হিজাব ইস্যুতে এবার মুখ খুললেন, গত বছর মিস ইউনিভার্স খেতাব জয়ী হরনাজ কৌর সান্ধু (Harnaaz Kaur Sandhu) সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘হিজাব বিতর্কে মেয়েদেরই নিশানা করা হচ্ছে। মেয়েদের বাঁচতে দিন, সে যেভাবে চায় সেভাবেই তাকে বাঁচতে দিন। ডানা মেলে উড়তে দিন। ওর নিজের ডানা। আপনি কাটার কে! ডানা যদি কাটতে হয়, নিজের কাটুন।’
বিদেশের মাটিতে খেতাব (Miss Universe 2021) জেতার পর সম্প্রতি দেশে ফিরেছেন হরনাজ। সেই উপলক্ষে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন তিনি। প্রথমেই তিনি জানান, রাজনৈতিক কোন প্রশ্নের কোনও উত্তর তিনি দেবেন না। তার পরেও হিজাব নিয়ে প্রশ্ন করায় কিছুটা বিরক্তি ধরা পড়ে তাঁর চোখে মুখে। এক সময় তিনি এই সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দিতে অস্বীকার করেন, তার পরেও তাঁকে জোরাজুরি করা হলে তিনি জানান, ‘‘সত্যি বলতে কি, সবসময় নেয়েদেরই নিশানা করা হয়। দেখুন, এখনও আমাকে নিশানা করা হচ্ছে"।
এরপরই হিজাব ইস্যু নিয়ে তিনি ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘হিজাব বিতর্কে মেয়েদেরই নিশানা করা হচ্ছে। মেয়েদের বাঁচতে দিন, যে ভাবে চায় সে ভাবে বাঁচতে দিন। ডানা মেলে উড়তে দিন। ওর নিজের ডানা। আপনি কাটার কে! ডানা যদি কাটতে হয়, নিজের কাটুন।’’ প্রসঙ্গত হিজাব ইস্যুতে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। হিজাব নিয়ে কর্ণাটক আদলতের রায়ে বলা হয়েছে 'ধর্ম চর্চায় হিজাব অপরিহার্য নয়'। আদালতের এই মন্তব্য নিয়েও বিতর্ক শুরু হয়েছে। বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টেও পৌঁছেছে।
এর আগে হিজাব নিয়ে মুখ খুলেছেন নোবেলজয়ী মালালা ইউসুফজাই থেকে জাভেদ আখতার। মালালা ইউসুফজাই এক টুইট বার্তায় লিখেছেন, ‘হিজাব পরে মেয়েদের স্কুলে যেতে নিষেধ করার বিষয়টি ভয়াবহ।’ সেইসঙ্গে মুসলিম মহিলাদের যাতে কোণঠাসা করে না দেওয়া হয়, সেজন্য ‘ভারতীয় নেতাদের’কাছে আর্জিও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: দেশ জুড়ে ২০ হাজার পথ শিশুদের পুনর্বাসনের প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে: NCPCR
কর্নাটকে হিজাব বিতর্কের মাঝে সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হয়েছেন জাভেদ আখতার। কর্ণাটকে ঘটে যাওয়া ঘটনার জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি একরাশ বিরক্ত প্রকাশ করেছেন। এর আগে কমল হাসান হিজাব বিতর্কের তীব্র নিন্দা করেছেন। এবার হিজাব বিতর্ক নিয়ে নিজের বিরক্ত সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে জাভেদ আখতার বলেছিলেন “আমি কখনই হিজাব বা বোরখার পক্ষে ছিলাম না। আমি এখনও এটির পাশে আছি। ছোট ছোট মেয়েদের ভয় দেখানো হচ্ছে। পড়াশুনার পরিবেশ নষ্ট করা হচ্ছে। এই কট্টোর পন্থীদের জন্য আমার অবজ্ঞা ছাড়া আর কিছুই নেই। এটা কি তাদের মনুষ্যত্বের ধারণা”!
উল্লেখ্য, গত বছরের ডিসেম্বরে হিজাব পরিহিত কিছু মুসলিম মেয়েকে কর্নাটকের উদুপির একটি সরকারি কলেজে প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে একাধিক কলেজে সেরকম নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। গত কয়েকদিনে সেই পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে। মঙ্গলবার সকালেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে উদুপির মহাত্মা গান্ধী মেমোরিয়াল কলেজে। গেরুয়া স্কার্ফ ও পাগড়ি পরে কলেজের বাইরে জড়ো হন একদল পড়ুয়া। ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দিতে থাকেন তাঁরা। পালটা ‘ন্যায় বিচার’-এর স্লোগান দেন হিজাব পরিহিত ছাত্রীরা। হিজাব পরা ছাত্রীদের দাবি, অধ্যক্ষ ক্লাসে ঢুকতে দেননি। একাধিক কলেজে সেরকম পরিস্থিতি তৈরি হয়। বিক্ষোভ, পালটা বিক্ষোভ হয়। বিষয়টি গড়ায় আদালত পর্যন্ত। কর্ণাটক আদলত তার রায়ে বলেছেন, 'মেয়েদের হিজাব পরা কখনোই ইসলাম ধর্মের অপরিহার্য অংশ নয়'। এরপরেও বিতর্ক না কমায় বিষয়টি পৌঁছায় সুপ্রিম কোর্ট অবধি।
Read in English