ফেব্রুয়ারি মাসে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে, বিদেশমন্ত্রী ড. এস জয়শংকরকে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে জর্জ সোরোসের সমালোচনার ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল। জবাবে জর্জ সোরোস সম্পর্কে জয়শংকর বলেছিলেন, 'পুরোনো মানসিকতার লোক, ধনী, খুব বেশি মতামত জানান আর বিপজ্জনক।'
বিদেশমন্ত্রী সোরোস সম্পর্কে অভিযোগ করেছিলেন যে তিনি এমন একজন ব্যক্তি, যিনি 'নিউইয়র্কে বসে', এমন একটি সরকারের ব্যাপারে বলছেন, যে সরকারকে তিনি পছন্দই করেন না। সম্প্রতি জয়শংকরের বেশ কিছু প্রতিক্রিয়া সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। বিদেশমন্ত্রীর সোরোস সম্পর্কে সেই তিক্ষ্ণ তিরস্কারও ভাইরাল হতে দেরি হয়নি।
এখানে একটি বৈপরীত্য আছে
ভারত রাষ্ট্রসংঘের গণতান্ত্রিক তহবিলে (ইউএনডিইএফ) অর্থদানকারীদের মধ্যে ওপরের সারিতে আছে। এই গণতান্ত্রিক তহবিলের লক্ষ্য হল স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, নাগরিক সমাজ, সমাজসেবী সংস্থাগুলোর (সিএসও) মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে গণতন্ত্রকে উন্নীত করা। যে নাগরিক সমাজ, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলোর মাধ্যমে ভারত বিশ্বজুড়ে গণতন্ত্রের উন্নয়নে বিনিয়োগ করছে, তার মধ্যে অনেকগুলোই সোরোসের জনহিতকর সাম্রাজ্যের সঙ্গে যুক্ত।
এর অর্থ হচ্ছে, পুরোনোপন্থী, ধনী এবং 'বিপজ্জনক' সোরোসকে নিয়ে রাষ্ট্রসংঘে ভারতের কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু, সেই ব্যক্তিই ভারতের বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করলেই, ব্যাপারটা বিপজ্জনক। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এক তদন্ত রিপোর্টে এমনটাই ধরা পড়েছে।
আরও পড়ুন- মোদী সরকারের সঙ্গে অম্ল-মধুর সম্পর্ক তাঁর, কে এই জর্জ সোরোস?
সাহায্য পায় সোরোসের সংস্থাগুলো
২০০৫ সালে ইউএনডিইএফের সূচনালগ্ন থেকে এখনও পর্যন্ত ভারত এই তহবিলে ৩২ মিলিয়ন ডলারের বেশি দান করেছে। এই দানের পরিমাণের ভিত্তিতে বলা যায় যে ভারত বিশ্বে চতুর্থ স্থানে রয়েছে। শুধুমাত্র গতবছরই ভারত ১,৫০,০০০ মার্কিন ডলার এই তহবিলে দান করেছিল। যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, সুইডেন এবং জার্মানির ঠিক পরেই।
২০১৫ সাল থেকে ইউএনডিইএফ তহবিল যে ২৭৬টি প্রকল্পের খাতে ব্যয় হচ্ছে, তার মধ্যে ৬৮টি প্রকল্পের কাজ চলছে সোরোসের ওপেন সোসাইটি ফাউন্ডেশন বা ওএসএফ বা সিএসএফের মাধ্যমে। হয়, সোরোসের ফাউন্ডেশনের শাখাগুলো প্রকল্পের অংশীদার। না-হলে এই সব প্রকল্পের কাজে অনুদান প্রাপক।