অর্থ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে বুধবার এক লিখিত বিবৃতিতে জানানো হয়েছে “শীর্ষ ব্যাঙ্কের স্বশাসনের অধিকার থাকা জরুরি। তবে কেন্দ্রের সঙ্গে শীর্ষ ব্যাঙ্কের নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে। আর্থিক সমস্যা এলে তার সম্ভাব্য সমাধান নিয়েও নিয়মিত আলোচনা হয় সরকার এবং শীর্ষ ব্যাঙ্কের”। কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক এবং সরকারের মধ্যে মতের পার্থক্য, বাদানুবাদ প্রকাশ্যে আসছিল ক্রমশ। বুধবারের আলোচনার পর আরবিআই-এর প্রতি সুর অনেকটাই নরম করেছে কেন্দ্র। তবে সুত্রের খবর অনুযায়ী ১৯৩৪ এর আরবিআই আইনের ৭ নম্বর ধারা সংক্রান্ত কিছু নির্দেশ কেন্দ্র থেকে জারি করার চেষ্টা চলছে পরোক্ষ ভাবে।
ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের ডেপুটি গভর্নর সরকারি হস্তক্ষেপ নিয়ে জনসমক্ষে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এক ভাষণে। বিরল আচার্য বলেন, কেন্দ্র আরবিআই-এর স্বাধীনতা খর্ব করার চেষ্টা করছে। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী চিদাম্বরম বলেন, কেন্দ্র এবং আরবিআই -এর মতোনৈক্য সকলের সামনে না এনে মিটিয়ে নেওয়াই শ্রেয়।
আরও পড়ুন, ব্যাঙ্কগুলো যখন যাকে তাকে ঋণ দিচ্ছিল, আরবিআই-এর চোখ কোন দিকে ছিল?: জেটলি
এই ঘটনার পরপর অর্থ মন্ত্রকের তরফ থেকে সাংবাদিক বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, “আরবিআই আইন অনুসারে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের স্বশাসনের অধিকার রয়েছে। ভারত সরকার এই অধিকারকে সম্মান করে। কেন্দ্র এবং আরবিআই উভয়েই মানুষের স্বার্থ রক্ষার জন্য কাজ করে চলেছে”।
এতদিন পর্যন্ত দেশের আর্থিক নীতি সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয় নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারত কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক। ব্যাঙ্ক রেট কত হবে, কীরকম হবে, সব সিদ্ধান্ত কেন্দ্রের সঙ্গে আলোচনা না করেই নেওয়ার ক্ষমতা ছিল শীর্ষ ব্যাঙ্কের। আরবিআই আইনের ৭ নম্বর ধারা সেই অধিকার কিছুটা হলেও খর্ব করে। এই ধারা বলে, কেন্দ্রের পক্ষ থেকে সময়ে সময়ে আরবিআই-এর ওপর নির্দেশ জারি করা যেতেই পারে। কিন্তু বুধ বারের কেন্দ্রের বিবৃতিতে এক বারও উল্লেখ করা হয়নি ৭ নম্বর ধারার কথা।
রাজনীতি মহলে বিগত কয়েক দিন কেন্দ্র-আরবিআই তরজা নিয়ে জোর আলোচনা হয়েছে। ‘ইউএস-ইন্ডিয়া স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপ ফোরাম’ আয়োজিত ইন্ডিয়া লিডারশিপ সামিটে জেটলি বলেন, “২০০৮ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে সারা বিশ্ব জুড়ে ষখন আর্থিক সঙ্কটের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, অর্থনীতিকে কৃত্রিম ভাবে সচল রাখার জন্য ব্যাঙ্কগুলোকে বলা হয়েছিল যত খুশি ঋণ দিতে। তখন চোখ অন্যদিকে সরিয়ে রেখেছিল আরবিআই”।
কিন্তু এই ঘটনার পর পর কেন্দ্র থেকে যে বিবৃতি দেওয়া হল, তাতে স্পষ্ট, কেন্দ্র তার সুর নরম করেছে। কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ নিয়ে যে বিরক্তি তৈরি হয়েছিল শীর্ষ ব্যাঙ্কের প্রশাসনিক মহলে, তা প্রশমিত করতে তৎক্ষণাৎ বিবৃতিতে জোর দেওয়া হয় 'স্বশাসন' এবং 'জনস্বার্থ' এই দুই বিষয়ে।
Read the full story in English