নজিরবিহীন পদক্ষেপের ইঙ্গিত মোদী সরকারের।
দেশজুড়ে ৩১ মার্চ পর্যন্ত 'লকডাউনের' সুপারিশ করল কেন্দ্রীয় সরকার। তবে, এ বিষয়ে চূড়ান্ত সব সিন্ধান্ত নেবে রাজ্য সরকারগুলিই। উল্লেখিত সময়কালের মধ্যে সবরকম অ-জরুরি পরিষেবা ও যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধের সুপারিশ করা হয়েছে। দেশের যে ৭৫টি জেলায় ইতিমধ্যে করোনা আক্রান্তেরা নিশ্চিত হয়েছেন সেই জেলাগুলিতে বিশেষ করে এই সুপারিশ বলবৎ করতে বলা হয়েছে। এর বাইরে স্থানীয় পরিস্থিতি বিবেচনা করে রাজ্যগুলি জেলার সংখ্যা বাড়াতেও পারে।
কেন্দ্র জানিয়ে দিয়েছে, মালবাহী ট্রেন ছাড়া সবধরণের যাত্রীবাহী ট্রেন (লোকাল ট্রেন সহ) ৩১ মার্চ পর্যন্ত চলবে না। সড়ক পথে যানবাহন চলাচলের ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপের সুপারিশ হয়েছে। ৩১শে মার্চ পর্যন্ত চলবে না কোনও মেট্রো রেলও।
রবিবার সব রাজ্যের মুখ্য সচিবদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় ক্যাবিনেট সচিব ও প্রধানমন্ত্রীর দফতরের প্রধান সচিবের বৈঠক হয়। সেখানেই মুখ্য সচিবরা জানান, প্রধানমন্ত্রী মোদী ডাকে জনতা কার্ফুতে দেশবাসী স্বতঃস্ফূর্তভাবে সাড় দিয়েছে। এই বৈঠকেই দেশজুড়ে ৩১ মার্চ পর্যন্ত 'লকডাউনের' সুপারিশ করে কেন্দ্রীয় সরকার।
এদিনের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় যে, আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত দেশে সব ধরনের যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে রেলমন্ত্রক। ২২ মার্চ রাত পর্যন্ত গুটি কয়েক লোকাল ও কলকাতা মেট্রো চললেও সোমবার থেকে সেগুলিও বন্ধ করে দেওয়া হবে। ৭৫ জেলায় 'লকডাউনে'র নির্দেশ জারি করবে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারগুলি। বন্ধ থাকবে আন্তঃরাজ্য সব ধরনের যাত্রী পরিষেবাও।
পরিস্থিতি বিচারে ইতিমধ্যেই সোমবার থেকে লকডাইনের ঘোষণা করেছে পাঞ্জাব সরকার। ওডিশার পাঁচ জেলাতেও লকডাউনের কথা জানানো হয় শনিবার।
আগেই দূরপাল্লার ট্রেন বন্ধের দাবি তুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, করোনা আক্রান্ত বেশ কয়েকটি রাজ্য থেকে বাংলায় যাত্রীবাহী ট্রেন প্রবেশ করছে। স্বাস্থ্য পরীক্ষা না করেই এরাজ্যে পাঠানো হচ্ছে লোকজনকে। বার বার বলা সত্ত্বেও ট্রেন চলাচলে লাগামও টানা হয়নি। যার ফলে করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে। তাই দূরপাল্লার ট্রেন বন্ধের দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী। বিদেশিদের মতোই ভিন রাজ্য থেকে বাংলায় আসা লোকজনকেও চোদ্দ দিন বাড়ির বাইরে না বেরোতে আর্জি জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলে হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি শনিবারই বলেছিলেন, ‘ট্রেন বন্ধের দাবি না শুনলে রাজ্যের বাইরেই ট্রেন আটকে দেওয়া হবে।’ পরে রেলকে চিঠি দিয়ে মুখ্য সচিব জানিয়ে দেন, ভিন রাজ্য থেকে বাংলায় ট্রেন প্রবেশ করতে পারবে না।
কেন্দ্রীয় সুপারিশ কী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গ্রহণ করবেন? করোনা ভীতির আবহে এখন সেদিকেই নজর।