইউরোপেও। লন্ডনের ট্রাফালগার স্কোয়ারে করোনাভাইরাস জনিত সোশ্যাল ডিস্ট্যান্সিং-এর নিয়ম সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে প্ল্যাকার্ড হাতে জড়ো হন হাজার হাজার বিক্ষোভকারী।

ওদিকে শুক্রবার রাতেই হোয়াইট হাউজ-এর এক গোপন বাঙ্কারে ঘণ্টাখানেকের জন্য স্থানান্তরিত করা হয় রাষ্ট্রপতি ট্রাম্পকে। সাধারণত সন্ত্রাসবাদী হামলা বা সমমানের কোনও বিপর্যয়ের ক্ষেত্রেই ব্যবহৃত হওয়ার কথা এই বাঙ্কার। ট্রাম্পের বাঙ্কারে স্থানান্তরিত হওয়ার খবর প্রথম প্রকাশ করে নিউ ইয়র্ক টাইমস। তবে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে তাঁর স্ত্রী মেলানিয়া এবং ১৪ বছরের পুত্র ব্যারন-কেও বাঙ্কারে পাঠানো হয় কিনা, তা জানা যায় নি।

সংবাদসংস্থা এপি জানিয়েছে, তিনি তাঁর নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন, একথা নিজের উপদেষ্টাদের কাছে স্বীকার করেছেন ট্রাম্প। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ট্রাম্পের রিপাবলিকান পার্টির এক সদস্য বলেছেন, প্রতিবাদীদের বিপুল সংখ্যা এবং ক্রোধের বহরে রীতিমত ধাক্কা খেয়েছেন রাষ্ট্রপতি এবং তাঁর পরিবার।

সোমবার হোয়াইট হাউজ-এর কাছে প্লাস্টিকের ব্যারিয়ার এবং রাস্তার সাইনবোর্ড ব্যবহার করে বিক্ষিপ্তভাবে আগুন জ্বালান কিছু বিক্ষোভকারী। নিকটবর্তী একটি বাড়ি থেকে আমেরিকার পতাকা খুলে নিয়ে নিক্ষেপ করা হয় আগুনে। গাছের ডাল ভেঙ্গেও আগুনে ফেলেন কেউ কেউ। হোয়াইট হাউজ-এর সামনের পার্কের উত্তরদিকে আগুন গ্রাস করে কিছু শৌচালয় এবং একটি রক্ষণাবেক্ষণ দফতর।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

Advertisment