পুনে পুলিশ মাওবাদীদের সঙ্গে যোগাযোগের অভিযোগে যে পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে, তাঁদের অন্যতম হলেন ভার্নন গনজালভেজ। তাঁর পুত্র সাগর আব্রাহাম গনজালভেজ একটি ফেসবুক পোস্টে তাঁদের বাড়িতে পুলিশি হানার সময়ে পরিবারের অসহায়তার কথা ব্যক্ত করেছেন।
‘’গতকাল সকালে একটা পরিচিত অসহায়তার অভিজ্ঞতা হল। সকাল ৬টা নাগাদ পুনে পুলিশের ১০ জনেরও বেশি একটি দল আমাদের বাড়িতে হানা দেয়। তাদের সঙ্গে ছিল এমআইডিসি থানার কনস্টেবলরা। ওরা এসেছিল আমাদের বাড়ি তল্লাশি করতে ও আমার বাবাকে গ্রেফতার করতে।’’ নিজের ফেসবুক পোস্টে লিখেছিলেন সাগর আব্রাহাম গনজালভেজ।
সাগর জানিয়েছেন, মাও সে তুং ও মার্ক্সের ওপর সমস্ত বই পুলিশ বাজেয়াপ্ত করে, কারণ সেগুলি তাদের মতে ‘প্রমাণ’স্বরূপ। তিনি একই সঙ্গে জানিয়েছেন, তাঁর নিজেরও প্রচুর বই নিয়ে গেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন, এলগার পরিষদ কাণ্ডে গ্রেফতার পাদ্রি, আইনজীবী, অধ্যাপক, কবি
‘‘আমাদের মোবাইল ফোন নিয়ে যাওয়া হয়েছে, ল্যান্ডলাইন ফোনের রিসিভার নামিয়ে রাখা হয়েছে, আমাদের পার্সোনাল কম্পিউটারের সিপিইউ খোলা হয়েছে, একটার পর একটা বই টেনে নামানো হয়েছে, সন্দেহজনক কিছুর খোঁজ পেতে আমাদের পেন ড্রাইভ স্ক্যান করা হয়েছে। মাও, নকশাল বা মার্ক্স, যেসব বইয়ের নামে এই নামগুলি ছিল সেগুলি বারবার দেখা হয়েছে, তার মধ্যে বহু বই প্রমাণ হিয়েবে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এই বইগুলি যে কোনও লাইব্রেরি বা অনলাইনে সহজেই পাওয়া যায়।’’
বাবার ২০০৭-এর গ্রেফতারির কথা মনে করে ভার্নন পুত্র বলেন, এই অনুভূতিগুলোর সঙ্গে তিনি পরিচিত।
তাঁর বক্তব্য, ‘‘সর্বশক্তিমান রাষ্ট্র ও তার যন্ত্রদের বিরুদ্ধে আমি বা আমার বাবা-মা কিছুই করে উঠতে পারব না।’’
সাগর বলেছেন, ‘‘১০ বছর আগে ২০০৭ সালে ঠিক এরকমই মনের অবস্থা হয়েছিল, যেদিন আমার বাবাকে অজস্র মিথ্যা অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল। সেদিন রাত বারোটার সময়ে তাঁকে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়, রাত বারোটা থেকে সকাল ছটা পর্যন্ত তল্লাশি চলে।’’
ভার্নন গনজালভেজকে প্রথম গ্রেফতার করা হয় মুম্বই থেকে ২০০৭ সালে। তাঁর বিরুদ্ধে নিষিদ্ধ মাওবাদী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ ছিল। তাঁর সঙ্গেই গ্রেফতার করা হয় নকশালপন্থী হিসেবে অভিযুক্ত শ্রীধর শ্রীনিবাসনও।
২০১৪ সালে নাগপুর সেশনস কোর্ট গনজালভেজকে অস্ত্র আইন, বিস্ফোরক আইন এবং ইউএপিএ-তে দোষী সাব্যস্ত করে। তাঁকে ৩ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ইউএপিএ ধারায়, তাঁকে পাঁচ বছরের জেল দেওয়া হয়।
পরবর্তীকালে শহরের কলেজে অর্থনীতির শিক্ষককার কাজ ছেড়ে দিয়ে তিনি বিদর্ভের শ্রমিকদের অধিকারের দাবিতে লড়াই শুরু করেন।