দীর্ঘদিন জল ঘোলার পর অবশেষে নড়ে বসল কেন্দ্রীয় সরকার, গনিখান চৌধুরী ইনস্টিটিউট অফ ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজির অচলাবস্থা কাটাতে হস্তক্ষেপ করল মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের উচ্চ শিক্ষা বিভাগ। গনিখান চৌধুরী কলেজের ছাত্রদের বৈধ সার্টিফিকেট দিতে হবে, এই মর্মে বুধবার একটি নির্দেশিকা জারি করে মন্ত্রক। এই নির্দেশিকায় জানানো হয়, প্রথম স্তরের সার্টিফিকেশন কোর্সকে এবং ১০+২ (ভোকেশনাল) ডিপ্লোমা কোর্সকে তিন বছরের, এবং বি টেককে চার বছরের সমতুল্য মান্যতা দিতে হবে, এবং এই নিরিখেই বৈধ সার্টিফিকেটও দিতে হবে ২০১৫-তে পাশ করা ছাত্রদের।
ডিরেক্টর পরমেশ্বর রাও জানান, ''এই বিজ্ঞপ্তিই সব প্রশ্নের উত্তর দেবে। আশা করি এবার পরিস্থিতি সামাল দিতে পারব।'' এ বিষয় মালদা জেলা শাসক কৌশিক ভট্টাচার্য বলেন, ''খবর পেয়েছি, কেন্দ্রীয় সরকার বিষয়টি নিয়ে খুবই তৎপর। নির্দেশিকা অনুযায়ী ইতিমধ্যে কাজও শুরু করছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ, খুব শীঘ্রই সমস্যার সমাধান হবে, পাশাপাশি অচলাবস্থাও কেটে যাবে বলে মনে হয়।"
তবে ছাত্ররা এখনও অনড়, কারণ তাঁদের দাবি, এই বিষয়টি এখনও স্পষ্ট নয়, আন্দোলন ভেস্তে দিতেই কর্তৃপক্ষের এই চক্রান্ত বলে মনে করছেন তাঁরা। "বৈধ সার্টিফিকেটের পাশাপাশি আমাদের বি-টেক-এ ভর্তির ব্যবস্থার কথা উল্লেখ নেই ওই বিজ্ঞপ্তিতে। কাজেই যতক্ষণ না আমাদের সমস্ত দাবি মেনে নেওয়া হবে, ততক্ষণ আন্দোলন চলবে," বললেন এক ছাত্র। এদিকে এখনও কলেজের সমস্ত কার্যালয় বন্ধ করে রেখেছেন আন্দোলনকারী ছাত্ররা। কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, কলেজ না খুললে কোনও অফিসিয়াল কাজই সম্ভব নয়। প্রসঙ্গত, আন্দোলনের শুরু থেকেই ছাত্রদের অপেক্ষার করতে বলা হয়েছিল কর্তৃপক্ষের তরফে। প্রতিষ্ঠানের বর্তমান চেয়ারম্যান সৌমিত্র সরকার সদ্য যোগ দিয়েছেন পদে, তিনিও সময় চেয়েছিন বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য। অবশেষে অপেক্ষার অবসান হবে বলেই আশা করছেন গনিখান চৌধুরী ইনস্টিটিউট অফ ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজি। সংক্ষেপে জিকেসিআইইটি।
আরও পড়ুন: ঈদেও বাড়ি ফেরা হল না GKCIET ছাত্রছাত্রীদের, চলবে আন্দোলন
বহুদিন ধরেই সঙ্কটে রয়েছেন কলেজের ২০১০ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রছাত্রীরা। চলছিল লাগাতার টালবাহানা। বৈধ সার্টিফিকেট প্রদান ও ল্যাটারাল এন্ট্রি করে বি টেকে ভর্তির ব্যবস্থার দাবিতে গত ২৩ জুলাই থেকে আন্দোলনে বসেছেন কলেজের পড়ুয়ারা। এরপর গত ১০ অগাস্ট থেকে কলকাতায় অবস্থান চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা।
২০১০-এ মালদহের নারায়ণপুরে পত্তন হয় গনিখান চৌধুরী ইনস্টিটিউট অফ ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজির। বছর ছয় পর প্রথম ব্যাচ পাশ করার পরই পড়ুয়ারা জানতে পারেন, সার্টিফিকেট কোর্স, ডিপ্লোমা এবং বি টেক-এর প্রথম বর্ষের আগের দুটি কোর্স করার পর প্রতিষ্ঠান থেকে তাঁদের যে সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছে, অন্য প্রতিষ্ঠান বা চাকরীর ক্ষেত্রে তার কোনও মান্যতা নেই। ২০১০-এ জিকেসিআইইটি শুরু হয়েছিল ২+২+২ মডিউল প্যাটার্নে। সম্প্রতি রাজ্যপালকে চিঠি দিয়ে এ বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়ার আবেদন জানিয়েছিলেন GKCIET-র ছাত্রছাত্রীরা। আজ বৃহস্পতিবার, অর্থাৎ ৬ সেপ্টেম্বর, তাঁদের সঙ্গে দেখা করার আশ্বাস দিয়েছেন রাজ্যপাল কেশরী নাথ ত্রিপাঠী। অ্যাকাডেমি চত্ত্বরে জমায়েত হয়ে রাজভবন অবধি একটি মিছিলও করবেন তাঁরা।