Advertisment

হরিয়ানা গণধর্ষণ কাণ্ডে গ্রেফতার ২, বদলি করা হল পুলিশ সুপারকে

এ ঘটনার জেরে রেওয়ারির পুলিশ সুপার রাজেশ দুগ্গালকে বদলি করে দেওয়া হয়েছে। তাঁর জায়গায় কার্যভার গ্রহণ করেছেন রাহুল শর্মা। 

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Mandsaur gangrape, মান্দসৌরে গণধর্ষণ

এ পর্যন্ত দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে

ঘটনার চারদিন পর রেওয়ারি গণধর্ষণকাণ্ডে দুজনকে গ্রেফতার করল আট সদস্যের বিশেষ তদন্ত দল। পুলিশ এ ঘটনায় এক চিকিৎসক ও এক গ্রামবাসীকে গ্রেফতার করেছে। ধৃত চিকিৎসক একদম শুরুতে নিগৃহীতা তরুণীর প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছিল।

Advertisment

সংবাদসংস্থা এএনআই-কে পুলিশের ডিজি জানিয়েছেন, ‘‘যেখানে নিগ্রহের ঘটনা ঘটেছিল, সেই স্থানের মালিক ও নিগৃহীতাকে যে প্রাথমিক চিকিৎসা করেছিল, সেই দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদের কাছ থেকে প্রচুর তথ্য মিলেছে। আমরা সেই তথ্য নিয়ে কাজ করছি। মূল অভিযুক্তরা খুব তাড়াতাড়ি ধরা পড়বে।’’

এর আগে বিশেষ তদন্তদলের দায়িত্বে থাকা আধিকারি নাজনিন ভাসিন জানান, ‘‘আমরা একজনকে গ্রেফতার করেছি। যে টিউবওয়েলের কাছে ঘটনাটি ঘটেছে, ধৃত ব্যক্তি সেই টিউবওয়েলের মালিক। ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২০ বি (অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র) ধারায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। খুব তাড়াতাড়িই আরও গ্রেফতারি ঘটবে বলে আশা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় ১০০ জনেরও বেশি লোককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।’’

পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত ব্যক্তি, নিগৃহীতা তরুণী এবং তিন মূল অভিযুক্ত, সকলেই একই গ্রামের বাসিন্দা। ধৃত ব্য়ক্তি তিন মূল অভিযুক্তকে টিউবওয়েলের পাশের ঘরের চাবি দিয়েছিল। ওই ঘরের মধ্যেই এই নিগ্রহের ঘটনা ঘটে। তাকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

ভাসিন জানিয়েছেন, ‘‘ধৃত ব্য়ক্তির কাছ থেকে ঘটনার দিন মূল তিন অভিযুক্ত টিউবওয়েলের পাশের ঘরের চাবি নিয়েছিল। ঘটনার পর থেকে এই টিউবওয়েল মালিকও গা ঢাকা দিয়েছিল। বিশেষ তদন্তদলের কাছে এই ব্যক্তি কিছু বিষয় খোলসা করেছে, যার ভিত্তিতে মূল অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।’’

তিনি বলেন, ‘‘আদালতে পেশ করে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবার হেফাজতে নেওয়া হবে।’’

রেওয়ারি ছাড়াও অভিযুক্তদের খোঁজে দিল্লি, রাজস্থান এবং অন্যান্য রাজ্যে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।

ইতিমধ্যে এই ঘটনাকে দুর্ভাগ্যজনক আখ্যা দিয়েছেন হরিয়ানার মুখ্যম‌ন্ত্রী মনোহর লাল খট্টর। তিনি বলেছেন, ‘‘তিন অভিযুক্তকে চিহ্নিত করা গেছে।  এটা দুর্ভাগ্যজনক যে নিগৃহীতা এবং অভিযুক্তরা পরস্পকে চিনত। তার চেয়েও দুর্ভাগ্যের একজন অভিযুক্ত সেনাবাহিনীর লোক।’’

ঘটনার দ্রুত ব্যবস্থা  নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে মনোহর লাল খট্টর জানিয়েছেন, ‘‘তল্লাশি চলছে। আমরা অভিযুক্তদের মাথার দাম একলক্ষ টাকা ধার্য করেছি। ওরা শিগগিরই ধরা পড়বে।’’

সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, এ ঘটনার জেরে রেওয়ারির পুলিশ সুপার রাজেশ দুগ্গালকে বদলি করে দেওয়া হয়েছে। তাঁর জায়গায় কার্যভার গ্রহণ করেছেন রাহুল শর্মা।

ওই তরুণীর পরিবার ইতিমধ্যে এ ঘটনার ন্যায়বিচার চেয়েছেন। নিগৃহীতার মা এদিনই তাঁর স্বামীকে ক্ষতিপূরণ বাবদ যে দু লক্ষটাকার চেক দেওয়া হয়েছে, তা ফেরত দেওয়ার কথা বলেছেন। হরিয়ানা নিগ্রহ ক্ষতিপূরণ প্রকল্প ২০১৩, অনুসারে মুখ্য বিচারবিভাগীয় বিচারক এবং জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের সম্পাদক নিগৃহীতার বাবাকে দু লাখ টাকার চেক দিয়েছেন।

নিগৃহীতার মা বলেছেন, ‘‘আমার মেয়ের সঙ্গে এরকম একটা ঘটনা ঘটে গেল, তার বিচারের বদলে আমাদের চেক ওরা দিল... আমরা বিচার চাই, চেক চাই না। আমার মেয়ের সম্মানের কি এটাই দাম? আমি এ চেক ফেরত দিচ্ছি।’’

গত ১২ সেপ্টেম্বর বিএসসি-র এই ছাত্রী কোচিং ক্লাসে যাওয়ার সময়ে বাস স্টপেজ থেকে অপহৃতা হন।

এফ আই আরে অভিযোগ করা হয়েছে, পানীয় খাইয়ে তাঁকে অজ্ঞান করে দেওয়া হয়। জ্ঞান ফিরলে ওই তরুণী দেখেন, তিনি টিউবওয়েলের পাশে পড়ে আছেন। সেখানে তিনি গ্রামেরই আরেকটি ছেলেকে দেখতে পান।

এরপর ওই অভিযুক্ত তাঁকে ফের জল দিলে, সেই জল পান করে আবার অজ্ঞান হয়ে যান ওই তরুণী। তরুণী তাঁর অভিযোগে জানিয়েছেন, সে সময়েই তাঁকে যৌন নিগ্রহ করা হয়। এরপর তাঁকে যেখান থেকে অপহরণ করা হয়েছিল, সেই বাসস্টপেজেই ফেলে আসা হয়। সেখান থেকে অভিযুক্তরা নিগৃহীতার বাবাকে ফোন করে জানায়, যে ওই তরুণীর শরীর ভাল নেই। পুলিশ জানিয়েছে মেডিক্যাল পরীক্ষায় তরুণীর ধর্ষণ প্রমাণিত হয়েছে।

নিগৃহীতার বাবার অভিযোগ, তাঁর মেয়ে তাঁকে বাসস্টপ থেকে যারা অপহরণ করেছিল তাদের চিনতে পেরেছে বলে জানিয়েছে, এবং ঘটনার সময়ে আরও ৮-১০ জন উপস্থিত ছিল বলেও সে জানিয়েছে।

rape police
Advertisment