Mankurad Mango: দেশের পশ্চিম উপকূলে ৮০টি আমার জাতের মধ্যে মানকুরাদ আম ভীষণ জনপ্রিয়। চাহিদাও প্রচুর। স্থানীয় বাজারে গড়ে প্রতি ডজনে ৫ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে মানকুরাদ।
মানকুরাদ আমই মালকোরাডো নামেই পরিচিত। এই আমের কেন এত দর? বিক্রেতারা এবং কৃষকরা মানকুরাদের বহুমূল্যের জন্য এই ফসলের চাহিদাকে দায়ী করেছেন।
অল গোয়া ম্যাঙ্গো গ্রোয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস-প্রেসিডেন্ট রাজেশ ধারগালকার বলেন, 'মানকুরাদ আম প্রথমে সবসময়ই বেশি দামে বিক্রি হয়, এই মরসুমে ফল স্বাভাবিকের চেয়ে এক মাস আগে বাজারে এসেছে, তাই দাম এত বেশি। সাধারণত, ফেব্রুয়ারী বা মার্চের শেষে মানকুরাদের আম বাজারে আসে। পাইকারি মূল্য তখন ডজন প্রতি প্রায় ৩ থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা হবে। কিন্তু এখন এই আম ডজনে পানাজি, মাপুসা, বিচোলিম এবং উপকূলীয় এলাকায় ৫ থেকে ৬ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।'
আগামী কয়েক সপ্তাহ মানকুরাদের এই উচ্চ-দাম অব্যাহত থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। রাজেশ ধারগালকারের কথায়, 'আর আগামী ৩-৪ দিনের মধ্যে আপাতত যে আম এসেছে তা বিক্রি হয়ে যাবে। গোয়ার মানুষ মানকুরাদকে এর অনন্য স্বাদ এবং গন্ধের জন্য ভালোবাসে।এই অঞ্চলের আবেগ। এখানে মানকুরাদের দাম ডজন প্রতি ৭ হাজার টাকা পর্যন্ত উঠলেও চাহিদা থাকবে। অনেক গোয়াবাসী, যাঁরা বিদেশ ভ্রমণ করছেন, তাঁরাও প্রচুর পরিমাণে এই আম কিনছেন। মানকুরাদের দাম শুধুমাত্র গরমে কমবে, কারণ সেই সময় এর সরবরাহ বৃদ্ধি পাবে এবং অন্যান্য জাতের আমও বাজারে চলে আসবে।'
দাম আগুন হওয়ায় বেশ কিছু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ক্রেতাদের ঠকানোরও অভিযোগ উঠছে। আম বাগানের মালিক নাজারে ডিসুজা বলেন, 'কিছু বিক্রেতা মিশ্র জাতের মানকুরাদ আম বিক্রি করে বাজারের সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করছে, যা সঠিকভাবে পাকা ও পরিপক্ক হয় না। আর কয়েকদিনের মধ্যেই বাজারে চলে আসবে খাঁটি জাতের মানকুরাদ।'
এই জাতের আমকে মূলত বলা হত মালকোরাডো, যার অর্থ পর্তুগিজ ভাষায় খারাপ রঙ। শব্দটি পরে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানকুরাদে রূপান্তরিত হয়। উজ্জ্বল হলুদ কমলা ও লালের মিশ্রণে মানকুরাদ সাধারণত ছোট-মাঝারি আকারের হয়ে থাকে। এর স্বাদ মিষ্টি ও পুরু শ্বাস রয়েছে।
গোয়াতে আম চাষের ইতিহাস পর্তুগিজ শাসনের সময়কালের, যখন বিশ্বাস করা হয় যে জেসুইট পুরোহিতরা গ্রাফটিং কৌশল চালু করেছিলেন যা রাজ্য জুড়ে বিভিন্ন আমের জাত ছড়িয়ে দিতে সাহায্য করেছিল। অল গোয়া ম্যাঙ্গো গ্রোয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের দায়ের করা জিআই ট্যাগের আবেদনে জেসুইট পুরোহিতের ১৭১০ সালের একটি প্রকাশনায় আম গাছের কলম করার প্রথম উল্লেখ রয়েছে।
সে সময় আমকে কূটনৈতিক হাতিয়ার হিসেবেও ব্যবহার করা হতো। জিআই অ্যাপ্লিকেশনে উল্লেখ, 'গোয়ার পর্তুগিজ গভর্নররা পুনের পেশোয়াদের কাছে গোয়ান আমের ঝুড়ি পাঠাতেন। পর্তুগিজরা পরে গোয়া থেকে আম রপ্তানি করার জন্য বেসরকারি ব্যবসায়ীদের জন্য বিশেষ পারমিটের ব্যবস্থা চালু করেছিল।'