মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে হিন্দুফোবিয়া ছড়ানোর চেষ্টার অভিযোগ সামনে আসার পর এবার মার্কিন আইনসভাতেই হিন্দুফোবিয়া ছড়ানোর চেষ্টার বিরুদ্ধে পাস হল নিন্দা প্রস্তাব। জর্জিয়ায় পাশ হয়েছে এই আইন। এই প্রথম কোনও মার্কিন রাজ্যে হিন্দুফোবিয়া ছড়ানোর চেষ্টার বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব পাশ হল। সেই প্রস্তাবে হিন্দুফোবিয়া এবং হিন্দু-বিরোধী ধর্মান্ধতার তীব্র নিন্দা করা হয়েছে। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, হিন্দুধর্ম হল বিশ্বের বৃহত্তম এবং প্রাচীনতম ধর্মগুলোর একটি।
বিশ্বের শতাধিক দেশে ১২০ কোটিরও বেশি হিন্দুধর্ম অনুসারী আছেন। হিন্দুধর্মের বৈশিষ্ট্য তার গ্রহণযোগ্যতা, পারস্পরিক শ্রদ্ধা, শান্তির মূল্যবোধ-সহ বিভিন্ন ঐতিহ্য এবং বিশ্বাস অনুযায়ী ব্যবস্থা। জর্জিয়ার বৃহত্তম হিন্দু এবং ভারতীয়-আমেরিকান প্রবাসী সম্প্রদায়ের অন্যতম কেন্দ্র আটলান্টা। সেই আটলান্টা শহরতলির ফোরসিথ কাউন্টির প্রতিনিধি লরেন ম্যাকডোনাল্ড এবং টড জোনস নিন্দা প্রস্তাবটি উত্থাপন করেন।
প্রস্তাবে বলা হয়েছে যে আমেরিকান-হিন্দু সম্প্রদায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে যেমন ওষুধ, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, তথ্যপ্রযুক্তি, আতিথেয়তা, অর্থ, শিক্ষা, উত্পাদন, শক্তি, খুচরো বাণিজ্য ইত্যাদি ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অন্যতম প্রধান অবদানকারী। শুধু তাই নয়, মার্কিন হিন্দু সম্প্রদায় যোগব্যায়াম, আয়ুর্বেদ, ধ্যান, খাদ্য, সংগীত, শিল্পকলা, সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রকেও সমৃদ্ধ করেছে। যা আমেরিকান সমাজে ব্যাপকভাবে গৃহীত হয়েছে এবং লক্ষ লক্ষ মার্কিন নাগরিকদের জীবনকে উন্নত করেছে।
নিন্দা প্রস্তাবে বলা হয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন এলাকায় গত কয়েক দশকে হিন্দু-আমেরিকানদের বিরুদ্ধে ঘৃণামূলক অপরাধ ঘটেছে। শুধু তাই নয়, যে বুদ্ধিজীবীরা হিন্দুধর্মকে ধ্বংস করতে চান, পবিত্র হিন্দু গ্রন্থ নষ্ট করতে চান, তাঁরা লাগাতার হিন্দুদের বিরুদ্ধে দোষারোপ করে চলেছেন। আর, হিন্দুদের বিরুদ্ধে হিংসা এবং নিপীড়নের সাংস্কৃতিক অনুশীলনে প্রশ্রয় দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, এই সব ব্যক্তিরাই হিন্দুফোবিয়া বাড়াতে চাইছেন। আর, তা প্রাতিষ্ঠানিক করারও চেষ্টা চালাচ্ছেন।
আরও পড়ুন- বেনজির আর্থিক সমস্যায় টালমাটাল পাকিস্তান, খাবারের দাম জোগাতেই হিমশিম খাচ্ছেন বাসিন্দারা
উত্তর আমেরিকার হিন্দুদের জোট (CoHNA)। এই জোটের সদস্যরা জর্জিয়ার আটলান্টায় ২২ মার্চ প্রথমবার হিন্দুদের পক্ষে সোচ্চার হওয়ার জন্য সমবেত হয়েছিলেন। এই সমাবেশে প্রায় ২৫ জন আইনপ্রণেতা উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের মধ্যে রিপাবলিকান থেকে ডেমোক্র্যাট, সবাই ছিলেন। উপস্থিত সকলেই হিন্দু সম্প্রদায়ের উদ্বেগগুলো বোঝা, বৈষম্যের বিরুদ্ধে এই সম্প্রদায়কে রক্ষা করার উপায় তৈরির মত নানা বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেন।