ফ্রান্সে পুলিশের হাতে খুন হন ১৭ বছরের এক কিশোর। ওই কিশোরকে গুলি করে হত্যার ঘটনার পর থেকেই দেশ জুড়ে শুরু হয় হিংসা। সেই হিংসা যেন থামার নামই হচ্ছে না। এদিকে দেশে শান্তির আবেদন জানিয়েছেন নিহত নাহেল এম এর দিদিমা। নাদিয়া বিএফএমটিভিকে বলেন, 'বর্তমানে যারা ভাঙচুর চালাচ্ছে, দেশে দাঙ্গা ছড়াচ্ছে তাদের বলতে চাই, থামুন!' ওই বৃদ্ধা আরও বলেন, যারা দেশে দাঙ্গা সৃষ্টি করছেন তারা নাহেলকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করছে। উত্তর আফ্রিকান বংশোদ্ভূত এক কিশোরের গুলি করে মৃত্যুর প্রতিবাদে জ্বলে ওঠে ফ্রান্স। বর্ণবাদের বিরুদ্ধে অভিযোগকে ফের পুনরুজ্জীবিত করেছে এই হত্যার ঘটনা।
ওই যুবকের দিদিমার কাতর আর্জি, এভাবে সরকারি সম্পত্তিকে নষ্ট করবেন না। গাড়ি, স্কুল, বাস কে জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে তারা তো আপনাদের কোন ক্ষতি করে নি। নাহেলের হত্যা তার মায়ের জন্য একটি বড় আঘাত। তারা শুধু ন্যায় বিচার চান বলেই জানিয়েছেন ওই মহিলা। তিনি আরও বলেন , 'বিচার বিভাগের ওপর আমার পূর্ণ আস্থা আছে। যে পুলিশ গুলি চালিয়েছে তাকে মূল্য দিতে হবে। পুরো পুলিশ বাহিনীর প্রতি আমার কোন অভিযোগ নেই”। ফ্রান্সে রবিবার ভোর পর্যন্ত হিংসার ঘটনায় তিন হাজারের বেশি মানুষকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
যুবককে গুলি করে হত্যার ঘটনা দেশকে নাড়িয়ে দিয়েছে। নাহেলের মৃত্যু প্যারিসের শহরতলিতে ক্ষোভের আঁচ ছড়িয়ে দেয়। উত্তর প্যারিসের কাছে বিক্ষোভকারীরা আতশবাজি জ্বালিয়ে ব্যারিকেডে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। বিক্ষোভকারীদের নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে। বিক্ষোভকারীরা গভীর রাতে হে-লেস-রোজেসের শহরতলিতে মেয়রের বাসভবন লক্ষ্য করে হামলা চালায়।
ফ্রান্সে বিক্ষোভকারীরা বেশ কয়েকটি স্কুল, পুলিশ স্টেশন, টাউন হল এবং স্টোর ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে, তবে মেয়রের বাসভবনে হামলার ঘটনা এই প্রথম। মেয়র ভিনসেন্ট জিনব্রুন বলেছেন, রাত দেড়টার দিকে হামলায় তার স্ত্রী এবং তাদের সন্তানরা আহত হয়েছে্ন। হামলার সময় তার পরিবারের সদস্যরা বাড়িতে ঘুমাচ্ছিলেন এবং তিনি টাউন হলে হিংসার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছিলেন। হিংসার ঘটনায় মেয়র জরুরি অবস্থা জারি করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।