শুক্রবার দেশব্যাপী লকডাউন আরও দু'সপ্তাহ বাড়ানোর কথা ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক - লকডাউনের নতুন মেয়াদ আপাতত ১৭ মে, সোমবার পর্যন্ত। আজ সন্ধ্যায় একটি লিখিত নির্দেশ জারি করে মন্ত্রকের তরফে বলা হয়েছে, "সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে, এবং লকডাউনের ফলে Covid-19 পরিস্থিতিতে উল্লেখযোগ্য উন্নতি হওয়ায়, সরকার লকডাউনের মেয়াদ আরও বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।"
স্বাস্থ্যমন্ত্রকের দেওয়া সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা আপাতত ৪০,২৬৩, মৃত্যু হয়েছে ১,৩০৬ জনের। গত ২৪ ঘণ্টায় ২,৪৮৭ জন আক্রান্ত হয়েছেন, মৃত্যু হয়েছে ৭২ জনের, জানিয়েছে স্বাস্থ্যমন্ত্রক।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে আরও জানানো হয়েছে যে রেড, অরেঞ্জ, বা গ্রীন জোন নির্বিশেষে নির্দিষ্ট সংখ্যক কার্যকলাপের ওপর সারা দেশ জুড়ে এখনও নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে। এগুলির মধ্যে রয়েছে বিমান, রেল, ও মেট্রোতে সফর, এবং আন্তঃরাজ্য সড়ক পরিবহণ; এবং স্কুল, কলেজ, ও অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা প্রশিক্ষণ/ কোচিং সেন্টার।
আরও পড়ুন: বিশ্বে করোনা পজিটিভ আক্রান্তে সবার নীচে ভারতে
* বিমান, রেল, মেট্রো, এবং আন্তঃরাজ্য সড়ক যাত্রা
* স্কুল, কলেজ, এবং অন্যান্য শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, বা কোচিং কেন্দ্র
* হোটেল এবং রেস্তোরাঁর মতো অতিথি পরিষেবা
* সাধারণভাবে জন সমাবেশ হয় যেসব স্থানে, যেমন সিনেমা হল, শপিং মল, জিম, স্পোর্টস কমপ্লেক্স
* যে কোনও সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, এবং অন্যান্য এই ধরনের সমাবেশ
* ধর্মীয় স্থান, এবং জনসাধারণের উপাসনার যে কোনও স্থান
তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অনুমতি সাপেক্ষে আকাশ, রেল, বা সড়কপথে যাত্রা করা যাবে, প্রয়োজনের গুরুত্ব বুঝে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের নির্দেশে "জনসাধারণের সুরক্ষা এবং কল্যাণের" স্বার্থেও কিছু পদক্ষেপের সুপারিশ করা হয়েছে।
নির্দেশে বলা হয়েছে যে প্রত্যেক জোনে অদরকারী কাজের জন্য সন্ধ্যে সাতটা থেকে সকাল সাতটা পর্যন্ত যাতায়াত কঠোরভাবে নিষিদ্ধ থাকবে। এ ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করার নির্দেশ জারি করবে, এবং কড়াভাবে তা বলবৎ করবে।
প্রতিটি জোনেই ৬৫ বছরের বেশি বয়সীরা, Covid-19 ছাড়া পার্শ্বরোগ আছে এমন ব্যক্তি, অন্তঃসত্ত্বা মহিলা এবং ১০ বছরের কম বয়সী শিশুরা বাড়িতে থাকবেন, যদি না অত্যাবশ্যকীয় প্রয়োজন বা স্বাস্থ্য সংক্রান্ত প্রয়োজন হয়।
রেড, অরেঞ্জ, ও গ্রীন জোনে সামাজিক দূরত্ব-বিধি এবং অন্যান্য প্রতিষেধক ব্যবস্থা মেনে আউট পেশেন্ট ডিপার্টমেন্ট (ওপিডি) এবং মেডিক্যাল ক্লিনিক চালু রাখা যাবে। তবে কন্টেইনমেন্ট জোনের ক্ষেত্রে এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে না।
আরও পড়ুন: ‘কথা রাখলেন’ মমতা, সোমবারই বাংলার উদ্দেশে বিশেষ ট্রেনে রওনা দিচ্ছেন ২৫০০ জন
রেড জোনে যা অনুমোদিত নয়
* সাইকেল রিকশা এবং অটোরিকশা চলাচল
* ট্যাক্সি এবং অ্যাপ ক্যাব চলাচল
* জেলার ভেতরে এবং আন্তঃজেলা বাস চলাচল
* নাপিতের দোকান, স্পা, এবং সেলুন
রেড জোনে যা যা অনুমোদিত
* শুধুমাত্র অনুমোদিত কাজের ক্ষেত্রেই জনসাধারণ বা যানবাহনের চলাচলের অনুমতি দেওয়া হবে, যাতে চার-চাকার গাড়িতে চালক ছাড়াও আরও দু'জন থাকতে পারবেন, তবে দু-চাকার গাড়িতে পিলিয়ন রাইডার বা দ্বিতীয় ব্যক্তি থাকতে পারবেন না
* শহরাঞ্চলে শিল্প উৎপাদন কেন্দ্র - স্পেশাল ইকনমিক জোন, এক্সপোর্ট ওরিয়েন্টেড ইউনিট, শিল্পাঞ্চল, এবং ইন্ডাস্ট্রিয়াল এস্টেট যেখানে অ্যাক্সেস কন্ট্রোল বজায় থাকবে
* অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের উৎপাদন কেন্দ্র, যার মধ্যে পড়বে ওষুধ, অন্যান্য ফার্মাসিউটিক্যাল সামগ্রী বা সরঞ্জাম, সেগুলির জন্য কাঁচা মাল এবং অন্যান্য অন্তর্বর্তী সরঞ্জাম; যেসব উৎপাদন কেন্দ্রে একটানা উৎপাদনের প্রয়োজন, এবং তাদের সরবরাহ শৃঙ্খল; তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রের জন্য হার্ডওয়্যার উৎপাদন; চটশিল্পের ক্ষেত্রে শিফট এবং সামাজিক দূরত্ব-বিধি মেনে উৎপাদন; এবং প্যাকেজিং মেটিরিয়াল-এর উৎপাদন
* শহরাঞ্চলে নির্মাণের কাজ চলতে পারবে শুধুমাত্র সেইসব স্থানে যেখানে শ্রমিকরা বাইরে থেকে আসবেন না; এবং নবায়নযোগ্য শক্তি বা রিনিউয়েবল এনার্জি প্রকল্প
* শহরাঞ্চলে শপিং মল, বাজার এবং মার্কেট কমপ্লেক্সে অত্যাবশ্যকীয় নয় এমন দোকানপাট খোলা রাখা যাবে না
* গ্রামাঞ্চলে সমস্ত শিল্প ও নির্মাণের কাজ, মনরেগা (MNREGA)-র কাজ সমেত, খাদ্য-প্রক্রিয়াকরণ ইউনিট, এবং ইট ভাটা
* গ্রামাঞ্চলে শপিং মল ছাড়া সমস্ত এলাকায় দোকান খোলা থাকতে পারে
* সবরকমের কৃষিকাজ - বীজ বপন, ফসল কাটা, শস্য সংগ্রহ, এবং কৃষিপণ্য সরবরাহ শৃঙ্খল চালু থাকবে
* মৎস্য চাষ সমেত সবরকমের পশুপালন অনুমোদিত
* সমস্ত রকমের বাগানের কাজ, তাদের বিপণন এবং প্রক্রিয়াকরণ
* সমস্ত স্বাস্থ্য পরিষেবা (AYUSH সহ), এবং চিকিৎসা কর্মী ও রোগীদের এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে যাতায়াত
* আর্থিক ক্ষেত্রে মোটের ওপর সচল থাকবে। এর আওতায় আসছে ব্যাঙ্ক, নন-ব্যাঙ্কিং ফিনান্স সংস্থা, বীমা এবং ক্যাপিটাল মার্কেটের কাজ, এবং ক্রেডিট সমবায় সমিতি
* শিশু, সিনিয়র সিটিজেন, দরিদ্র, মহিলা এবং বিধবাদের জন্য হোম-এর পরিচালনা
* আঙ্গনওয়াড়ির পরিচালনা
* বিদ্যুৎ, জল, সাফাই, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা; টেলি যোগাযোগ এবং ইন্টারনেট
* কুরিয়ার ও ডাক পরিষেবা
* ই-কমার্স পরিষেবা, তবে শুধুমাত্র অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের ক্ষেত্রে
* বেসরকারি অফিসে ৩৩ শতাংশ প্রয়োজন কর্মী হাজিরা দিতে পারবেন
* শহরাঞ্চলে সমস্ত একক দোকান, পাড়ার দোকান, এবং আবাসিক প্রকল্পের ভেতরে অবস্থিত দোকান, প্রয়োজনীয়-অপ্রয়োজনীয় পণ্য নির্বিশেষে
* সরকারি অফিসে ডেপুটি সেক্রেটারি এবং উচ্চতর পদাধিকারীদের উপস্থিতি আবশ্যক, বাকি কর্মীরা ৩৩ শতাংশ পর্যন্ত হাজির থাকতে পারেন, প্রয়োজন বুঝে। নিরাপত্তা এবং প্রতিরক্ষা পরিষেবা, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ, পুলিশ, জেলখানা, হোম গার্ড, অসামরিক প্রতিরক্ষা, দমকল ও জরুরি পরিষেবা, বিপর্যয় মোকাবিলা ও সংশ্লিষ্ট পরিষেবা, ন্যাশনাল ইনফরম্যাটিকস সেন্টার, শুল্ক, ফুড কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া, ন্যাশনাল ক্যাডেট কর্পস, নেহরু যুবক কেন্দ্র এবং পুর পরিষেবার ওপর কোনও নিষেধাজ্ঞা থাকবে না; গণ পরিষেবা নিশ্চিত করা হবে এবং এর জন্য প্রয়োজনীয় কর্মী মোতায়েন হবেন * সবরকমের সংবাদ মাধ্যম, তথ্যপ্রযুক্তি ও সংশ্লিষ্ট পরিষেবা, ডেটা ও কল সেন্টার, কোল্ড স্টোরেজ এবং গুদামঘর, বেসরকারি নিরাপত্তা ও তার সঙ্গে যুক্ত পরিষেবা
অরেঞ্জ জোনে কী কী অনুমোদিত
রেড জোনে অনুমোদিত কার্যকলাপ ছাড়াও নিম্নলিখিত ছাড় দেওয়া হবে অরেঞ্জ জোনের ক্ষেত্রে
* ট্যাক্সি এবং অ্যাপ ক্যাব চলতে পারবে, একজন চালক এবং একজন যাত্রী নিয়ে
* অনুমোদিত কার্যকলাপের জন্য ব্যক্তিসাধারণ ও যানবাহনের আন্তঃজেলা যাতায়াত
* চার-চাকার গাড়িতে চালক ছাড়াও আরও দু'জন থাকতে পারবেন, দু-চাকার গাড়িতে পিলিয়ন রাইডার বা দ্বিতীয় ব্যক্তি থাকতে পারবেন
গ্রীন জোনে যা যা অনুমোদিত
জোন নির্বিশেষে যা যা কার্যকলাপ সারা দেশেই নিষিদ্ধ, সেগুলি ছাড়া আর সবই অনুমোদিত। বাস চলতে পারে, তবে ৫০ শতাংশের বেশি সিট ভরা চলবে না, বাস ডিপোগুলিও ৫০ শতাংশের বেশি ভরা থাকবে না
আরও পড়ুন: ক্লাসঘর থেকে রান্নাঘর, করোনায় গোষ্ঠী হেঁশেলে ছাত্রদল
দেশব্যাপী কর্মস্থলের ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত নির্দেশিকা জারি হয়েছে
* সমস্ত কর্মস্থলে মুখ ঢেকে রাখতে হবে, এবং মুখ ঢাকার উপকরণ কর্মস্থলে মজুত থাকতে হবে
* কর্মস্থলের দায়িত্বে আছেন যাঁরা, তাঁরা সামাজিক দূরত্ব-বিধি বলবৎ করবেন, কাজের জায়গায়, এবং কোম্পানির যানবাহনেও। শিফটে কাজ করা হলে দুটি শিফটের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করার মতো যথেষ্ট সময় দিতে হবে, একসঙ্গে সকলের খেতে যাওয়া চলবে না, ইত্যাদি
* থার্মাল স্ক্যানিং, হ্যান্ডওয়াশ, এবং স্যানিটাইজার (যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে চলনা করা জায়)-এর ব্যবস্থা করতে হবে সমস্ত প্রবেশ এবং নির্গমন এলাকায়। এছাড়াও কর্মস্থলে পর্যাপ্ত পরিমাণে হ্যান্ডওয়াশ এবং স্যানিটাইজার মজুত রাখতে হবে
* কর্মস্থলের নিয়মিত স্যানিটাইজেশন, এবং দরজার হাতলের মতো সকলের ব্যবহৃত জিনিসের জীবাণুমুক্তি আবশ্যক, বিশেষ করে দুই শিফটের অন্তর্বর্তী সময়ে
* সরকারি এবং বেসরকারি সমস্ত কর্মীর জন্য আরোগ্য সেতু অ্যাপ-এর ব্যবহার বাধ্যতামূলক হবে। সংস্থার কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব হবে সমস্ত কর্মী যাতে এই অ্যাপ ব্যবহার করেন, তা নিশ্চিত করা
* বেশি লোকের বৈঠক এড়িয়ে চলতে হবে
* কর্মস্থলের কাছাকাছি COVID-19 রোগীদের চিকিৎসা হয় এমন হাসপাতাল/ক্লিনিকের তালিকা হাতের কাছে রাখতে হবে। কোনও কর্মীর COVID-19 এর উপসর্গ দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে পরীক্ষার জন্য পাঠাতে হবে। এইসব কর্মীদের ক্ষেত্রে তাঁরা চিকিৎসা কেন্দ্রে না যাওয়া পর্যন্ত কোয়ারান্টিন এবং আইসোলেশন-এর ব্যবস্থা করতে হবে
* ব্যক্তিগত বা গণ পরিবহণের সুবিধা না থাকলে সামাজিক দূরত্ব মেনে যানবাহনের ব্যবস্থা রাখতে হবে
* স্বাস্থ্যবিধি সংক্রান্ত তথ্য আদানপ্রদান এবং প্রশিক্ষণের ওপর জোর দিতে হবে
'পাবলিক প্লেস' বা প্রকাশ্য জনসমাগম হয় এমন স্থানের ক্ষেত্রে দেশব্যাপী নির্দেশিকায় বলা হয়েছে:
* সমস্ত প্রকাশ্য স্থানে মুখ ঢেকে রাখা বাধ্যতামূলক
* এইসব স্থান এবং যানবাহনের দায়িত্বে যাঁরা, তাঁরা স্বাস্থ্য ও সমাজ কল্যাণ মন্ত্রক দ্বারা জারি করা বিধি মেনে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করবেন
* কোনও 'পাবলিক প্লেস'-এর দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা বা ব্যক্তি পাঁচজন বা তার বেশি ব্যক্তির সমাবেশের অনুমতি দেবেন না
* বিয়েবাড়ি এবং সেই সম্পর্কিত সমাবেশে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে, এবং সর্বাধিক অতিথি সংখ্যা ৫০-এর বেশি হবে না
* অন্ত্যেষ্টি এবং সৎকারের ক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে, এবং সর্বাধিক অতিথি সংখ্যা ২০-র বেশি হবে না
* প্রকাশ্য স্থানে থুথু ফেললে জরিমানা হবে, যার পরিমাণ নির্ধারণ করবে রাজ্য/কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল প্রশাসন
* প্রকাশ্য স্থানে মদ, পান, গুটখা, তামাক সেবন নিষিদ্ধ
* মদ, পান, গুটখা, তামাক ইত্যাদির দোকানে গ্রাহকদের মধ্যে ছয় ফুট (দুই গজ) দূরত্ব রাখতে হবে, এবং দোকানে কোনও এক সময় পাঁচজনের বেশি উপস্থিত থাকতে পারবেন না
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের নির্দেশে বলা হয়েছে যে জোন নির্বিশেষে পণ্যবাহী যান চলাচলের অনুমতি রয়েছে। লিখিতভাবে যা বলা হয়েছে তার মর্মার্থ: "কোনও রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল দেশের ভেতরে বা পড়শি রাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তির আওতাধীন সীমান্ত-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কোনোরকম নিষেধাজ্ঞা জারি করবে না। এই যাতায়াতের জন্য কোনও আলাদা পাস-এর প্রয়োজন নেই, যেহেতু লকডাউন চলাকালীন দেশজুড়ে পণ্য সরবরাহ শৃঙ্খল বজায় রাখার জন্য এই যাতায়াত আবশ্যক।"
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন