হরিয়ানা পুলিশ সোমবার থেকে নুহ এবং প্রতিবেশী জেলাগুলিতে হিংসার ঘটনায় ৪৪টি এফআইআর দায়ের করেছে। প্রায় ৭০ জনকে হেফাজতে নিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল খট্টর মঙ্গলবার চণ্ডীগড়ে তাঁর সরকারি বাসভবনে এই বিষয়ে একটি বৈঠক করেন। পরে তিনি দাঙ্গাবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। খট্টর জানিয়েছেন যে দাঙ্গাবাজদের রেহাই দেওয়া হবে না।
এর আগে সোমবার বিকেলে নুহতে শুরু হওয়া হিংসার বিষয়ে বলতে গিয়ে খট্টর বলেন, 'কোনও দাঙ্গাবাজকে রেহাই দেওয়া হবে না। তথ্য অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত পাঁচ জনের মত প্রাণ হারিয়েছেন। নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।' নিহতদের মধ্যে দুজন হোমগার্ড, তিনজন সাধারণ নাগরিকও আছেন।
ঘটনাগুলিকে অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক বলে অভিহিত করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'কিছু লোক একটি সামাজিক অনুষ্ঠানে হামলা চালিয়েছে। এই সামাজিক অনুষ্ঠান প্রতিবছরই পরিচালিত হয়। সেই সামাজিক অনুষ্ঠানকে বিঘ্নিত করার জন্য এই হামলা চালানো হয়েছে। পুলিশকেও নিশানা করা হয়েছে। এটি নিঃসন্দেহে একটি বড় ষড়যন্ত্রের অংশ। বিভিন্ন স্থানে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে। নুহ ছাড়া অন্য এলাকার যারা এই ষড়যন্ত্রের অংশ ছিল, তাদের চিহ্নিত করার পর তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
খট্টর যোগ করেছেন যে কেন্দ্রীয় বাহিনীর ১৬টি কোম্পানি এবং হরিয়ানা পুলিশের ৩০টি কোম্পানি নুহতে পৌঁছয়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেছে। বিক্ষিপ্ত কিছু ঘটনা ছাড়া পালওয়াল, গুরগাঁও এবং ফরিদাবাদের পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোতেও স্বাভাবিক পরিস্থিতি পুনরুদ্ধার করা হয়েছে। ওই সব জেলায় শান্তিও ফিরে এসেছে। তবুও কিছু জেলায় ১৪৪ ধারার অধীনে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে নুহতে কারফিউ বলবৎ রয়েছে।
এর মধ্যেই মঙ্গলবার বিকেলে গুরগাঁও থেকে হিংসার আরেকটি ঘটনার কথা জানা গেছে। বাদশাপুরের দুটি দোকানে দুপুর ২টোর দিকে জনতা আগুন দিয়েছিল। আশপাশের দোকানদারদের মতে, হামলার জেরে স্থানীয় বাসিন্দারা পালিয়ে বাঁচেন। বজরং দল এবং বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি) 'ব্রিজ মণ্ডল জলাভিষেক যাত্রা' বের করেছিল। তখনই একটি সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ ছড়ায়। যাতে দুই হোম গার্ড-সহ কমপক্ষে চার জন নিহত হন। এই হিংসার ঘটনায় ১২ জন পুলিশকর্মীও আহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন- জলবায়ু পরিবর্তনের জেরে বদলাচ্ছে সমুদ্রের রং? কী বলছে গবেষণা?
তারই মধ্যে, গুরগাঁওয়ে হিংসার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সেখানে মঙ্গলবার ভোরে একটি মসজিদে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। আঞ্জুমান জামে মসজিদের নায়েব ইমামকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ। ওই মসজিদ সেক্টর ৫৭ এলাকায় অবস্থিত। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, মসজিদে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ৭০-৮০ জন লোক জড়িত।