হরিদ্বার এবং দিল্লিতে ধর্ম সংসদে ঘৃণা মন্তব্যের ঘটনায় জনস্বার্থ মামলায় নোটিস ইস্যু করল সুপ্রিম কোর্ট। বুধবার প্রধান বিচারপতি এন ভি রামান্নার বেঞ্চ দিল্লির জনৈক বাসিন্দা কুরবান আলি এবং সিনিয়র আইনজীবী অঞ্জনা প্রকাশের মামলায় এই নোটিস ইস্যু করেছেন।
মামলাকারীর আইনজীবী কপিল সিব্বল আদালতে জানান, আগামী ২৩ জানুয়ারি এরকমই আরেকটা ধর্ম সংসদ হওয়ার কথা। তার আগে মামলার শুনানি চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়েছে, সংশ্লিষ্ট মামলা আরও কয়েকটি বেঞ্চে শুনানি বাকি রয়েছে। আগে বিষয়টিতে আলোকপাত জরুরি। তাই আপাতত নোটিস ইস্যু করেছে সুপ্রিম কোর্ট।
১০ দিন পর সেই নোটিসের ভিত্তিতে মামলার শুনানি শুরু হবে। বিচারপতি সুর্য কান্ত এবং হিমা কোহলি বলেছেন, "আগে আমরা নোটিস ইস্যু করলাম। ১০ দিন পর মামলার শুনানি হবে। আমরা দেখব অন্য কোনও বিষয়ের সঙ্গে এটি জড়িত কি না। যদি তা না হয় তাহলে আমরা আলাদা করে শুনব।"
ডিসেম্বর ১৭ এবং ২১, হরিদ্বার এবং দিল্লিতে দুটি পৃথক অনুষ্ঠানে ঘৃণা মন্তব্য ছড়ানোর অভিযোগ ওঠে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই শীর্ষ আদালতে দায়ের হয়েছে জনস্বার্থ মামলা। আইনজীবী অঞ্জনা প্রকাশ এবং দিল্লির এক বাসিন্দার আবেদনের ভিত্তিতে সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, ‘আমরা আবেদন শুনব।‘ মামলাকারীদের তরফে আইনজীবী ছিলেন কপিল সিব্বল।
উল্লেখ্য, গত মাসে আয়োজিত ওই ধর্ম সংসদে মুসলিমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করতে হিন্দুদের অস্ত্র তুলে নেওয়ার নিদান দেওয়া হয়। উপস্থিত প্রতিনিধিদের প্রতি এই আবেদন করা হয়েছিল। গত মাসের ১৭-১৯ ডিসেম্বর পুণ্যভূমি হরিদ্বারে অনুষ্ঠিত হয়েছে এই রুদ্ধদ্বার সংসদ। সম্প্রতি সংসদের ভিতরের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। সেই ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, উপস্থিত প্রতিনিধিদের এভাবে সংকল্প নিতে।
আরও পড়ুন ‘অস্তিত্ব রক্ষায় হিন্দুদের অস্ত্র তুলে নিতে হবে’! হরিদ্বার ধর্ম সংসদে আবেদন আয়োজকদের
জানা গিয়েছে, বিতর্কিত ধর্মগুরু যতি নরসিংহনন্দ এই সংসদের মূল আয়োজক। এর আগেও একাধিকবার উস্কানিমূলক মন্তব্য করে বিতর্ক বাড়ান তিনি। কিন্তু হরিদ্বারের সংসদ সবকিছুকে ছাপিয়ে গিয়েছে। ২০২৯-এ যাতে কোনওভাবেই দেশে মুসলিম প্রধানমন্ত্রী না হতে পারে। সেই ভাবনা থেকেই অস্ত্র তুলে নেওয়ার আবেদন। এমনটাই সেই ভিডিওয় উল্লেখ। সেই সংসদে এক বক্তা বলেছেন, ‘প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংকে গুলিবিদ্ধ করে পিস্তল খালি করতে পারতেন তিনি।’ এই সংসদে উপস্থিত ছিলেন দিল্লি বিজেপির প্রাক্তন মুখপাত্র অশ্বিনী উপধ্যায়।