কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের করিডর প্রকল্পের জন্য জমি দিল বেনারসের জ্ঞানবাপি মসজিদ কর্তৃপক্ষ। বদলে নিকটবর্তী আরেকটি জমি পেয়েছে মসজিদ পরিচালন কর্তৃপক্ষ।
জানানো হয়েছে, মন্দির কর্তৃপক্ষকে দেওয়া জমিটি বাবরি মসজিদ ধ্বংসের সময় পুলিশকে কন্ট্রোলরুম বানানোর জন্য লিজ দিয়েছিল মসজিদ পরিচালন কমিটি। তবে, এই জমিটি বেশ কয়েক বছর আগে কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের তরফে করিডর প্রকল্প নির্মাণের জন্য চাওয়া হয়েছিল।
জ্ঞানবাপি মসজিদ কর্তৃপক্ষের তরফে মন্দির কমিটিকে দেয় জমিটির পরিমাপ ১,৭০০ বর্গফুট। বদলে যে জমিটি মসজিদকে দেওয়া হয়েছে তার মাপ ১০০০ বর্গফুট। যদিও দু'টি জমিখণ্ডেরই বাজার মূল্য সমান। কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরকে দেওয়া জমিটির অবস্থান মসজিদ থেকে প্রায় ১৫০০মিটার দূরে।
মসজিদের কেয়ারটেকার তথা অনজুমান ইনতেজামিয়া মসজিদের যুগ্ম সম্পাদক এস এম ইয়াসিন দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেছেন, 'জ্ঞানবাপি মসজিদের তিনটি জমিখণ্ড রয়েছে। একটিতে মূল মসজিদ, দ্বিতীয়টিতে দুই উপসানালয়ের মাঝে যাতায়াতের অংশ, যা ঘিরে বিরোধ। তৃতীয় অংশটি বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পর নিরাপত্তা দেখভালের জন্য অনির্দিষ্টকালজুড়ে জেলা প্রশাসনকে দেওয়া হয়েছিল।' সবদিক খতিয়ে দেখে এই তৃতীয় অংশটিই এবার মসজিদের তরফে মন্দির কমিটিকে দেওয়া হয়েছে করিডর নির্মাণের জন্য। জ্ঞানবাপি মসদিন কর্তৃপক্ষ গত ৮ জুলাই জমি হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করে। পুলিশের কন্ট্রোল রুম ওই জমি থেকে সরিয়ে নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।
ওয়াকফ বোর্ডের চেয়ারম্যান জুফার ফারুকি বলেছেন, 'মন্দিরকে দেয় জমিটির প্রকৃতি বাণিজ্যিক ও এর দামও বদলে পাওয়া জমিখণ্ডের থেকে বেশি।' যদিও কাশীবিশ্বনাথ মন্দির ট্রাস্টের এক্সিকিউটিভ কমিটির প্রধান সুনীল বর্মার দাবি, 'ওই জমি মসজিদের কোনও লাগছিল না। তাই সেটি আদলবদল করা হয়েছে। এক্ষেত্রে দু'টি জমিরই দাম সমান। মসজিদের তফে যে জমিটি আমাদের দেওয়া হয়েছে সেটি এখনও শ্রী কাশীবিশ্বনাথ বিশেষ অঞ্চল উন্নয়ন বোর্ডের আওতাধীন।'
উল্লেখ্য, বারাণসীর বিখ্যাত কাশী বিশ্বনাথ মন্দির লাগোয়াই রয়েছে জ্ঞানবাপী মসজিদ। জ্ঞানবাপী মসজিদ যে জমিতে গড়ে উঠেছে, সেটি আসলে হিন্দুদের। সুতরাং সেই জমি হিন্দুদের ফিরিয়ে দেওয়া হোক এই দাবি জানিয়ে ‘স্বয়ম্ভু জ্যোতির্লিঙ্গ ভগবান বিশ্বেশ্বর’-র তরফে আইনজীবী বিজয়শঙ্কর রস্তোগীআদালতের দ্বারস্থ হন। মালায় বলা হয়েছে, মুঘল সম্রাট ঔরঙ্গজেব কাশীর বিশ্বনাথ মন্দির ভেঙে জ্ঞানবাপী মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন। প্রায় তিন দশক আগে করা এই অভিযোগ সঠিক কি না, তা খতিয়ে দেখতেই চলতি বছর এপ্রিলে পুরাতাত্ত্বিক সর্বেক্ষণকে নির্দেশ দেয় বারাণসীর ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট। এর জন্য দু’জন মুসলমান সদস্য সহ পাঁচ সদস্যের কমিটি তৈরি করতে বলেছেন বিচারক আশুতোষ তিওয়ারি। এই সমীক্ষার খরচ বহন করবে উত্তরপ্রদেশ সরকার।
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন