সেতু দুর্ঘটনায় গা বাঁচানোর চেষ্টা করছে মোরবি পুরসভা। পর্যবেক্ষণ গুজরাত হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি অরবিন্দ কুমারের। দায় এড়াতে পুরসভার কার্যকলাপকে 'অতি চালাক' বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি। একইসঙ্গে রাজ্য সরকারেরও সমালোচনা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার গুজরাট হাইকোর্টে মোরবি সেতু বিপর্যয় মামলার শুনানিতে রাজ্যের মুখ্যসচিবের উদ্দেশ্যে প্রধান বিচারপতি অরবিন্দ কুমার বলেন, 'আপনাকে যে প্রশ্ন করা হচ্ছে, এজলাসে শুধু সেই প্রশ্নেরই যথাযথ উত্তর দিন। কোনওরকম চালাকি না করে জবাব দিন।'
এ দিনের শুনানিতে মোরবি পুরসভার তরফে কোনও আইনজীবী হাজির ছিলেন না। পৌর কর্তৃপক্ষকে নোটিস দেওয়া সত্ত্বেও কেন কেউ নেই? প্রশ্ন তুলেছেন প্রধান বিচারপতি। পুরসভার পদক্ষেপকে 'বুদ্ধিমানের কাজ' বলে জানান তিনি। বিচারপতি বলেন, '২০১৬ সালের ১৫ জুন সেতু দেখভালের জন্য ঠিকাদার সংস্থার মেয়াদ শেষ হয়েছিল। তারপর সেতুর নজরদারিতে কেন রাজ্য বা মোরবি পুরসভা কোনও টেন্ডার ডাকেনি? বিনা টেন্ডারে কীভাবে রাষ্ট্রের অংশ দেখভালের জন্য একজন ব্যক্তিকে দেওয়া হল? কেন রাজ্য সরকার এখনও মোরবি পুরসভাকে বহিষ্কার করল না?'
প্রধান বিচারপতির প্রশ্নের জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল এ দিন শুনানিতে জানান, মামলার নোটিস পায়নি পুরকর্তৃপক্ষ। পাল্টা গুজরাত হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি অরবিন্দ কুমারের মন্তব্য, 'রেজিস্ট্রি নোটিস জারি হয়েছিল। তারা (মোরবি পুরসভা) এখন স্মার্ট আচরণ করার চেষ্টা করছে।' এ নিয়ে রাজ্যের কাছ থেকে জবাবদিহি চেয়ে আদালত পুরসভাকে নতুন হলফনামা দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছে।
গত ৩০ অক্টোবর মোরবির মাচ্ছু নদীর ওপর ঝুলন্ত সেতু ভেঙে পড়ে ৫৫ শিশুসহ ১৩৫ জনের মৃত্যু হয়।
হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ, পুরসভা এই মামলায় নিজেদের দায় ঢাকতে ওরেভা গ্রুপের ফ্ল্যাগশিপ কোম্পানি অজন্তা ম্যানুফ্যাকচারিং প্রাইভেট লিমিটেডের উপর চাপানোর চেষ্টা করছেন। পুরসভার যুক্তি, বেসরকারি সংস্থাটি সংস্কার করা সেতুর উদ্বোধনের বিষয়ে নাগরিক সংস্থাকে অবহিত না করায়,তার সুরক্ষা অডিট সম্ভব হয়নি।
এই মাসের শুরুতে, মরবি পৌরসভার চিফ অফিসার (সিও) সন্দীপসিংহ জালা স্বীকার করেছিলেন যে, ফিটনেস শংসাপত্র ছাড়াই সেতুটি আবার চালু করা হয়েছিল।
মোরবি ব্রিজ ধসের বিষয়ে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে, গুজরাট হাইকোর্ট গত সোমবার রাজ্য সরকার এবং স্থানীয় পুরসভাকে নোটিস জারি করেছে এবং ১৪ নভেম্বরের মধ্যে এই বিষয়ে একটি স্ট্যাটাস রিপোর্টও চেয়েছে।