Lockdown Education: করোনা-লকডাউনের জের কতখানি হতে পারে তা আর্থ-সামাজিক জীবন এবং শিক্ষাক্ষেত্র দেখেছে। কিন্তু যা দেখেনি তা হল পড়ুয়াদের 'স্কুল ত্যাগ' মনোভাব। ২০২০ সাল থেকে লকডাউনের জন্য 'স্কুল ফ্রম হোম' চলছে খুদে থেকে বড়দের। স্কুলের স্বাদ ভুলতে বসা শৈশবের সিদ্ধান্তই এবার চিন্তায় ফেলেছে করোনাকালের শিক্ষাক্ষেত্র পরিস্থিতিকে।
সম্প্রতি হরিয়ানায় প্রায় ১২ লক্ষ ৫০ হাজার পড়ুয়াকে 'মিসিং' তালিকায় দেখাল একাধিক বেসরকারি স্কুল। জানা গিয়েছে চলতি শিক্ষাবর্ষে, যা প্রায় তিন মাস আগে শুরু হয়েছিল, নতুন ক্লাসে নামই তোলেনি একাধিক শিক্ষার্থীরা। এই ঘটনার পর স্কুল প্রশিক্ষণ দফতর "আশঙ্কা" প্রকাশ করে জেলা আধিকারিকদের একটি নির্দেশিকা পাঠিয়ে বিষয়টি তদন্ত করতে বলেছে। সেই নির্দেশিকায় বলা হয় যে হয়ত ভুলবশত তালিকা থেকে পড়ুয়াদের নাম বাদ পড়েছে।
যদিও এই ভুলবশতকে ভুল করেও মানতে নারাজ স্কুল কর্তৃপক্ষেরা। পরিসংখ্যানে চোখ রাখলে দেখা যাচ্ছে, ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে ২৯.৮৩ লক্ষ পড়ুয়া স্কুলে এনরোল করেছিল। কিন্তু ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে সেই সংখ্যা কমে আসে ১৭.৩১ লক্ষে। হরিয়ানায় সরকারি স্কুল রয়েছে ১৪ হাজার ৫০০টি, বেসরকারি স্কুল রয়েছে ৮ হাজার ৯০০টি।
ডিরেক্টরেট অফ স্কুল এডুকেশনের নির্দেশিকায় জেলার আধিকারিকদের বলা হয়েছে, "বেসরকারি স্কুলের ১২ লক্ষ ৫১ হাজার পড়ুয়ার নাম ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমে তোলা হয়নি। যত দ্রুত সম্ভব বেসরকারি স্কুলের কর্তৃপক্ষ বা প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করে ওই সকল পড়ুয়াদের নাম তোলার ব্যবস্থা করুন।"
আধিকারিকরা বলছেন যে এই পড়ুয়াদের মধ্যে অনেকেই হয়তো স্কুলের ফি-র কারণে স্কুলগুলিতে তালিকাভুক্ত করেনি নিজেদের৷ জেলার আধিকারিকদের মত এদের মধ্যে অনেকেই সরকারী স্কুলে চলে গিয়েছে। অনেকে রয়েছেন যারা অতিমারি- লকডাউনের সময় অনলাইনে অ্যাক্সেস করতে না পারায় তালিকা থেকে তারা বাদ পড়েছেন। একটু গ্রামাঞ্চলে যারা থাকেন তারাও লকডাউনে আর্থিক সমস্যাজনিত কারণে স্কুলে নাম নথিভুক্ত করতে পারেনি।
হরিয়ানার শিক্ষামন্ত্রী কানওয়ার পাল গুর্জার দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানান এই ঘটনা জানার পর তিনিও কিছুটা হতবাক। কীভাবে এই 'গ্যাপ' তৈরি হল তা তাঁর অজানা। তবে গোটা বিষয়টি নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দেন তিনিও। এক বেসরকারি স্কুল কর্তৃপক্ষের সদস্য রাম মেহর জানান লকডাউন জারি থাকায় স্কুল সম্পূর্ণ বন্ধ। এমতাবস্থায় প্রাথমিক বিভাগের পড়ুয়ারা আগামী সেশনের জন্য আর নাম তোলেনি স্কুলে।
যদিও বেসরকারি স্কুল থেকে সরকারি স্কুলে পড়ুয়াদের চলে যাওয়ার বিষয়টি মানতে নারাজ অনেকেই। কারণ সম্প্রতি একটি ভিডিও দেখা গিয়েছে সোশাল মিডিয়ায়, সেখানে দেখা যাচ্ছে মাইকিং করে তিন-চারজনের একটি দল সরকারি স্কুলে পড়ুয়াদের পাঠানোর আর্জি জানাচ্ছেন। এই ঘটনায় শিক্ষা মহলে চিন্তা বেড়েছে অনেকটাই। আগামী দিনের কথা ভেবেই তাই বাড়ছে উদ্বেগ।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন