মঞ্চে সবেমাত্র বক্তৃতা করতে উঠেছিলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত বুকারজয়ী লেখক সলমন রুশদি । হটাৎ করেই সবার নজর এড়িয়ে মঞ্চে উঠে এলোপাথাড়ি ছুরিকাঘাত করেন এক হামলাকারী। জানা গিয়েছে আততায়ীর নাম হাদি মাটার। বয়স ২৪। প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান অনুসারে ঘাড়ে গলায় পরপর ছুরির আঘাত চলে প্রায় ২০ সেকেন্ড ধরে।
মুহূর্তেই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। প্রায় সঙ্গে সঙ্গে গোটা প্রেক্ষাগৃহের নিয়ন্ত্রণ নেয় পুলিশ। মুহূর্তের মধ্যেই ধরে ফেলা হয় আততায়ীকে। সালমান রুশদি গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। জানা গিয়েছে আপাতত ভেন্টিলেশনে রয়েছেন তিনি। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে লিভারে এবং চোখের আঘাত গুরুতর। প্রাণে বাঁচলেও লেখককে হারাতে হতে পারে একটি চোখের দৃষ্টিশক্তি।
কিন্তু কেন এভাবে বছর ২৪ এর এক যুবক লেখকের ওপর ছুরি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ল? পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে আগে থেকে প্রেক্ষাগৃহের ভিতর বসে ছিলেন আততায়ী। নিউ জার্সির হাদি মাটারের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে একটি জাল লাইসেন্স। ইতিমধ্যেই তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টের সূত্র ধরে পুলিশ জানতে পেরেছে হাদি ইরানের প্রতি বিশেষ ভাবে সহানুভূতিশীল তিনি।
আরও পড়ুন: < দেশে উড়বে ২০ কোটির বেশি জাতীয় পতাকা, স্বাধীনতার ৭৫ বছরে বড় চমক কেন্দ্রের >
তার ফেসবুক প্রোফাইলে রয়েছে ইরানের শক্তিশালী ধর্মগুরু এবং নেতা আয়াতুল্লাহ রুহোল্লা খোমেইনির একাধিক ছবি। সূত্রের খবর অনুষ্ঠান শুরুর ঠিক আগে নিরাপত্তা ব্যবস্থার বেড়াজাল টপকে হাদি পৌঁছে যান লেখকের একেবারে কাছাকাছি। এরপরই পরপর ১০ থেকে ১৫ বার লেখককে ছুরিকাঘাত করে সে। ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’ বইয়ের কারণে ১৯৮৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি রুশদির নামে 'ফতোয়া জারি করেছিলেন ইরানের তৎকালীন সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লা রুহোল্লা খোমেইনি।
পরে ২০১২ সালে রুশদি মাথার দাম আর ও বাড়ানো হয়। নিউইয়র্ক সিটি পুলিশ ইতিমধ্যেই গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। ধৃতকে জিজ্ঞসাবাদও শুরু করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে ধৃতের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে বেশ কিছু ইলেকট্রনিক গেজেটও। ঘটনার পর দ্রুত হেলিকপ্টারে করে লেখকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ।
চিকিৎসকদের অনুমান প্রাণ বাঁচানো সম্ভব হলেও একটি চোখ সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যেতে পারে রুশদির। ক্ষতি হতে পারে লিভারেরও। এদিকে প্রখ্যাত লেখ সলমন রুশদির ওপর আক্রমণের ঘটনার গর্জে উঠলেন বিশ্বের তাবড় বুদ্ধিজীবী থেকে শুরু করে লেখক সাংবাদিক সহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।