আমেরিকার আকাশে মার্কিন স্পাই বেলুন নিয়ে রীতিমত আতঙ্ক ছড়িয়েছে। একাধিক রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে ভারতসহ একাধিক দেশকে ‘টার্গেট’, চিনের ‘স্পাই বেলুন’। নিয়ে বড়সড় তথ্য ফাঁস। ওয়াশিংটন পোস্ট দাবি করেছে জাপান, ভারত, ভিয়েতনাম, তাইওয়ান এবং ফিলিপাইন সহ বেশ কয়েকটি দেশের ওপর চিন নজরদারি চালাতে এই স্পাই বেলুনের ব্যবহার করেছে। ওয়াশিংটন পোস্ট আরও দাবি করেছে চিনের সঙ্গে যে সকল দেশের সংঘাত রয়েছে সেই সকল দেশের সামরিক ও প্রযুক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নেওয়া এবং তার ওপর ক্রমাগত মনিটরিং করতে এই স্পাই বেলুনের ব্যবহার করেছে চিন। এই রিপোর্ট সামনে আসার পরই আন্দামার নিকোবরেও চিনা স্পাই বেলুন! রিপোর্ট ঘিরে চাঞ্চল্য।
বেলুনের সাহায্যে ভারতের উপরও নজরদারি চালিয়েছিল চিন? গত বছর আন্দামানের আকাশে স্পাই বেলুনের দেখা মেলে বলেই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। সম্প্রতি প্রকাশিত এই রিপোর্টকে ঘিরে তৈরি হয়েছে চাঞ্চল্য। সূত্রের খবর, হঠাৎ বিশাল আকৃতির বেলুনটিকে দেখে আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের মানুষজন বাইরে বেরিয়ে আসেন। উড়ন্ত বেলুনের ছবি ক্যামেরা বন্দিও করেন তাঁরা। তবে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করার আগেই সেটি আদৃশ্য হয়ে যায়।
ভারতীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রকও বিষয়টির ওপর কড়া নজর রেখে চলেছে। এবার এই ধরণের গুপ্তচরবৃত্তি বন্ধ করতে প্রটোকল জারি করেছে প্রতিরক্ষামন্ত্রক। উল্লেখ্য আমেরিকার উপর নজরদারি চালাতেই 'বেজিং' বেলুনটি পাঠায় বলে দাবি করে হোয়াইট হাউস। এই নিয়ে চিনকে কড়া বার্তাও দেয় বাইডেন প্রশাসন। যদিও চিন তা অস্বীকার করে। তবে এই ঘটনার পর নিরাপত্তা ব্যবস্থায় আর কোনরকমের ঘাটতি রাখতে রাজি নয় প্রতিরক্ষামন্ত্রক।
"স্যাটেলাইট বা র্যাডারগুলিকে আপগ্রেড করা হচ্ছে, যাতে সহজেই এই ধরণের গুপ্তচরবৃত্তি অবিলম্বে রুখে দেওয়া যায়” ভারতীয় সেনাবাহিনীর এক উর্ধ্বতন আধিকারিক এমনটাই জানিয়েছে। আন্দামানের আকাশে স্পাই বেলুন দেখা দেওয়ার পরই নতুন প্রোটোকলগুলি তৈরি করা হয়েছে, যদিও সেই সময়ে এর উত্স নিশ্চিত করা যায়নি। ব্লুমবার্গের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনী পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগেই বস্তুটি সমুদ্রের উপর দিয়ে দ্রুত চলে যায় বলেই খবর।
গত মাসে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি 'দৈত্যাকার চিনা বেলুনকে' গুলি করে নামায়। আমেরিকার তরফে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ আনা হয়। যদিও চিন এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং বলেছে যে এটি একটি আবহাওয়া সম্পর্কিত নানান দিক গবেষণার কাজে ব্যবহার করা হয়েছি। গত মাসে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডা সীমান্তে চিনের নজরদারি বেলুন ব্যবহার এবং ভারতের বিরুদ্ধে এই ধরনের কৌশলের সম্ভাবনা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে, সেনাপ্রধান জেনারেল মনোজ পান্ডে বলেছিলেন, 'দেশকে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে। এই ধরণের ঘটনা থেকে শিক্ষা নিতে হবে। সীমান্তে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করা হচ্ছে। আমাদের সেনাবাহিনী যে কোন ধরণের নাশকতা রুখতে সব সময়ের জন্যই তৈরি'।
ভারতীয় সেনার এক কর্মকর্তা বলেছেন, 'মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যার কাছে সবচেয়ে উন্নত সামরিক প্রযুক্তি এবং সরঞ্জাম রয়েছে, তারাও প্রথমে এই ধরণের স্পাই বেলুনগুলি সনাক্ত করতে ব্যর্থ হয়। তার অন্যতম কারণ ফাইটার প্লেন বা মিসাইলের তুলনায় এ ধরনের জিনিস র্যাডারে ধরা পড়ে না। স্যাটেলাইট বা র্যাডার বেলুন সনাক্ত করতে পারে না কারণ বেলুনগুলি খুব ধীর গতিতে চলে। এখন এই ধরনের 'বায়বীয় বস্তু শনাক্ত' করার জন্য সীমান্তে র্যাডার আপগ্রেড করা হচ্ছে'।