প্রথম রাজ্য হিসাবে অর্থনৈতিকভাবে অনগ্রসর সাধারণ শ্রেণির ১০ শতাংশ সংরক্ষণ চালু করতে চলেছে মোদীর রাজ্য গুজরাট। ১৪ জানুয়ারি, সোমবার থেকেই রাজ্য সরকারি নিয়োগ এবং উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির ক্ষেত্রে এই সংরক্ষণ চালু হবে বলে জানিয়েছেন সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপানি। উল্লেখ্য, সংসদের দুই কক্ষে পাশ হওয়ার পর একদিন আগেই এই সংবিধান (সংশোধনী) বিলে স্বাক্ষর করেছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। সরকারের এমন সিদ্ধান্তের পরই ২০ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য সব নিয়োগের পরীক্ষা পিছিয়ে দিয়েছে গুজরাট পাবলিক সার্ভিস কমিশন।
সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, রাজ্য সরকারের যেসব নিয়োগ এবং ভর্তির (শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে) প্রক্রিয়া এখনও শুরু হয়নি, সে ক্ষেত্রেও এই সংরক্ষণ চালু হবে। আরও নির্দিষ্টভাবে বলা হয়েছে, যেসব নিয়োগ বা ভর্তির বিজ্ঞপ্তি জারি হয়ে গিয়েছে, অথচ আসল প্রক্রিয়া ১৪ জানুয়ারির মধ্যে শুরু হয়নি, সেসব ক্ষেত্রেও এই সংরক্ষণের সুবিধা পাবেন অর্থনৈতিকভাবে অনগ্রসর সাধারণ শ্রেণির প্রার্থীরা।
গুজরাট সরকারের এক বিবৃতিতে মুখ্যমন্ত্রী রূপানিকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, "মকর সংক্রান্তি থেকে উচ্চ শিক্ষা এবং সরকারি চাকরিতে অসংরক্ষিত প্রার্থীদের মধ্যে অর্থনৈতিকভাবে অনগ্রসর অংশটি ১০ শতাংশ সংরক্ষণের সুবিধা পাবে"। এ সংক্রান্ত 'ঐতিহাসিক' এবং 'বৈপ্লবিক' আইনটি রূপায়নের ক্ষেত্রে গুজরাটই 'প্রথম' রাজ্য বলেও উল্লেখ করা হয়েছে ওই বিবৃতিতে। এরপরই এ বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী রূপানি একটি টুইট করেছেন। তপশিলি জাতি, উপজাতি এবং অন্যান্য অনগ্রসরদের জন্য বর্তমানে চালু সংরক্ষণের পাশাপাশি পৃথকভাবে এই নয়া ১০ শতাংশ সংরক্ষণ যুক্ত হবে।
গুজরাট সরকারের এমন 'তড়িঘড়ি' পদক্ষেপকে সমালোচনা করে কংগ্রেস সাংবিধানিক প্রশ্ন তুলেছে। তাদের প্রশ্ন, এই বিলে কি দেশের অন্তত অর্ধেক রাজ্য আইনসভা সম্মতি দিয়েছে? তবে, কংগ্রেসের এমন প্রশ্নকে উড়িয়ে দিয়েছেন সরকারের এক শীর্ষ আমলা। তাঁর দাবি, "সংবিধানের ৩৬৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী এই নয়া আইনের রাজ্য আইনসভা দ্বারা স্বীকৃতির প্রয়োজন নেই"।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে পতিদারদের আন্দোলন বিক্ষোভের মুখে পড়ে অধ্যাদেশ জারি করে শিক্ষা ও চাকরিতে অর্থনৈতিকভাবে অনগ্রসর সাধারণ শ্রেণির জন্য ১০ শতাংশ সংরক্ষণ চালু করেছিল গুজরাট সরকার। গুজরাট হাইকোর্টে সরকারের সেই পদক্ষেপ চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে এবং আদালত তা খারিজ করে দেয়। এরপর সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় রাজ্য। এদিনের এই সিদ্ধান্তের ফলে সেই পুরানো মামলাটিও অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়ল বলে মনে করছে সে রাজ্যের আমলা মহল।
Read the full story in English