আসন্ন গুজরাটের ভোট। তার আগেই প্রতিবেশী পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে ভারতে আগত অ-মুসলমানদের এ দেশের নাগরিকত্ব দেওয়ার ঘোষণা করল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। সোমবারই জারি হয়েছে বিজ্ঞপ্তি। তবে আপাতত, গুজরাটের দুই জেলা- মেহসানা ও আনন্দেই এই নাগরিকত্ব প্রদান কার্যকর হবে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে মেহসানা ও আনন্দ জেলার জেলাশাসকদের কাছে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে তাঁরা, পাকিস্তান আফগানিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে এই দুই জেলায় আগত (২০১৪ সালের ৩১শে ডিসেম্বর পর্যন্ত) হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন, শিখ, খ্রীষ্টান ও পার্শিদের আবেদনের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব দিতে পারেন।
কেন্দ্রীয় বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ, '১৯৫৫সালের নাগরিকত্ব আইনের ১৬ নম্বর ধারা ও ২০০৯ সালের নিয়ম অনুসারে এই নাগরিকত্ব প্রদান করা হবে। ১৯৫৫ নাগরিকত্ব আইনের এর অধীনে ৬ নং ধারা অনুযায়ী নাগরিকরা সংশাপত্র পাবেন। আফগানিস্তান, বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানের সংখ্যালঘু অ-মুসলমান ৬ সম্পদায়ের মানুষ যেমন, হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্শি এবং খ্রিস্টান যারা এদেশের গুজরাট রাজ্যের আনন্দ এবং মেহসানা জেলায় বসবাসকারী, তাঁদের ওই দুই জেলার কালেক্টরনাগরিকত্ব প্রদান করবেন।'
বিজ্ঞপ্তিতে কিছু নিয়মের কথাও বলা হয়েছে। যেমন- আবেদন অনলাইনে করতে হবে। আবেদনের যাচাইকরণ করা হবে জেলা স্তরে কালেক্টর দ্বারা। অনলাইন পোর্টালে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে একযোগে আবেদনগুলি অ্যাক্সেসযোগ্য হবে। জেলা কালেক্টর আবেদনকারীর যতার্থতা নিশ্চিতকরণের জন্য প্রয়োজনীয় সবদিক খতিয়ে দেখতে সক্ষম।
চলতি বছর আগাস্টে, গুজরাটের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হর্ষ সাঙ্ঘভি আমেদাবাদ কালেক্টরেটে ৪০ জন পাকিস্তানি হিন্দুকে ভারতীয় নাগরিকত্বের শংসাপত্র হস্তান্তর করেছিলেন। সরকারি বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, ২০১৭ সাল থেকে, জেলা কালেক্টর কর্তৃক মোট ১০৩২ জন পাকিস্তানিকে ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়া হয়েছে। ২০১৬ এবং ২০১৮ সালের গেজেট বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, আমেদাবাদ, গান্ধীনগর এবং কচ্ছের জেলা কালেক্টরদের আফগানিস্তান, বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানে বসবাসকারী হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্শি এবং খ্রিস্টান সহ সংখ্যালঘুদের নাগরিকত্ব দেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।
নাগরিকত্বের জন্য আবেদনকারী প্রার্থীদের রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় উভয় সরকারের ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো টিম দ্বারা স্ক্যান করা হয়ে থাকে।২০২২ সালে, এখনও পর্যন্ত ১০৭ পাকিস্তানি হিন্দুকে আমেদাবাদ জেলা কালেক্টর ভারতীয় নাগরিকত্ব দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, প্রতিবেশী মুসলিম অধ্যুষিত বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে নিপীড়িত সংখ্যালঘুদের জন্য এ দেশের নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করা হয়েছে। কিন্তু এখনই সিএএ বা সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন কার্যকর হয়নি। মোদী সরকারের আবেদনের ভিত্তিতে সিএএ কার্যকর করার সময়সীমার মেয়াদ আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত রাজ্যসভা ও ২০২৩ সালের ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত লোকসভার সংসদীয় কমিটি বাড়িয়েছে।