গত দুদিন ধরে ছড়িয়ে পড়েছিল খবরটা। একজন "বিকৃতকাম" ব্যক্তি নাকি মহিলাদের ঘরে ঢুকে চুপিচুপি ঘুরে বেড়াচ্ছে, মাঝে মাঝে মানিব্যাগ থেকে খুচরো টাকা হাতাচ্ছে। পরনে তার শুধুই অন্তর্বাস। শুক্রবার সেই ব্যক্তিকে ৩৫ বছরের ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করল গোয়া পুলিশ।
তালেইগাঁও-এর বাসিন্দা তুলসীদাস শিরোদকারের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৫৭ (অনাধিকার প্রবেশ), ৩৮০ (চুরি) এবং ৩৫৪(সি) (লুকিয়ে কাউকে দেখা) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
পানাজির এক বিলাসবহুল ফ্ল্যাটবাড়ির বাসিন্দা ২০ বছরের এক যুবতী বুধবার পুলিশের কাছে যান, এই অভিযোগ জানাতে যে তিনি এক ব্যক্তিকে দেখেছেন তাঁকে ঘুমন্ত অবস্থায় দেখতে। "ভয় ছিল কিছুটা, যার ফলে আমরা ডিটেলস পাই নি। ওই বিল্ডিংএ আমাদের কর্মীরা যাওয়ার পর আরও মহিলারা এগিয়ে আসেন," বলেন পানাজি টাউন পুলিশের ইন্সপেক্টর সিদ্ধান্ত শিরোদকার।
আরও পড়ুন: সেতু দুর্ঘটনার পর যানজট দুর্ভোগ মেটাতে মরিয়া কলকাতা ট্রাফিক পুলিশ
বৃহস্পতিবারের মধ্যে তৈরি হয়ে যায় পুলিশের বিশেষ দল। যে আবাসন থেকে প্রথম অভিযোগ আসে, সেখান থেকে পরে আরও ১৫ জন মহিলা অভিযোগ নিয়ে এগিয়ে আসেন। কেউ দূর থেকে দেখেছেন করিডোরে একজন পুরুষ, সারা গায়ে তেল মাখা। কেউ দেখেছেন তাকে পাঁচিল টপকে যেতে। আরেকজন যেন স্বপ্ন দেখেছেন যে ঘরে কেউ গুটিশুটি মেরে শুয়ে আছে, আবার কেউ দেখেছেন ঘরের মেঝেতে "চ্যাটচ্যাটে কিছু একটা" পড়ে আছে। সবারই অভিযোগ জমা করে নেয় পুলিশ।
"শুনতে হয় আমাদের। সবাইকে ভয় গ্রাস করেছিল," বলেন শিরোদকর, যিনি অতীতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানির ফ্যাবইন্ডিয়া-র কর্মীদের বিরুদ্ধে আনা একই ধরনের অভিযোগের তদন্ত করেছেন। তিনি আরও বলেন, "একজন তো এটাও জানতে চাইলেন যে লোকটা রমন রাঘব জাতীয় কেউ কী না। তাছাড়া, একজন চোর তো টাকা চুরি করবে, অন্তর্বাস কেন চুরি করবে?"
প্রসঙ্গত, সিরিয়াল কিলার রমন রাঘব ১৯৬০-এর দশকে মুম্বইতে ত্রাসের সৃষ্টি করেছিল।
চিরাচরিত পুলিশি প্রক্রিয়া অনুসারে এবং ফেসবুকের মাধ্যমে একজন সাক্ষী জোগাড় করা গেল। একজন ট্যাক্সি ড্রাইভার এক ব্যক্তিকে দেখেছিলেন "অদ্ভুত দেখতে একটা লোক" বুধবার রাত ৩.১৫ নাগাদ তাড়াহুড়ো করে বেরিয়ে যাচ্ছে আবাসন থেকে। সেই লোককে খুঁজে পাওয়া গেল স্থানীয় এক ঝুপড়িতে।প্রতিবেশীরা জানালেন, পথচলতি একা মহিলাদের উত্যক্ত করত সে। লোকটির পোষা ১৪ টি রাস্তার কুকুরের বাধা টপকে পুলিশ শেষমেশ ঝুপড়িতে ঢুকতে সক্ষম হয়, এবং খুঁজে পায় একটি অন্তর্বাস।
অভিযুক্তকে ওই আবাসনে নিয়ে যাওয়া হলে সে পুলিশকে দেখিয়ে দেয়, ঠিক কীভাবে সে ঢুকত বেরোত। "এর থেকে বোঝা যাচ্ছে, এই ধরনের আবাসনে ব্যাক আপ সিকিউরিটির কতটা প্রয়োজন," বলেন শিরোদকর। "আমরা দেখছি যাতে সিকিউরিটি কর্মীদের এ ব্যাপারে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।"
আপাতত অভিযুক্তকে ইনস্টিটিউট অফ সাইকিয়াট্রি এবং হিউম্যান বিহেভিয়রে পাঠানো হচ্ছে পরীক্ষার জন্য।