বার্লিনের স্থানীয় আদালত শুক্রবার ২৮ মাসের আরিহাকে তার বাবা-মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার আবেদন খারিজ করে জানিয়েছে আপাতত খুদে আরিহার দেখভাল করবে রাষ্ট্র। একই সঙ্গে তাদের সন্তানের আঘাতটি "দুর্ঘটনাজনিত" বলে অভিভাবকদের দাবিকেও খারিজ করে দিয়েছে আদালত। আদালত জোর দিয়ে জানায় '"সন্তানের ভবিষ্যৎ সর্বোত্তম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে", যার ফলে আদালত তার রায়কে ন্যায়সঙ্গত বলেই মনে করছে।
পাশাপাশি শিশুটিকে স্থানীয় সংস্থার হাতেই হস্তান্তর করেছে। তারাই আরিহার দেখভাল করছে। ২৮ মাস বয়সি আরিহার দেখভাল করবে ‘Jugendmatt’ ।শিশুটিকে সরাসরি তাদের কাছে ফেরত দেওয়ার বদলে ইন্ডিয়ান ওয়েলফেয়ার সার্ভিসেসের কাছে হস্তান্তর করার জন্য আরিহার বাবা-মা’র আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে আদালত। আদালতের এই রায়ের পর এক বিবৃতিতে, আরিহার বাবা-মা ভারত সরকারের প্রতি তাদের বিশ্বাস প্রকাশ করে বলেছেন যে তাদের আস্থা রয়েছে যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বিদেশ মন্ত্রী ডঃ জয়শঙ্কর আরিহাকে ভারতে ফিরিয়ে আনার জন্য সর্বোত্তম চেষ্টা করবেন। তারা তাদের বিবৃতিতে বলেছেন, “আমরা আস্থা রাখি যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বিদেশ মন্ত্রী ডঃ এস জয়শঙ্কর আরিহাকে ভারতে ফিরিয়ে আনার জন্য সবরকমের প্রচেষ্টা চালাবেন,”
আরিহা শাহ, যার বয়স এখন ২৮ মাস। ২০২১ সালের ২৩শে সেপ্টেম্বর থেকেই সাল থেকে জার্মানিতে বাবা-মায়ের সঙ্গে ছিলেন আরিহা। তখন তার বয়স ছিল মাত্র সাত মাস৷ জার্মান কর্তৃপক্ষ আরিহার বাবা-মা, ধারা এবং ভাবেশ শাহের বিরুদ্ধে মেয়ে আরিহাকে হয়রানির অভিযোগ আনেন।
আরও পড়ুন: < ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের শুনানি আগামী সপ্তাহে, ১৫০০ পাতার চার্জশিটে কী জানাল দিল্লি পুলিশ? >
২০২১ সালে আহত অবস্থায় আরিহা নামে ওই শিশুকন্যাটিকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন তার মা-বাবা। চিকিৎসার সময় বাচ্চাটির ক্ষত দেখামাত্র ধারা ও ভবেশের বিরুদ্ধে হেনস্তার মামলা দায়ের করা হয়। এরপরেই শিশুটিকে সেখানকার একটি শিশু সুরক্ষা সংস্থায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়। আরিহাকে দেশে ফেরানোর ব্যাপারে ১৯টি রাজনৈতিক দলের ৫৯ জন সাংসদ আরিহাকে দেশে ফেরানোর বিষয়ে দিল্লিতে জার্মানির রাষ্ট্রদুতের কাছে একটি চিঠিও দেন।
এখানেই না থেমে আবেদনকারী সাংসদরা জানান, ‘ভারতে আরিহার দেখভাল করবে একটি জৈন পরিবার। শিশুটির মা-বাবাও সঙ্গে থাকবেন। সর্বক্ষণ তাঁদের গতিবিধির উপর নজর রাখবে ভারতের শিশু সুরক্ষা সংস্থাগুলি।’ বিদেশ মন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্করও এই ঘটনায় তার হতাশা প্রকাশ করেছেন এবং বলেছেন যে আরিহাকে তার বাবা-মায়ের সাথে দেখা করার জন্য ভারত সরকার সবকিছু করছে।
এরপর গতকালের এই রায়ে হতাশ আরিহার বাবা-মা। তারা জার্মানির উচ্চ আদালতে এব্যাপারে আপিল করবেন বলেও জানিয়েছেন। আপাতত আরিহার দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে Jugendmatt কে। Jugendmatt হল শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের দেখভালের জন্য একটি জার্মান সংস্থা৷ জার্মানি এবং অস্ট্রিয়া উভয় দেশের মাধ্যমে সংস্থা পরিচালিত হয়। এই সংস্থাটি ১৯২২ সাল থেকে জার্মানিতে সক্রিয় রয়েছে। বিশেষ বিষয় হল এই সংগঠনটি স্বাধীনভাবে কাজ করে, তাই এতে সরকারের সরাসরি কোনো হস্তক্ষেপ নেই।