ভারত সফরে এসেছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা। আর ভারতে এসে অতিথি আপ্যায়ণে আপ্লুত হলেন কিশিদা। সোমবার বিকেলে বৃষ্টিস্নাত পরিবেশে দিল্লির বুদ্ধজয়ন্তী পার্কে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে ঘুরলেন কিশিদা। সেখানে বাল বোধিবৃক্ষে শ্রদ্ধার্ঘ নিবেদন করেন তিনি। তার পর মোদীর সঙ্গে ঝাল ঝাল ফুচকা, লস্যি এবং আম পান্নার স্বাদ চাখলেন জাপানি প্রধানমন্ত্রী।
সোমবারই সকালে দুদিনের সফরে ভারতে এসেছেন কিশিদা। মোদীর সঙ্গে আঞ্চলিক বিষয়ে আলোচনার পাশাপাশি ভারত-জাপান দ্বিপাক্ষিক বৈঠকও হয়। কিশিদা এবং মোদীর অভ্যর্থনায় পার্কের গেট মেরিগোল্ড ফুল দিয়ে সাজানো হয়। সেখানে নিরাপত্তায় ছিলেন ২০-৩০ জন পুলিশ আধিকারিক। দিল্লি এমসিডি কর্মীরা পার্ক সংলগ্ন এলাকা আগেই পরিষ্কার করে রাখেন। দুই রাষ্ট্রনায়কের ভ্রমণের জন্য বিরাট হোর্ডিং লাগানো ছিল পার্কের গেটে।
দিল্লির প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিতি এই পার্কটি ৮১ একর এলাকাজুড়ে রয়েছে। এই পার্কটি ১৯৬৪ সালের ২৫ অক্টোবর উদ্বোধন করেছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী লাল বাহাদুর শাস্ত্রী। শ্রীলঙ্কা থেকে আনা পবিত্র বোধিবৃক্ষের চারাগাছ রোপণ করেন শাস্ত্রী। চারাগাছটি তৎকালীন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী সিরিমাভো বন্দরনায়েকে উপহার দিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন ভারত জোড়ো যাত্রায় ‘যৌন হয়রানি’ নিয়ে মন্তব্য, দিল্লি পুলিশকে জবাব দিলেন রাহুল
এই পার্কটি অন্তত ১০০টি প্রজাতির গাছের আস্তানা। ৪০টি বিরল প্রজাতির গাছ রয়েছে। খোলা বাগান, খেঁজুর গাছ, গোলাপ, ক্যাকটাসের মতো উদ্ভিদ রয়েছে। এই পার্কটি সম্পর্কে অনেক পরিবেশবিদ, প্রকৃতিপ্রেমী, উদ্ভিদপ্রেমী মানুষ লেখালেখি করেন। অরণ্যে পদচারণের স্মৃতি অনেকেই ভাগ করে নেন।
ইতিহাসে কথিত আছে, সম্রাট অশোক তাঁর দুই সন্তান মহিন্দা এবং সংঘমিত্রাকে নিয়ে খ্রীষ্টপূর্ব তৃতীয় শতকে শ্রীলঙ্কায় আসেন বৌদ্ধধর্ম প্রচারের জন্য। সেখানে লঙ্কার রাজা দেবনামপিয়া তিস্সাকে বৌদ্ধধর্মে দীক্ষিত করার জন্য এসেছিলেন তাঁরা। নয়া রাজধানী অনুরাধাপুরায় বৌদ্ধধর্ম স্থাপনের জন্য তাঁরা এসেছিলেন। তাতে বলা হয়েছে, সংঘমিত্রা গৌতম বুদ্ধর স্মৃতিবিজড়িত বোধিবৃক্ষের চারাগাছ নিয়ে গিয়েছিলেন লঙ্কায়। সেই চারা থেকেই অজস্র চারাগাছ তৈরি করেন সিংহলী বৌদ্ধরা। তারই একটি দিল্লির বুদ্ধ পার্কে রোপণ করা হয়।