গুজরাটের কচ্ছ জেলার ভুজ শহরের একটি কলেজের হস্টেলের কিছু ছাত্রীকে জোর করে অন্তর্বাস খুলিয়ে তারা ঋতুমতী কি না, তা পরীক্ষা করার অপরাধে বরখাস্ত করা হলো কলেজের অধ্যক্ষা, হস্টেলের রেক্টর, এবং পিওনকে। এর আগে এই তিনজনের নামে ৬০ জনের বেশি ছাত্রীকে অন্তর্বাস খুলতে বাধ্য করার অভিযোগে এফআইআর দায়ের করেছিল পুলিশ।
এফআইআর দায়ের হওয়ার পর অধ্যক্ষা রীতা রানিঙ্গা, হস্টেল সুপারভাইজার রামিলাবেন এবং পিওন নয়নাকে শনিবার বরখাস্ত করা হয়। সোমবার একথা জানান শ্রী সহজানন্দ গার্লস ইন্সটিটিউটের ট্রাস্টি প্রবীণ পিন্ডোরিয়া।
এই তিনজন ছাড়া অনিতা নামক এক বহিরাগত মহিলার নামও ভুজ পুলিশের এফআইআর-এ উল্লেখ করা হয়েছে। ওই চতুর্থ মহিলা অবশ্য কলেজের সঙ্গে যুক্ত নন বলে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: পোশাক খুলে ঋতুস্রাবের পরীক্ষা দিতে হল ছাত্রীদের, আটক অধ্যক্ষ
অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৮৪ (তোলাবাজি), ৩৫৫ (অসম্মান করার উদ্দেশ্যে আঘাত করা) এবং ৫০৬ (অপরাধমূলক ভীতি প্রদর্শন) ধারায় মামলা করা হয়েছে, যদিও এখন পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হন নি।
শ্রী সহজানন্দ গার্লস ইন্সটিটিউট একটি স্ব-অর্থায়িত কলেজ, যার নিজস্ব মেয়েদের হস্টেল রয়েছে। ভুজের স্বামীনারায়ণ মন্দিরের অধীনস্থ একটি ট্রাস্ট রয়েছে কলেজ পরিচালনার দায়িত্বে। ক্রান্তিগুরু শ্যামজি কৃষ্ণ ভার্মা কচ্ছ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্ভুক্ত এই কলেজ।
ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসার পর রাষ্ট্রীয় মহিলা কমিশনের তরফে রবিবার মেয়েদের হস্টেলের আবাসিকদের সঙ্গে দেখা করে সাত-সদস্যের একটি দল। এর আগে সংবাদমাধ্যমকে এক ছাত্রী জানায়, ১১ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পাসের মধ্যে অবস্থিত হস্টেলের ভেতর ঘটে এই ঘটনা। তার অভিযোগ, ৬০ জনের বেশি মেয়েকে হস্টেলের এক মহিলা কর্মী শৌচাগারে নিয়ে গিয়ে তারা ঋতুমতী কিনা, তা পরীক্ষা করতে চান।
প্রাথমিক তদন্তের পর কচ্ছ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য দর্শনা ঢোলাকিয়া বলেছিলেন, যেহেতু ঋতুস্রাব চলাকালীন কোনও ছাত্রী হস্টেলের অন্যান্য আবাসিকদের সঙ্গে বসে খাওয়ার নিয়ম নেই, সেহেতু ওই ছাত্রীদের পরীক্ষা করা হয়েছিল। এবং এই নিয়ম ভাঙা হচ্ছে, এই সন্দেহে হস্টেল কর্তৃপক্ষ ছাত্রীদের পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নেন।
এর আগে পুলিশ জানায়, কিছু মহিলা পুলিশ কর্মীকে নিয়ে গঠিত একটি বিশেষ তদন্তকারী দল ঘটনাটি খতিয়ে দেখবে।