সিবিআই ডিরেক্টরের পদ থেকে অপসারিত হওয়ায় সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলেন অলোক ভার্মা। তাঁকে পদ থেকে সরানোর যে নির্দেশ কেন্দ্রীয় ক্যাবিনেটের নিয়োগকারী কমিটি দিয়েছে, সেটিকে চ্যালেঞ্জ করেই দেশের সর্বোচ্চ আদালতে গিয়েছেন এই আইপিএস অফিসার। সূত্রের খবর, চলতি সপ্তাহের শুক্রবার এই আবেদনের শুনানি হবে।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার মধ্যরাতে এই কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থায় চলতে থাকা কাজিয়ায় নাটকীয়ভাবে যবনিকা পতন হয়েছে! সিবিআইয়ের ডিরেক্টরের পদ থেকে অপসারণ করা হয়েছে আলোক ভার্মাকে। এর আগেই সিবিআই-এর স্পেশ্যাল ডিরেক্টর রাকেশ আস্থানাকেও সব দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর এরপরই শীর্ষ স্থানীয় দুই অফিসারের মধ্যে চলতে থাকা চাপানউতোরে হস্তক্ষেপ করে কেন্দ্রীয় সরকার। মঙ্গলবার মধ্যরাতের নির্দেশ বলা হয়, ১৯৮৬ ব্যাচের ওড়িশা ক্যাডার অফিসার ও যুগ্ম ডিরেক্টর এম নাগেশ্বর রাও এবার সিবিআই ডিরেক্টরের দায়িত্বে নেবেন।
উল্লেখ্য, এম নাগেশ্বর রাও এবছরই অতিরিক্ত ডিরেক্টরের পদে পদোন্নত হয়েছিলেন। সরকারি নির্দেশ বলা হয়েছে, ''ক্যাবিনেটের নিয়োগ কমিটির অনুমোদন অনুযায়ী এম নাগেশ্বর রাও সিবিআই-এর ডিরেক্টর পদে অন্তর্বর্তীকালীন দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করবেন''।
খবর অনুযায়ী, এদিন সকালে দিল্লির সিবিআই দফতরে হানা দেয় আধিকারিকরা। সিবিআই বিল্ডিংয়ের দশ ও এগারো তলায় চলে তল্লাশি। আলোক ভার্মা ও রাকেশ আস্থানার অফিসও সিল করে দেওয়া হয়।
সিবিআইয়ের এই দুই শীর্ষ আধিকারিকের দ্বন্দ্বটা কোথায়?
ঘুষের মামলা নিয়ে সিবিআইয়ের স্পেশাল ডিরেক্টর রাকেশ আস্থানার সঙ্গে আলোক ভার্মা বিতন্ডায় জড়িয়ে পড়াতেই বিপত্তি ঘটে। মঙ্গলবারই রাকেশ অনাস্থাকে সমস্ত দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এরপরই সরিয়ে দেওয়া হল অলোক ভার্মাকেও। ১৯৮৪ ব্যাচের গুজরাট ক্যাডারের ইন্ডিয়ান পুলিশ সার্ভিস অফিসারের রাকেশ আস্তানার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি হায়দরাবাদের ব্যবসায়ীর কাছ থেকে মঈন কুরেশি মামলায় রফা করতে দুই মধ্যস্থতাকারীর মাধ্যমে পাঁচ কোটি টাকা চেয়েছিলেন।
অপসারণের নির্দেশনামা।
এদিকে স্টার্লিং বায়োটেক মামলায় আলোক ভার্মার বিরুদ্ধেও জালিয়াতির অভিযোগ তোলেন রাকেশ আস্থানা। রাকেশ ক্যাবিনেট সচিবকে লিখিতভাবে জানান, আলোক ভার্মা তাঁর তদন্তের কাজে হস্তক্ষেপ করছেন এবং আইআরসিটিসি মামলায় লালু প্রসাদের বিরুদ্ধে রেইড করার চেষ্টাও করেন। আলোক ভার্মার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগও আনেন তিনি।
মঙ্গলবার আলোক ভার্মার বিরুদ্ধে করা রাকেশ আস্থানার এফআইআর বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে দিল্লি হাইকোর্ট। আগামী সোমবার পর্যন্ত সিবিআইকে মামলা স্থগিত রাখার নির্দেশও দিয়েছে আদালত। রাকেশ আনস্থার বিরুদ্ধে ঘুষের মামলায় রেকর্ড বিকৃতির অভিযোগে পুলিশ সুপারিনটেনডেন্ট দেবেন্দ্র কুমারকেও গ্রেফতার করেছে সিবিআই।
১৯৭৯ সালে ২২ বছর বয়সে AGMUT (অরুণাচল, গোয়া, মিজোরাম ইউনিট) ক্যাডার হিসাবে কাজ শুরু করেন আলোক বর্মা। তাঁর ব্যাচের সবথেকে কমবয়সী অফিসার ছিলেন তিনি। সিবিআইয়ের ডিরেক্টর পদে আসীন হওয়ার আগে আলোক বর্মা দিল্লির পুলিশ কমিশনার ছিলেন। দিল্লির কারা বিভাগের ডিরেক্টর জেনারেলের পদও সামলেছেন তিনি। মিজোরাম পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেল, পুদুচেরীর ডিজিপি এবং আন্দামান ও নিকোবর আইল্যান্ডের আইজিপির দায়িত্ব সামলেছেন একসময়। তিনি একমাত্র অফিসার যিনি পূর্ব অভিজ্ঞতা ছাড়াই সিবিআইয়ের শীর্ষ পদে বসেছিলেন।
Read full story in English