বিহারের ভাগলপুরে ১৭০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুর একটি অংশ (ভাগলপুর ব্রিজ কোল্যাপস) রবিবার সন্ধ্যায় হঠাৎ ভেঙে পড়ে। এরপরই বাড়তে থাকে রাজনৈতিক উত্তাপ। নীতীশ কুমার সরকারকে নিশানা করে বিজেপি। এই সেতুটি গঙ্গা নদীর উপর নির্মিত হয়েছিল। ভাগলপুরে আগুইয়ানি-সুলতানগঞ্জ সংযোগকারী নির্মীয়মাণ সেতুটি আচমকা হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে। কয়েক সেকেন্ড পর গোটা সেতুটিই ভেঙে গঙ্গায় তলিয়ে যায়। যদিও সেতু ভেঙে পড়ার ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এই ঘটনার ভিডিও প্রকাশ্যে আসার পর বিরোধীরা সরকারকে নিশানা করেছে। এর পরে, উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব এবং সড়ক নির্মাণ বিভাগের অতিরিক্ত মুখ্য সচিব প্রত্যয় অমৃত তাড়াহুড়ো করে সাংবাদিক সম্মেলন করেন। তিনি বলেন, 'সেতুতে ত্রুটি ছিল, সে কারণেই ভেঙে ফেলা হচ্ছে সেতুটি'।
তেজস্বী যাদব আরও বলেন, 'গত বছর ঝড়ে এই সেতুর একটি অংশ ভেঙে পড়েছিল। এটি এমন একটি ঘটনা যা নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছিল। আমি তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে তা জোরালোভাবে তুলে ধরেছিলাম। ক্ষমতায় এসে আমরা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি এবং বিশেষজ্ঞদের মতামত চেয়েছি'। প্রত্যয় অমৃত বলেন, 'আমরা যেন কোনো ঝুঁকি না নিতে পারি তাই সেতুর কিছু অংশ ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রবিবার এই মহড়ার একটি অংশ ছিল সেতুর একাংশ ভেঙে ফেলা'।
প্রত্যয় অমৃত আরও বলেছেন যে চূড়ান্ত রিপোর্ট বের হওয়ার পরে, রাজ্য সরকার এই প্রকল্পের জন্য যে সংস্থাকে চুক্তি দেওয়া হয়েছিল সংস্থাটিকে কালো তালিকাভুক্ত করা হবে। পাশাপাশি সংস্থার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হবে। অমৃত আরও বলেন, ঘটনার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার তাঁকে ডেকে দুর্ঘটনার বিস্তারিত প্রতিবেদন চেয়েছেন। প্রকল্পটির নির্মাণে আনুমানিক ব্যয় ১৭০০ কোটি টাকা বলে জানা গেছে।
এই ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের পদত্যাগ দাবি করেছে বিরোধী দল বিজেপি। বিহার বিজেপির সভাপতি সম্রাট চৌধুরী বলেছেন যে ঘটনাটি দেখায় যে নীতিশ কুমারের নেতৃত্বাধীন বিহার সরকারের অধীনে "দুর্নীতি প্রবল"। তিনি বলেন, "সেতু নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী বিহারের উন্নয়ন নিয়ে মোটেও চিন্তিত নন… তিনি তার সফর নিয়ে ব্যস্ত। এই ঘটনার পর তার পদ থেকে পদত্যাগ করা উচিত।”
বিজেপি নেতা এবং ভাগলপুরের প্রাক্তন সাংসদ সৈয়দ শাহনওয়াজ হুসেন ঘটনার জন্য “দুর্নীতি”কে দায়ী করে এই ঘটনার উচ্চ-পর্যায়ের তদন্ত দাবি করেছেন। এদিকে ঘটনার পর ব্রিজের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এক গার্ড নিখোঁজ হয়েছেন বলেই খবর। তাঁর খোঁজে শুরু হয়েছে তল্লাশি। সার্কেল অফিসার চন্দন কুমার বলেন, "কোম্পানির গার্ড হিসেবে কর্মরত এক ব্যক্তি নিখোঁজ হয়েছেন। তার মৃতদেহ এখনও উদ্ধার করা যায়নি। তাকে খুঁজে বের করার জন্য SDRF এবং NDRF টিমের অনুসন্ধান চলছে"। এদিকে ঘটনার "উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত" দাবি করেছে রাজ্য বিজেপি।