যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় দিনেই হামাস-ইসরায়েল চুক্তি নিয়ে বড় বিপদ, ৭ ঘণ্টা পর মুক্তি পেয়েছে ১৩ ইজরায়েলি বন্দি। যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় ইজরায়েল ৩৯ প্যালেস্তাইনি জেলবন্দিকে মুক্তি দিয়েছে। ১৩ ইজরায়েলি নাগরিকের পাশাপাশি এবং ৪ থাই নাগরিককেও মুক্তি দিয়েছে হামাস।
শনিবার রাতে বন্দি থাকা মোট ১৭ জনকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী শনিবার বলেছে যে গাজায় হামাসের বন্দিদশা থেকে মুক্তি পাওয়া ১৩ ইজরায়েলি এবং চার থাই নাগরিক নিরাপদে ইজরায়েলে পৌঁছেছে।
ইজরায়েলি সরকার বলেছে যে ৬ প্রাপ্তবয়স্ক মহিলা এবং সাত শিশু ও কিশোরকে গাজায় হামাস মুক্তি দিয়েছে । বন্দিদের ৫০ দিনের কারাবাসের পর হামাস মুক্তি দিয়েছে। এর আগে ইজরায়েল ৩৯ প্যালেস্তাইনি জেলবন্দিকে মুক্তি দিয়েছে।
হামাস ৭ অক্টোবর ইজরায়েল আক্রমণ করেছিল। হামলায় ১৪০০ ইসরায়েলি নিহত হয় এবং প্রায় ২০০ জনকে বন্দি করা হয়। এর পর ইসরায়েল গাজা ভূখণ্ডে লাগাতার হামলা চালায়। যুদ্ধে প্রায় ১৫ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। বর্তমানে ২ পক্ষের মধ্যে ৪ দিনের যুদ্ধবিরতি চলছে। যার আওয়াত বন্দি মুক্তির প্রক্রিয়া চলছে।
হামাসের অভিযোগ
হামাসের একজন কর্মকর্তা অভিযোগ করেছেন যে উত্তর গাজায় পর্যাপ্ত সাহায্য পৌঁছাচ্ছে না। তিনি বলেছিলেন এই ঘটনা পুরো চুক্তিকে বিপন্ন করতে পারে। কয়েক ঘন্টার মধ্যে, আন্তর্জাতিক রেড ক্রিসেন্ট বলেছে যে আজ এই অঞ্চলে ৬১ টি ট্রাক পাঠানো হয়েছে, যা "এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় মানবিক সাহায্য"। হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর উপদেষ্টা তাহের আল-নোনো বলেছেন, ইজরায়েল যুদ্ধবিরতি চুক্তির মূল শর্তাবলী, বিশেষ করে উত্তর গাজায় পৌঁছানো সহায়তা সম্পর্কে "পুরোপুরি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ নয়"।
টাইমস অব ইজরায়েল জানিয়েছে, রবিবার হামাস তৃতীয় দফায় যে বন্দিদের মুক্তি দেবে তার এক তালিকায় পেয়েছে ইজরায়েল। ইজরায়েল ও হামাসের মধ্যে মধ্যস্থতার ভূমিকা পালনকারী কাতার ইজরায়েলকে এই তালিকা দিয়েছে। চার দিনের যুদ্ধবিরতির আজ তৃতীয় দিন। চার দিনের মধ্যে ৫০ বন্দিকে মুক্তি দেবে হামাস। পাশাপাশি ১৫০ প্যালেস্তাইননি জেলবন্দীকে মুক্তি দেওয়ার কথা জানিয়েছে ইজরায়েল।
বন্দিদের স্বজনরা এখনও হামাসের বন্দিদশায়
শনিবার গভীর রাতে আটকদের ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অব রেড ক্রসের (আইসিআরসি) কাছে হস্তান্তর করেছে হামাস। এর পরে, সকল বন্দিদের নিয়ে রাফাহ সীমান্ত অতিক্রম করে মিশরে আনা হয়। সেখান থেকে তাদের ইজরায়েলে নিয়ে আসা হয়। দ্বিতীয় দিনে মুক্তি পেয়েছে ৮ শিশু, ৫ জন মহিলা। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় বন্দি মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। হামাসের হাতে এখনও ১৯৫ জন বন্দি রয়েছে।
শনিবার মুক্তি পাওয়া বেশিরভাগই ৭ অক্টোবর তাদের পরিবারের সদস্যদের হারিয়েছেন। মুক্তি পাওয়া অনেকের আত্মীয়-স্বজন এখনও হামাসের হাতে বন্দী। ইয়াহেল সোহাম, বছর তিনেকের খুদেকে তার বাবাকে ছাড়াই ছেড়ে দেওয়া হয়। যিনি এখনও হামাসের হেফাজতে রয়েছেন। হিলা রোটেম, ১৩ বছরের নাবালককে তার মা রায়াকে ছাড়াই ছেড়ে দেওয়া হয়। মুক্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে একজন, ৯ বছর বয়সী এমিলি হ্যান্ড। ৭ অক্টোবর তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানানোর পরে তার পরিবারের কাছে ফিরে আসে।