'তথ্য' ঘিরে বিভ্রান্তি। মন্ত্রীর দাবি এক, সরকারি পরিসংখ্যান বলছে অন্য কথা। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে প্রতিমন্ত্রী জি কিষান রেড্ডি এই দাবি করেন। কিন্তু, সরকারি তথ্যে প্রকাশ অগাস্টের ৫ তারিখের পর থেকে সামান্য হলেও উপত্যকায় বেড়েছে পাথর ছোঁড়ার মত ঘটনার হার।
রাজস্থানের বিজেপি সাংসদ করণ মাল কাটারার এক লিখিত প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জি কিষাণ রেড্ডি লোকসভায় বলেন, '৫-ই অগাস্ট ২০১৯ থেকে ১৫-ই নভেম্বর ২০১৯ পর্যন্ত পাথর ছোঁড়া, আইন-শৃঙ্খলা ভঙ্গের মত অপরাধে ১৯০টি মামলা হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে ৭৬৫ জনকে। চলতি বছরের শুররুর দিন থেকে অগাস্টের ৪ তারিখ পর্যন্ত এই ধরণের অপরাধের জন্য ৩৬১-টি মামলা দায়ের হয়েছিল।' তবে, এই পরিসংখ্যানের মধ্যে ভারতীয় দণ্ডবিধির অপরাধ আইন ও জন নিরাপত্তা আইনে ধৃতদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
আরও পড়ুন: ফারুক আবদুল্লার বিরুদ্ধে জননিরাপত্তা আইন: ২৭অভিযোগ, ৩ এফআইআর
সাংসদ করণ মাল কাটারার প্রশ্ন ছিল, জম্মু-কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বিলোপের পর থেকে কী উপত্যকায় পাথর ছোঁড়ার মত ঘটনা কমেছে? জবাবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, 'হ্যাঁ, কমেছে।' তবে সরকারি তথ্য খতিয়ে দেখলে মন্ত্রীর দাবির ঠিক উল্টো ছবি ধরা পড়বে। সরকারি তথ্যে প্রকাশ, ২০১৯ সালের ১-লা জানুয়ারি থেকে ৪-ঠা অগাস্ট পর্যন্ত প্রতি মাসে গড়ে ৫০টি পাথর ছোঁড়া, আইন-শৃঙ্খলা ভঙ্গের মত ঘটনা ঘটতো। কিন্তু ৩৭০ ধারা বিলোপের পর সেই সংখ্যা বেড়ে হয়েছে প্রতি মাসে ৫৫।
ভূস্বর্গ থেকে ৩৭০ ধারা বিলোপের পর পাথর ছোঁড়া বা আইন-শৃঙ্খালা ভঙ্গের কোনও বড় ঘটনা ঘটেছে বলে এর আগে মানতে রাজি-ই ছিল না কেন্দ্রীয় সরকার।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দাবি, পাথর ছোঁড়ারর মত ঘটনা রুখতে সরকার একাধিক পদক্ষেপ করেছে। তাঁর কথায় 'এই ধরনের অপরাধ কমানোর জন্য 'গোলযোগকারী, উস্কানিদাতাদের চিহ্নিত করা হয়েছে ও জন নিরাপত্তা আইন সহ নানান প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা প্রয়োগ করা হয়েছে। এতেই অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়ানো গিয়েছে।' তাঁর সংযোজন, 'তদন্তেই উঠে এসেছে, পাথর ছোঁড়া সহ নানা অপরাধমূলক কার্যক্রমের সঙ্গে বিচ্ছিন্নতাবাদীরা যুক্ত ছিল। এরা প্রায় প্রত্যেকেই হুরিয়তের মদতপুষ্ট। সন্ত্রাসবাদীদের অর্থ সহায়তার জন্য এনআইএ ১৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছে।'
গত অগস্টের ৫ তারিখ উপত্যকা থেকে ৩৭০ অবলুপ্রতির ঘোষণা করে কেন্দ্র। রাজ্যকে দুটি কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলে ভাগ করা হবে বলে জানানো হয়। এরপর থেকেই রাজ্যের তিন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লা, ওমর আবদুল্লা ও মেহেবুবা মুফতিকে বন্দি করা হয়। গ্রেফতার করা হয় ন্যাশনাল কমফারেন্স, পিডিপি সহ জম্মু-কাশ্মীরের বহু নেতা ও রাজনৈতিক দলের কর্মীদের। উপত্যাকার নিরাপতাতর সেখানে বাড়তি সেনা, আদা সেনা মোতায়েন করা হয়। জম্মু-কাশ্মীরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি বিরোধী দলের নেতাদের।
Read the full story in English